ফজলুল হক,বঙ্গ নিউজ : সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ফিটনেস বিহীন গাড়ি যখন রাস্তা আটকে যাবে, বিকল হয়ে যাবে। এসব ফিডনেসবিহীন গাড়ি যতটা কমানো যায়, সেটা ব্যবস্থা করা হবে। যদি রং সাইড দিয়ে গাড়ি যায়। এতে যানজট সৃষ্টি হবে, এটা আমি বন্ধ করবো কেমনে? এর জন্য সড়ক দায়ী নয়। যেটুকু মেরামত করা দরকার ও বৃষ্টির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত্র সেটুকু মেরামতের কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কাজেই সড়কের জন্য যানজট হবে না। খুব বৃষ্টি হলে রাস্তা স্লো স্পিড হতে পারে। কোন অবস্থায় সড়কের জন্য গাড়ী বন্ধ থাকবে না। গাড়ী বন্ধ হতে পারে রং সাইডে আসা, বন্ধ হতে পারে ফিটনেস বিহীন গাড়ী যখন রাস্তায় আটকে যায় বা বিকল হয়ে পড়ে। সড়কের জন্য যানজট হবে না। তবে সড়কে যানজট হবে না এটা ভিন্ন বিষয়। টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বিশেষ ট্রেন যাতায়াত করবে সেজন্য একটু যানজট হবে। এ ধরনের কিছুটা যানজট হবেই, এটা কেউ রুখতে পারবে না, যতক্ষন পর্যন্ত না রেল ওভারপাচ নির্মাণ কাজ শেষ না হয়।
রোববার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পরিদর্শনে এসে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবাদুল কাদের খালেদা জিয়ার মাইল্ড স্ট্রোক হওয়ার বিএনপি নেতাদের দাবি নাকচ করেন। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সাসেক সংযোগ সড়ক প্রকল্পের প্রজেক্ট ম্যানেজার জিকরুল হাসান, সড়ক ও জনপথের ঢাকা বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সবুজ উদ্দিন খান, হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. আতিকুর রহমান, গাজীপুর জেলার পুলিশ সুপার মো হারুন অর-রশীদ, গাজীপুর অঞ্চলের হাইওয়ে পুলিশ সুপার মো. শফিকুল ইসলাম, গাজীপুর সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিন রেজাসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের সব মহাসড়কের চেয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অন্যতম। এ পথ দিয়ে শিল্প-প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার কর্মী চলাচল করে। আসন্ন ঈদ উপলক্ষে আগামী ১২ জুন থেকে চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ফোরলেন পুরোপুরি খুলে দেওয়া হবে। ২৬টি ব্রিজের মধ্যে ২৩টি ব্রিজই খোলে দেওয়া হবে। সেগুলোর উপর দিয়ে গাড়ী চলবে। ঈদ ফেরত যাত্রীদের এ সুবিধা দেওয়া হবে। এখন আমরা এটা উদ্ধোধন করতে পারছি না। ঈদের পর প্রধানমন্ত্রী এটার উদ্ধোধন করবে। ঈদের পরেও যারা ফিরতি যাত্রা করবে কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য তাদের জন্য এ চারলেন খোলা থাকবে। যার কারণে এ সড়কে গাজীপুর থেকে এলেঙ্গা গত কয়েকবারের চেয়েও এবার যাত্রীরা স্বস্তিতে চলাচল করবে।
এ সড়কে ফ্লাইওভার, আন্ডারপাচ, ওভারপাচসহ যে কোনো নির্মাণ কাজের জন্য যানজটের কারণ হবে, সে নির্মাণ কাজ আপাদত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, হাইওয়ে পুলিশ জেলা পুলিশ আছে, তারা ফোর্সম্যানের দায়িত্ব নিবেন। রাস্তার কাজ, নতুন করে ক্ষুরাক্ষরি কাজও বন্ধ থাকবে। কোনাবাড়ি রাস্তার পাশে ভোল্টারগুলো সরিয়ে ফেলতে হবে। এছাড়া সেখানে অবৈধ যে গাড়ি পার্কি, সেগুলো উচ্ছেদের নির্দেশ দেন। এছাড়া আব্দুল্লাহপুর একটি সেন্সসিটিভ পয়েন্ট। সেখানেও লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেন। যাতে অকারণে রাস্তায় যানজট সৃষ্টি না হয়। এরপর টঙ্গীর চেরাগআলী, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন স্থানে পানি স্থানে পানি জমে। সেখানে সেতু ও সড়ক বিভাগের সতর্ক থাকতে হবে এবং পানি জমার সঙ্গে সঙ্গে পানি নিষ্কাশন করতে হবে।
তিনি বলেন, মহাসড়কে ইজিব্যাক, লেগুনাসহ ছোট ছোট যান চলাচল করছে। আমাকে রাস্তায় গাড়ি থামিয়ে ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশকে সেগুলোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা নির্দেশ দেন। এখন সড়ক দুর্ঘটনার হার বেশি, মৃত্যুও বেশি। এই ছোট গাড়িগুলো বড় গাড়ির সঙ্গে লাগলে ছোট গাড়ির প্রায় সব যাত্রী মারা যায়। কাজেই ওই সব ছোট ছোট যানবাহনের চালক-মালিকদের বুঝাতে হবে আগে জীবন পরে জীবিকা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ও আইজি প্রিজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। ওনারা বলেছেন, খালেদা জিয়ার কোন মাইল্ড স্ট্রোক হয়নি, তাঁর রক্তের সুগার ফল করেছিল। মাইল্ড স্ট্রোকের বিষয় নয়। তারপরও বেগম জিয়াকে অনুরোধ করা হচ্ছে, বাইরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা করার জন্য। তার চিকিৎসকদের কথা সত্য হয়। উন্নত পরিক্ষা নিরিক্ষা করার জন্য সে ব্যাপারে তাকে অনুরোধ করা হচ্ছে। তিনি রাজি হলেই তাকে সেখানে পরিক্ষা নিরিক্ষা করা হবে। তিনি জেলে আছে দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে। কিন্তু এর সঙ্গে মানবিক আচরণে বিষয় নেই। অমানবিক আচরণ করতে হবে এ রকম কোন কথাও নেই। তিনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার চিকিৎসার কোন গাফলতি হওয়ার বিষয় আমরা কেউ সার্পোট করি না। শেখ হাসিনা সরকার গাফলতি করবে এটা মনে করার কোন কারণ নেই।
ঈদের পরে বিএনপির গরম আন্দোলনের ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদের আন্দোলন করার বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করে বলেন, মওদুদ আহমদ কথা বলার সময় গরম, কিন্তু অ্যাকশনের সময় তার মত পলায়নী মনোবৃত্তি এদেশে কোন রাজনীতিকের মধ্যে আছে তা আমার জানা নেই। তার স্বরে আন্দোলনের চিৎকার করেন। কিন্তু যখন আন্দেলনটা শুরু হয় তখন হঠাৎ করে তিনি বিদেশে চেলে গেছেন। তখন তিনি আর দেশে থাকেন না। কাজেই তার মুখে এসব কথা শ্রাবণের আষাঢ়ের আকাশে মেঘের তর্জন-গর্জন মাত্র। তিন তর্জন-গর্জন করতে ভালই জানেন। তিনি এখন গণতন্ত্রের বড় প্রবক্তা হয়েছেন। তাকে এদেশের মানুষ খুব ভাল করেই জানেন কখন কোন পার্টি করেছেন। চৌদ্দগ্রামের এক্সিডেন্টের পর বেগম জিয়াকে হাসপাতালে রেখে তিনি গিয়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়েছেন। তিনি সেই মওদুদ। তিনি বহুরূপী রাজনীতিক। তার গণতন্ত্র হচ্ছে সাহেব বিবি হয়ে যায়, বিবি হয়ে যায় সাহেব। কথায় কথায় রূপান্তর। নিজের সুবিধামত তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন। তিনি ২০ ফেইক আইডি খুলেছেন। এজন্য তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তিনি হচ্ছেন ফেইক মওদুদ আহমদ সাব।
বাংলাদেশ সময়: ১:৪১:২৬ ৬২৬ বার পঠিত