বঙ্গ-নিউজঃ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চলমান মাদকবিরোধী অভিযানে আজও পাঁচ জেলায় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৬ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
এদের মধ্যে কুষ্টিয়ায় ২ জন, গাইবান্ধায় ১, কুমিল্লায় ১, দিনাজপুরে ১ ও ফেনীতে ১ জন নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার রাতের বিভিন্ন সময়ে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। গতকাল (সোমবার) সারা দেশের নয় জেলায় র্যাব ও পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ১১ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছিলেন।
কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় পুলিশের সঙ্গে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুই যুবক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন, ফটিক ওরফে গাফফার (৩৭) ও লিটন শেখ (৪০)।
পুলিশের দাবি, নিহতরা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন। নিহত ফটিক ওরফে গাফফার উপজলার এলেঙ্গীপাড়া গ্রামের মৃত ওসমান গনির ছেলে ও লিটন শেখ উপজেলার নওদাপাড়া এলাকার মৃত গোলবার শেখের ছেলে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে কুমারখালী উপজেলার লাহিনীপাড়া গড়াই নদী সংলগ্ন ব্রিজের নিচে ও ভেড়ামারা উপজেলার হাওখালী মাঠে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।
কুমারখালী থানার ওসি আবদুল খালেক জানান, একদল মাদক ব্যবসায়ী মাদক কেনাবেচার উদ্দেশ্যে লাহিনী পাড়ার গড়াই নদীর পাড় সংলগ্ন ব্রিজের নিচে অবস্থান করছে এমন গোপন সংবাদ পেয়ে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়।
পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। জবাবে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে ‘বন্দুকযুদ্ধে’এক যুবক গুলিবিদ্ধ হন। ওই যুবককে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পরে পুলিশ জানতে পারে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ব্যক্তি শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী ও সন্ত্রাসী ফটিক ওরফে গাফফার। ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে বলে পুলিশের দাবি।
ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি, ৭০০ ইয়াবা ও ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
অপরদিকে ভেড়ামারা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার হাওখালী মাঠে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী লিটন শেখ (৪৫) নিহত হয়েছেন।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, তিন রাউন্ড গুলি, ৫০০ ইয়াবা ও ২ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করেছে। পরিবারের দাবি সোমবার রাত থেকে লিটন নিখোঁজ ছিল।
গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ রাজু মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এসময় আহত হয়েছেন র্যাবের দুই সদস্য।
বুধবার ভোর রাতে জেলার পলাশবাড়ি উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ বিদেশি অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়।
নিহত রাজু মিয়া পলাশবাড়ি উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের রায়গ্রামের জোব্বার মণ্ডলের ছেলে। র্যাব জানায় নিহত রাজু একজন শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী।
কুমিল্লা: কুমিল্লায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নুরুল ইসলাম ইছা নামের এক তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার দিবাগত সাড়ে ১২ টার দিকে আদর্শ সদর উপজেলার টিক্কার চর ব্রিজ সংলগ্ন গোমতী বাঁধ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইছা একই উপজেলার গাজীপুর গ্রামের আবদুল জলিলের ছেলে।
কোতয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া আরটিভি অনলাইনকে জানান, নুরুল ইসলাম ইছা একজন চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী।পুলিশের বিশেষ অভিযানে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেয়া তথ্য অনুসারে রাতে ইছার সহযোগীদের আটক এবং মাদক উদ্ধারে পুলিশ অভিযান শুরু করে পুলিশ। গভীর রাতে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তানভীর সালেহীন ইমনের নেতৃত্বে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের একটি দল শহরতলীর টিক্কারচর ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে নুরুল ইসলাম ইছার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এসময় আত্মরক্ষায় পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। উভয়পক্ষের গুলি বিনিময়ে মাদক ব্যবসায়ী ইছা গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধারের পর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত ইছার বিরুদ্ধে মাদক আইনে ৭টি মামলা রয়েছে বলেও জানান ওসি।
দিনাজপুর: দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে প্রবল হোসেন (৩৫) নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। সে বিরামপুরের দক্ষিণ দামোদরপুর (বাসুদেবপুর) গ্রামের খলিল উদ্দিনের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ কমপক্ষে ৮টি মামলা রয়েছে।বিরামপুর থানা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে বিরামপুর পৌর এলাকার মনিপুর নামক স্থানে পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযান চালালে মাদক ব্যবসায়ীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। পুলিশ আত্মরক্ষায় পাল্টা গুলি ছুড়লে মাদক ব্যবসায়ীরা পালিয়ে যায়।
পরে পুলিশ সেখানে তল্লাশি করলে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় প্রবলকে উদ্ধার করে বিরামপুর উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্রে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।এসময় পুলিশের দুই এসআই রাম চন্দ্র ও খুরশিদ আলম আহত হন। পরে তাদের উদ্ধার করে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ বিদেশি ১টি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ৫টি ককটেল ও ৯২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।
ফেনী: ফেনী সদর উপজেলার দাউদপুল এলাকায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মঙ্গলবার রাতে মো. ফারুক (৩৫) নামে তালিকাভুক্ত এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন ফেনীস্থ র্যাব-৭ এর কোম্পানি অধিনায়ক সাফায়াত জামিল ফাহিম।
নিহত ফারুক চট্টগ্রাম জেলার চন্দনাইশ উপজেলার অলি আহমদের ছেলে।
র্যাব সূত্র জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে র্যাব ফেনী ক্যাম্পের একটি দল দাউদপুল এলাকায় অভিযান চালায়। এসময় মাদক ব্যবসায়ী মো. ফারুকের নেতৃত্বে একদল মাদক ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম থেকে প্রাইভেটকার করে ঢাকা যাওয়ার পথে ফেনীর দাউদপুল এলাকায় পৌঁছালে র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে তারা র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
আত্মরক্ষার্থে র্যাবও পাল্টা গুলি ছুড়লে ফারুক গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একটি প্রাইভেটকার, ২২ হাজার পিস ইয়াবা, ১টি ওয়ান শুটারগান, ১০টি কার্তুজ ও গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১০:২২:৫৩ ৭৫০ বার পঠিত #bangla news #bangla newspaper #bangladesh news #bd news #daily newspaper #World News ‘বন্দুকযুদ্ধে’