বঙ্গ-নিউজঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
২৮ এপ্রিল, শনিবার প্রিয়.কমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান ফারজানা ইসলাম।
উপাচার্য দাবি করেন, গত ২৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) বঙ্গভবনে দ্বিতীয় মেয়াদে রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. আবদুল হামিদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে।
ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘মন্ত্রী, সাংসদ, মন্ত্রণালয় ও ইউসিজির সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সকলেই এক বাক্যে বলেছে, এ আন্দোলনটা (বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের সাম্প্রতিক আন্দোলন) করা উচিত হয়নি। এ ধরনের আন্দোলন করার যৌক্তিকতা আমরা দেখি না।’
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের উপসচিব জিন্নাত রেহানা সাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন ১৯৭৩ এর ১১ (১) ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও বিশ্বদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে ড. ফারজানা ইসলামকে ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে নিযুক্ত করেন।
এ নিয়োগের বিপরীতে হাইকোর্ট একটি রিট দায়ের করেন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের’ ব্যানারের দুইজন শিক্ষক।
এ বিষয়ে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম প্রিয়.কমকে বলেন, ‘যে রিট উনারা করেছেন, তা আমার বিরুদ্ধে যায় না। কারণ, আমি আমাকে নিয়োগ দিতে পারি না। মহামান্য রাষ্ট্রপতির বার্তা, নির্দেশ বঙ্গবন্ধুর আর্দশের প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের বোঝার কথা। আমি সেই আশাতেই আছি, না হলে রিট করার পর আমার হয়তো একটা অন্য রকম অবস্থান হতো, কিন্তু আমি তা করিনি। আমি ধৈর্য্য ধরে আছি, উনারা বিষয়টা বুঝবেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে উনারা ভালোবাসবেন।’
এর আগে গত ২৬ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ শিক্ষকদের ওপর হামলা, প্রক্টরের শাস্তিসহ প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ, অপরাধী সকল শিক্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, অনতিবিলম্বে সিন্ডিকেট সভা আহ্বান, শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন, র্যাগিং, সেশনজট ও মাদকমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ে তোলা, অবৈধভাবে ডিন, প্রভোস্ট অপসারণ ও নিয়োগের প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে উপাচার্য প্যানেল ও জাকসু নির্বাচনের দাবিতে আগামী ৩০ এপ্রিল সোমবার ও ৩ মে বৃহস্পতিবার আবারো উপাচার্য অফিস ঘেরাও কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে।
এ বিষয়ে উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, ‘রোজ রোজ আমাকে অবরোধ করা এটাও কিন্তু ক্লাশ পরীক্ষা বর্জন করারই নামান্তর। কারণ আমি পরীক্ষার রেজাল্ট দিবে পারব না, ফাইলগুলো এসে বসে থাকবে। একাডেমিক কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারব না।’
এ সময় ফারজানা ইসলাম আরও বলেন, ‘গত তিন চার মাস ধরে উনাদের সঙ্গে তো আমাদের একটা টেনশন হচ্ছেই। সেটা থেকে একটা প্রতিক্রিয়া হচ্ছেই। এই প্রতিক্রিয়াটি চলবে। আরও যদি করেন, আরও চলবে। আরও সেটা দিয়ে আমার ব্যর্থতার প্রমাণ করার সাথে সাথে উনারা যে মিত্র নন সেটাও প্রমাণ হবে।’
এ সময় উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সুন্দর, সুষ্ঠ, শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ধরে রাখার জন্য উনাদের সহযোগিতা আমি সব সময় চেয়েছি। আমি এখন আশা করি উনারা বিষয়টি বুঝবেন এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন। যে অভিযোগগুলো উনারা করেছেন, সেই অভিযোগগুলো নিয়ে উনারা ভাবুন। কতটা সত্য-মিথ্যার ওপর দাঁড়িয়ে আছেন, কতটা বিভ্রান্তির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। উনাদের কাছে আমার একমাত্র এই আবেদন থাকবে।’
গত ১৭ এপ্রিল, উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্ট বিরোধী প্রভোষ্ট নিয়োগের প্রতিবাদে ধর্মঘটের ডাক দেন আন্দোলনরত শিক্ষকবৃন্দ। আন্দোলনের অংশ হিসেবে ওইদিন ভোর পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল এলাকার পরিবহন ডিপোতে বাস আটকাতে গেলে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে উপাচার্যপন্থী শিক্ষকদের ধস্তাধস্তি হয়। ঘটনায় গত ১৯ এপ্রিল থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত (শুক্র-শনিবার ব্যতিত) হামলার বিচারসহ বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষকদের সংগঠন, ছাত্র সংগঠন, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় এবং জনসংযোগ, প্রশাসনিক ভবনের সামনে কালো পতাকা প্রদর্শন, উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষকেরা। পরে গত ২৬ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।
সুত্রঃ প্রিয়.কম
বাংলাদেশ সময়: ৩:৩৮:২৬ ৭০১ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #breaking news #jahangirnagar university #World News