বঙ্গ-নিউজঃ আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসন ভাগাভাগি নিয়ে উদ্বিগ্ন শরিকদের আশ্বস্ত করেছে বিএনপি। খালেদা জিয়ার মুক্তি নিশ্চিত এবং নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি হলে সবাই মিলেই আসন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা ২০ দলীয় জোটের শরিকদের জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আর এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে হাসিমুখে বৈঠক ছেড়েছেন জোটের নেতারা।
একইসঙ্গে গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন সভায় আসন ভাগাভাগি নিয়ে উচ্চকিত একাধিক শরিক দলের নেতারা বৈঠকে জানিয়েছেন, তারা ভবিষ্যতে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনও মন্তব্য করবেন না।
শুক্রবার (৬ এপ্রিল) বিএনপি-জোটের বৈঠক শেষে অন্তত ছয় নেতার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
শুক্রবার রাত পৌনে ৮টার দিকে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসন কার্যালয়ে বিএনপি-জোটের বৈঠক শুরু হয়। মির্জা ফখরুল কেন্দ্রীয় কারাগার হয়ে বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মাকে দেখে বৈঠকে যোগ দেন। আর এতে সন্ধ্যার বৈঠক শুরু হয় প্রায় দেড় ঘণ্টা দেরিতে। মির্জা ফখরুল বিকালে খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জোটনেতাদের সালাম ও শুভেচ্ছা জানান।
জাতীয় পার্টি জেপি’র মহাসচিব আব্দুল মতিন সাইদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল আমাদের জানিয়েছেন,জোটনেত্রী নেতাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলেছেন। তিনি আমাদের সালাম জানিয়েছেন।’ শরিক দলের একাধিক নেতা জানান, বৈঠকে মূল এজেন্ডা ছিল খুলনা ও গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে আলোচনা। বিশেষ করে স্থানীয় সরকারের সবগুলো নির্বাচনে অংশ নেওয়া, প্রার্থী ঠিক করার বিষয়ে জোটগত আলোচনা করে এসেছে বিএনপি। শুক্রবারের বৈঠকটি এর ধারাবাহিকতা ছিল। এর বাইরে সম্প্রতি জোটের দুটি শরিক দলের নেতাদের জাতীয় নির্বাচনের আসন ভাগভাগি নিয়ে সমালোচনাও ওঠে আসে। কেউ কেউ নির্বাচন নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে বলেও সমালোচনা হয় বৈঠকে।
সূত্রের দাবি, এলডিপি’র মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ বৈঠকে বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য মিডিয়ায় বিকৃতভাবে এসেছে।’ আর কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বাইরে জোটের সমালোচনার বিষয়ে তথ্যপ্রমাণ চান। শুক্রবার রাতে তাদের দুজনের সঙ্গে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জোটের শরিক একটি দলের চেয়ারম্যান বলেন, ‘যারা বাইরে বলাবলি করেছে, তারা দুঃখপ্রকাশ করেছেন। আর বাইরে নির্বাচনি আসন নিয়ে অগ্রিম কোনও কথাবার্তা হবে না বলে তারা জানিয়েছেন।’
বৈঠকে অংশ নেওয়া শরিক একটি দলের সিনিয়র নেতা জানান, ‘মির্জা ফখরুল এ সম্পর্কে বলেছেন, আমাদের প্রথম কাজ নেত্রীর মুক্তি। তিনি মুক্ত হলেই নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি সাপেক্ষে নির্বাচন, আসন নিয়ে চিন্তা করা যাবে।’
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের এক নেতা বলেন, ‘মির্জা ফখরুল এবং আগেও বেগম জিয়া কয়েকবার জোটের বৈঠকেই বলেছেন, নির্বাচন ও আসন নিয়ে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটা বিএনপি একা করবে না।’
খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাক বলেন,‘আসন নিয়ে কোনও আলোচনা নেই। এগুলো এখন বিষয়বস্তু না। আগে নেত্রীকে মুক্ত করার আন্দোলন। এটাই আসল আন্দোলন। পরে বিবেচনা করা হবে সিট নিয়ে। জোটভাঙার জন্য সরকার অনেক ষড়যন্ত্র করছে, ফলে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
জোটের শরিক একটি দলের একাংশের চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, ‘বাইরে যে আলোচনা হয়, এগুলো আবার জোটের ফোরামে আলোচনা হয় না। বিএনপির তরফে বারবার বলা হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচনের প্রার্থিতা নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। বিএনপির যেখানে যোগ্য প্রার্থী আছে, সেখানে জোটকে ছাড় দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জোট সমন্বয়ক নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আগে আমাদের নেত্রীর মুক্তি এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিষয়। এটাই সিদ্ধান্ত হয়ে আছে। জনগণের ভোটাধিকার আদায়ের সংগ্রামে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং জোটের নেতারা কে কোথায় নির্বাচন করবে তা নিয়ে পরে আলোচনা করা যাবে।’
বাংলাদেশ সময়: ৮:১৪:২৯ ৬৪১ বার পঠিত # #bangla news #bd news #breaking news #headlines #online news paper