বঙ্গ-নিউজ: অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে বক্তৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এ থেকে তিনি প্রায় ১৩ লাখ ডলার কামাবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নিউ সাউথ ওয়েলসের আর্ট গ্যালারিতে উপস্থিত হওয়ার বিনিময়ে পেয়েছেন কয়েক হাজার ডলার। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের পর জাপান ও সিঙ্গাপুরে এক সপ্তাহব্যাপী সফর থেকে ঘরে তুলবেন কাঁড়ি কাঁড়ি ডলার।
বৃটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইলের এক খবরে এই তথ্য দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, সাবেক প্রেসিডেন্ট ইতিমধ্যেই হ্যারি ওয়াকার এজেন্সির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এই এজেন্সি প্রতি বক্তৃতার জন্য ৫ লাখ ২০ থেকে ৬ লাখ ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত চেয়ে থাকে।
শুধু বক্তৃতা থেকেই নয়। স্ট্রিমিং সার্ভিস নেটফ্লিক্সে একটি বিশেষ শো আয়োজনের ব্যাপারে কথাবার্তা চলছে ওবামা দম্পতির। এখান থেকেও যে বিপুল অঙ্কের অর্থ ঘরে তুলবেন তারা, তা না বললেও চলে।
বারাক ওবামার জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা এরিক শুলৎস বলেন, সব ঠিকঠাক থাকলে নেটফ্লিক্সে নিজের অনুষ্ঠানে বারাক ওবামা অনুপ্রেরণাদায়ী গল্প বলবেন। এ ক্ষেত্রে নিজের শাসনামলের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে তুলে ধরবেন তিনি। যেমন, জলবায়ু পরিবর্তন, স্বাস্থ্যসেবা ও অভিবাসন। অপরদিকে মিশেল ওবামা আলোচনা করবেন পুষ্টি নিয়ে। ফার্স্টলেডি থাকাকালে এ নিয়ে সরব ছিলেন তিনি। শুধু নেটফ্লিক্স নয়। অ্যাপল ও অ্যামাজনও ওবামা দম্পত্তির সঙ্গে অনুষ্ঠান আয়োজন করতে আগ্রহী। এর বাইরে তারা দু’জনই বর্তমানে নিজেদের আত্মজীবনী লেখার কাজে হাত দিয়েছেন। এই বইয়ের জন্য তারা ইতিমধ্যে অগ্রিম হাতে পেয়েছেন ৬ কোটি ডলারেরও বেশি।
তবে সমস্ত ব্যয় ও ঋণ বাদ দিয়ে বারাক ওবামার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৪ কোটি ডলার। তার সম্পদের বেশিরভাগই এসেছে তার বই ‘অডাসিটি অব হোপ’ ও ‘ড্রিম অব মাই ফাদার’ বিক্রি থেকে। নতুন বই বিক্রি থেকে স্বাভাবিকভাবেই এই সম্পদ আরো বাড়বে।
কীভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন বারাক ওবামা?
২০০৪ সালে বারাক ওবামা ইলিনয় রাজ্য সিনেটে থাকাকালে বেতন-ভাতা হিসেবে ৬০ হাজার ডলার পেয়েছিলেন। এছাড়া শিকাগো আইন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়ে পেয়েছিলেন ৩২ হাজার ডলার। এর বাইরে চারটি আর্থিক তহবিলে তার অর্থ গচ্ছিত ছিল। এগুলোর একেকটির মূল্যমান ছিল ৫০ হাজার ডলার থেকে ১ লাখ ডলার। এক বছর পর তিনি বই লেখার জন্য অগ্রিম ৮ লাখ ৪৭ হাজার ডলার ও রয়্যালটি (বিক্রি বাবদ) হিসেবে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ডলার পেয়েছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন তহবিলে রাখা তার অর্থও বেড়ে যায়।
২০০৫ সালে ওবামা দম্পত্তি শিকাগোর কেনউডে ১৬ লাখ ডলার মূল্যের বাড়িতে উঠেন। ২০০৬ সালে তিনি ফের বইয়ের রয়্যালটি পান ১ লাখ ৫০ হাজার ডলার। সে বছর আরেকটি বইয়ের কাজে হাত দেন তিনি। ওই বই থেকে তিনি অগ্রিম সম্মানী পান ৪ লাখ ২৫ হাজার ডলার। তখন বিভিন্ন খ্যাতনামা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তহবিলে অর্থ জমা রাখতে শুরু করেন তিনি।
পরের বছর তিনি র্যান্ডম হাউজ থেকে আয় করেন ৩৩ লাখ ডলার। ডিস্টেল ও গোডরিচ লিটারেরি ম্যানেজমেন্ট থেকে পান ৮ লাখ ১৬ হাজার ডলার। এছাড়া মার্কিন রাষ্ট্রীয় ট্রেজারি থেকে বন্ড কিনেছিলেন তিনি। ২০০৮ সালে তিনি যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন ট্রেজারিতে তার সম্পদ ছিল ১০ লাখ থেকে ৫১ লাখ ডলারের মধ্যে।
২০০৯ সালে এই দম্পতির আয়কর রিটার্ন থেকে দেখা যায়, পারিবারিকভাবে তাদের আয় ছিল ৫৫ লাখ ডলার। ২০০৭ সালে যা ছিল ৪২ লাখ ডলার। ২০০৫ এ ছিল ১৬ লাখ ডলার। ২০১০ সালে, নিজের আয়ের ১৪ শতাংশ তিনি অলাভজনক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দান করেন। এর মধ্যে ১ লাখ ৩১ হাজার ডলার গেছে ফিশার হাউজ ফাউন্ডেশনে। এই দাতব্য সংস্থা যুদ্ধাহত প্রবীণ যোদ্ধাদের পরিবারকে সহায়তা করে।
প্রেসিডেন্ট থাকাকালে বছরে ৪ লাখ ডলার বেতন পেতেন তিনি। এছাড়া দেড় লাখ ডলারের বিশেষ তহবিল, ১ লাখ ডলারের ভ্রমণ ভাতা ও ২০ হাজার ডলারের বিনোদন ভাতা পেতেন তিনি। এই মিলিয়ে বারাক ওবামার ঋণ বাদে মোট সম্পদ আনুমানিক ৪ কোটি ডলার। তার স্ত্রী মিশেল ওবামারও মোট সম্পদ একই।
বাংলাদেশ সময়: ২০:৫১:৫৮ ৫৩৭ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম