রোহিঙ্গা নিধনের অস্ত্র হয়েছে ফেসবুক-শনাক্ত করেছে জাতিসংঘ

Home Page » জাতীয় » রোহিঙ্গা নিধনের অস্ত্র হয়েছে ফেসবুক-শনাক্ত করেছে জাতিসংঘ
বুধবার, ১৪ মার্চ ২০১৮



ফাইল ছবি

বঙ্গ-নিউজঃ মিয়ানমারে চলমান রোহিঙ্গা নিধনে ফেসবুকের ভয়াবহ ভূমিকা শনাক্ত করেছে জাতিসংঘের। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ও সংবাদমাধ্যমের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রোহিঙ্গাবিদ্বেষী প্রচারণার মধ্য দিয়েই সেখানে নিধনযজ্ঞ পরিচালনার পাটাতন সৃষ্টি করা হয়। জাতিসংঘের তদন্তকারীরা বলছেন, ওই প্রচারণার কাজে ফেসবুকই প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। উল্লেখ্য, মিয়ানমারের বিপুল পরিমাণ মানুষ প্রতিদিনের একটা বড় অংশ যাপন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর সেখানকার সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম বলতেই ফেসবুক।

গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্ব-পরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। নিরাপত্তা চৌকিতে আরসার হামলাকে মিয়ানমারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাবিরোধী অভিযানের কারণ বলা হলেও জাতিসংঘের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এবং তাদের ফেরার সমস্ত পথ বন্ধ করতে আরসার হামলার আগে থেকেই রোহিঙ্গাবিদ্বেষী প্রচারণার মধ্য দিয়ে পরিকল্পিত সেনা-অভিযান শুরু হয়েছিল। সরেজমিন কক্সবাজার পরিদর্শন করে জাতিসংঘের সেই প্রতিবেদনের যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সেখানকার শরণার্থী শিবিরে সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে বাংলাদেশের ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনও নিশ্চিত হয়, রাখাইনে সেনাবাহিনীর তাণ্ডব শুরু হয়েছিলো ২৫ আগস্ট নিরাপত্তা চেকপোস্টে হামলার অন্তত ৩ সপ্তাহ আগে থেকে। আর তারও আগে শুরু হয়েছিল গ্রামে গ্রামে সেনা প্রচারণা। অ্যামনেস্টির সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনেও ‘রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞের সামরিক প্রচারণা’কে সেখানকার সংকটের জন্য দায়ী করা হয়েছে।

রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সম্ভাব্য গণহত্যা তদন্তে নিয়োজিত সংস্থাটির মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিদ্বেষী প্রচারণায় ফেসবুক ভয়াবহ ভূমিকা রেখেছে। মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘের বিশেষ দূত বলেছেন, রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা সংকটে গণহত্যার আভাস পাওয়া গেছে।

মিয়ানমারের জাতিসংঘের স্বাধীন আন্তর্জাতিক তথ্যানুসন্ধান মিশনের চেয়ারম্যান মারজুকি দারুসমান সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা নিধনে সামাজিক মাধ্যম ‘নির্ধারণী ভূমিকা’ পালন করেছে। তিনি বলেন, ‘এটি জনগণের মধ্যে বিরোধ, অশান্তি ও দ্বন্দ্বের মাত্রা বাড়িয়েছে বিপুল পরিমাণে। নিশ্চিতভাবেই বিদ্বেষী প্রচারণা সেই দ্বন্দ্ব-বিরোধ-অশান্তির একটা অংশ।’ মিয়ানমারে ফেসবুকের জনপ্রিয়তার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সামাজিক মাধ্যম হলো ফেসবুক আর ফেসবুক মানে হলো সামাজিক মাধ্যম।

তদন্তকারী ইয়াংহি লি জানান, মিয়ানমারে ফেসবুক সরকারি, বেসামরিক ও ব্যক্তিগত জীবনের বিশাল অংশ। সরকার জনগণের মধ্যে তথ্য প্রচার করার জন্য এটা ব্যবহার করেছে। তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারে যা কিছু করা হয়, তার সবই হয় ফেসবুকে।’তার মন্তব্য, ফেসবুক দরিদ্র দেশটিকে সাহায্যও করেছে আবার বিদ্বেষী প্রচারণা ছড়াতেও ব্যবহার করা হয়েছে।

ইয়াংহি লি আরও বলেন, ‘ফেসবুক সরকারি বার্তা সরবরাহ করতো কিন্তু আমরা জানি কট্টর বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদীদেরও নিজস্ব ফেসবুক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তারা রোহিঙ্গা অথবা অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে প্রকৃত অর্থেই প্রচুর সহিংসতা ও ঘৃণা ছড়িয়েছে’। তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভীত যে, ফেসবুক এখন একটি জন্তুতে পরিণত হচ্ছে আর এটা আসল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১২:৪১:২৪   ৬৪৯ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

জাতীয়’র আরও খবর


সালাম, আমান, রিজভী, খোকন, শিমুল ও এ্যানিসহ গ্রেফতার শতাধিক
ভারতকে হারিয়ে টাইগারদের সিরিজ জয় নিশ্চিত
 নয়াপল্টনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ ,নিহত ১
বিয়েবর্হিভূত যৌন সম্পর্ক নিষিদ্ধ: প্রতিবাদে বিক্ষােভ ইন্দোনেশিয়ায়
আড়াইহাজারে অর্থনৈতিক অঞ্চল উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
কোয়ার্টারে ব্রাজিল ক্রোয়েশিয়া মুখোমুখি
ব্যাংকে টাকা নিয়ে গুজবে কান না দেয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তির লটারি ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর
২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে করোনা টিকার চতুর্থ ডোজ
সউদী আরব তৈরি করবে বিশ্বের বৃহত্তম বিমানবন্দর

আর্কাইভ