সেলিম আজাদ বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ বাংলাদেশে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশের তল্লাশি চালানোর দু’দিন পর দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আজ বুধবার সেখানে গিয়ে সরকারের উদ্দেশ্যে বিরোধী নেতা-কর্মীদের ধরপাকড় ও ‘গণহত্যা’ বন্ধের আহবান জানিয়েছেন।তিনি বলেছেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে এই ‘গণহত্যার’ বিচারের জন্যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। পুলিশের গুলিতে বিরোধীদের হত্যাকে তিনি মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করেন।
কার্যালয়ের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় দাঁড়িয়ে হাজার হাজার নেতা-কর্মীর উদ্দেশে ভাষণ দেন খালেদা জিয়া।
সংবাদদাতারা বলছেন, খালেদা জিয়া প্রায় দু’বছর পর নয়া পল্টনের এই অফিসে গেলেন।
গণহত্যার প্রতিবাদের সোমবার ১৮ দলীয় জোটের বিক্ষোভ সমাবেশে হাতবোমা বিস্ফোরণের পর পুলিশ দলটির কার্যালয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালায় এবং বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতাকে আটক করে নিয়ে যায়।
বিএনপি দাবি করছে, পুলিশ তাদের শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করেছে ও অফিসে ভাঙচুর চালিয়েছে।
পুলিশের পক্ষ থেকে এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলা হয়েছে যে বিএনপির অফিসের ভেতরে অভিযান চালিয়ে তারা কিছু হাতবোমা উদ্ধার করেছে।
খালেদা জিয়া পুলিশের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, “কথায় কথায় গুলি চালানো বন্ধ করুন। এজন্যে আপনাদের জবাব দিতে হবে।”
তিনি বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবারের মধ্যে আটক নেতাদের মুক্তি না দিলে পূর্বঘোষিত ১৮ ও ১৯শে মার্চের হরতাল কর্মসূচি বহাল থাকবে।
এসময় খালেদা জিয়া সরাসরি নাম উল্লেখ না করলেও শাহবাগের আন্দোলনের সমালোচনা করেছেন।
সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলা ও তাদের বাড়িঘর ভাঙচুরের জন্যে তিনি সরকারকেই দায়ী করেছেন।
এর আগে বিএনপির কার্যালয়ে ভাঙচুর, নেতাকর্মীদের মারধর এবং লুটতরাজের অভিযোগে পুলিশের বিরুদ্ধে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি নালিশি মামলা করলে আদালত তা খারিজ করে দিয়েছে।
কূটনীতিকদের সাথে বিএনপি বৈঠক
এদিকে, বিএনপির নেতারা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাথে বৈঠক করেছেন।
বৈঠক শেষে কূটনীতিকদের সাথে আলোচনা সম্পর্কে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, তারা দ্বিপাক্ষিক বিষয়গুলো নিয়েই বিদেশি কূটনীতিকদের সাথে আলোচনা করেছেন।
“সেখানে সব বিষয় নিয়েই কথা হয়েছে তবে কূটনীতিকরা কোনো মন্তব্য করেননি।” বলেন মি. চৌধুরী।
তবে বিদেশি কূটনীতিকরা রাজি হননি সাংবাদিকদের সামনে মুখ খুলতে।
তবে ঢাকায় বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, সোমবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান সম্পর্কে কূটনীতিকদের অবহিত করা হয়েছে।
এছাড়াও যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় হওয়ার পর সারা দেশে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশের গুলি ও সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার বিষয়েও কূটনীতিকদের জানানো হয়েছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা সাবিহ উদ্দিন আহমেদ এসব বিষয়ে কূটনীতিকদের সামনে বক্তব্য তুলে ধরেন।
ব্রিটেন, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ ১৫টির মতো দেশের কূটনীতিকরা এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৭:৪৭ ৫১৫ বার পঠিত