বঙ্গ- নিউজ ডটকমঃ বাংলাদেশের ফুটবলের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন তাঁরা আগেই। বাকি ছিল আনুষ্ঠানিক চুক্তি। সেটিও হলো গতকাল। লোডভিক ডি ক্রুইফ এবং রেনে কোস্টার অবশেষে কাগজে-কলমে বাফুফের কোচ হলেন। সংবাদ সম্মেলনে দুই ডাচ কোচের হাতে আরও একবার তুলে দেওয়া হলো লাল-সবুজ জার্সি। চুক্তিপত্র বিনিময়সহ সবই দুই পক্ষ সেরে ফেলল আন্তরিক পরিবেশে।
ক্রুইফ ও রেনে কোস্টার বাফুফের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেন গত ফেব্রুয়ারিতে। মার্চে তাঁরা এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের দায়িত্ব পালন করেছেন পুরো এক মাসের বেতন নিয়ে বিশেষ চুক্তির আওতায়। তবে আজ শুরু সুপার কাপ দেখতে দুই কোচ কাল সকালে ঢাকা এসেছেন চুক্তির বাইরে আমন্ত্রিত ‘অতিথি’ হয়ে। ১৮ জুন ঢাকা ছাড়বেন দুজন, এ সময়ের জন্য কোনো পারিশ্রমিক নেবেন না। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে দুই বছরের চুক্তি। ওই দিন থেকেই সেপ্টেম্বরের সাফ ফুটবলের ক্যাম্প শুরুর দু-এক দিন আগে ফিরবেন আবার। সাফের আগে বিদেশে গোটা তিনেক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরিকল্পনা আছে বলে জানালেন বাফুফের জাতীয় দল কমিটির প্রধান কাজী নাবিল আহমেদ।
দুই কোচের সঙ্গে সমঝোতার স্মারক অনুযায়ী হওয়া চুক্তিতে নতুন কিছু নেই। দুজনের জন্য আলাদা বাসা, আলাদা গাড়ি, স্বাস্থ্যবিমা, বছরে ছয়টি বিমান টিকিট ইত্যাদি থাকছে। শুধু জাতীয় দল বা একাডেমি নয়, বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন তাঁর ‘ভিশন ২০২২’-কে এগিয়ে নেওয়ার সারথি হিসেবে দেখছেন দুই কোচকে। কাতার বিশ্বকাপে (২০২২) খেলার আপাত-অসম্ভব লক্ষ্য পূরণে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দায়িত্ব বর্তাচ্ছে ক্রুইফ-কোস্টারের কাঁধে। সালাউদ্দিন সেটি বললেনও, ‘কোচ নিয়োগ দিয়ে আমরা ভিশন ২০২২-এর পথে আজ নতুন যাত্রা শুরু করলাম।’
এই যাত্রাপথের সবচেয়ে বড় বাধার নাম অর্থ। অর্থ সংগ্রহে সালাউদ্দিন মাঠে নেমেছেন বেশ আগেই। ফেডারেশনের অনেকের সঙ্গে বাইরের শিল্পপতিরাও ১০ লাখ টাকা করে দিচ্ছেন ভিশন ২০২২-এর তহবিলে। বাফুফে সভাপতি জানান, ‘এক শর ওপরে এলিট স্পনসর আমরা নেব, যারা সবাই ১০ লাখ টাকা করে দেবে। বেশ কিছু স্পনসর পেয়েও গেছি। এটা দিয়ে আপাতত শুরুটা করি। তারপর ধাপে ধাপে এগোব।’
ভিশন ২০২২, সুপার কাপ…এই ব্যাপারগুলো দেখে বেশ কৌতূহলী ক্রুইফ। শুধুই স্থানীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে আয়োজিত সুপার কাপ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত প্রধান কোচ, ‘এটা দারুণ। সব স্থানীয় খেলোয়াড়কে আমি এক সপ্তাহেই দেখতে পারব।’ ভিশন ২০২২ সম্পর্কে মুগ্ধতার পাশে তাঁর বিস্ময়ও আছে, ‘ভিশনের ব্যাপারটা সম্পর্কে এখানে এসে জেনেছি আমি। অনেক বড় পরিকল্পনা এটা। আপনাকে স্বপ্ন দেখতে হবে, নইলে এগোতে পারবেন না।’ ক্রুইফ আশাবাদীই থাকছেন, ‘দু-চার বছর হাতে থাকলে লক্ষ্য পূরণ কঠিন হতো। কিন্তু আমাদের হাতে আছে নয় বছর। ফুটবল ফেডারেশন বেশ আন্তরিক, কাজেই আমার বিশ্বাস ফল আসবে।’
উন্নত বিশ্বে বাংলাদেশ পরিচিত হয় নেতিবাচক কারণে-বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভবনধস ইত্যাদি। বাংলাদেশে কিছুদিন কাজ করে হল্যান্ডে ফিরেও ক্রুইফকে এসব নিয়ে বলতে হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এসে পাল্টে যাওয়া ধারণাটাই তুলে ধরেছেন, বলেছেন এ দেশের স্বপ্নবান মানুষের কথা। আরও কয়েক বছর হয়তো বলবেন ভিশন ২০২২ নিয়ে, যেটির সঙ্গী তিনিও।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৭:১৬ ৪০৩ বার পঠিত