মিয়ানমারের রাখাইনে পাঁচ গণকবরের সন্ধান

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » মিয়ানমারের রাখাইনে পাঁচ গণকবরের সন্ধান
শুক্রবার, ২ ফেব্রুয়ারী ২০১৮



ছবি সংগৃহীত

বঙ্গ-নিউজঃ মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে অনেক রোহিঙ্গাকে হত্যা করে পাঁচটি স্থানে গণকবর দেওয়া হয়েছে। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের সময় এসব হত্যাকাণ্ড ও গণকবর দেওয়ার ঘটনা ঘটে। বার্তা সংস্থা এপির নিজস্ব অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে। অনুসন্ধান-সংশ্লিষ্ট একটি প্রতিবেদন গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থাটি।

মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানের সময় বেঁচে যাওয়া ২৪ ব্যক্তি এবং ভুক্তভোগীর স্বজনদের বক্তব্য নিয়ে এপির ওই অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। মুঠোফোনে ধারণ করা অভিযানের বিভিন্ন সময়ের ছবিও এতে সংযুক্ত করা হয়েছে। ওই সময় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অন্তত ৪০০ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গত বছরের আগস্টে রাখাইনে তল্লাশিচৌকিতে হামলাকে কেন্দ্র করে রাজ্যটিতে অভিযান শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এই অভিযান শুরুর পর প্রাণ বাঁচাতে সাড়ে ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। তাদের প্রায় সবার অভিযোগ, মিয়ানমারের বাহিনী রাখাইনে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগ করেছে। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর ভাষ্য, তারা ‘সন্ত্রাসের’ বিরুদ্ধে লড়ছে।

এপির প্রতিবেদনে একটি গণহত্যার বর্ণনায় জানানো হয়, গু দার পাইন গ্রামে একদিন একদল লোক খেলার জন্য দল বাছাই করছিল। স্থানীয়ভাবে ‘চিনলোন’ নামে পরিচিত এই খেলা অনেকটা ফুটবল খেলার মতো। দল বাছাইয়ের সময় মিয়ানমারের সেনারা সেখানে নির্বিচার গুলি চালায়। এ ঘটনায় বেঁচে যান নুর কাদির নামের এক রোহিঙ্গা। ছয় দিন পর তিনি তাঁর নিহত বন্ধুদের খুঁজে পান দুটি আলাদা গণকবরে। নিহত ব্যক্তিদের দেখে চেনার উপায় ছিল না বলে জানিয়েছেন তিনি। পরনের কাপড় দেখে তিনি তাঁর বন্ধুদের শনাক্ত করতে পেরেছিলেন।

ধারণা করা হয়, এই গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল গত বছরের ২৭ আগস্ট। ওই গণহত্যা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা এপিকে বলেছেন, মিয়ানমারের সেনারা এই গণহত্যা ধামাচাপা দিতে সব প্রমাণই নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। মরদেহ নিশ্চিহ্ন করতে সেনারা অ্যাসিড ব্যবহারের চেষ্টাও করেছিল বলে এপির প্রকাশিত ভিডিও চিত্র থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। ভারী বৃষ্টির কারণে মাটি ধুয়ে যাওয়ায় ওই গণকবরে থাকা নিহত ব্যক্তিদের দেহাবশেষ দেখা যায়। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা এ সময় মুঠোফোনে এসব দেহাবশেষের দৃশ্য ধারণ করতে পেরেছিলেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ফিল রবার্টসন বলেছেন, মিয়ানমারের কাছে জবাবদিহিতা দাবির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবস্থান আরও জোরালো করেছে এপির এই প্রতিবেদন। গু দার পাইনের গণহত্যা এবং মরদেহ নিশ্চিহ্ন করতে সেনাদের যে চেষ্টা থেকে বোঝা যায়, এই গণহত্যাগুলো ছিল পূর্বপরিকল্পিত। তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য রাখাইনে গণহত্যার মতো অপরাধের সঙ্গে জড়িত মিয়ানমারের সেনা কর্মকর্তা ও সেনাদের চিহ্নিত এবং তাঁদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের এখনই সময়।

এর আগে রাখাইনের ইন দিন গ্রামে একটি গণকবর থেকে ১০ মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার দায়িত্ব স্বীকার করেছিল মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিল, নিহত ব্যক্তিরা সবাই ‘সন্ত্রাসী’।

বাংলাদেশ সময়: ৮:২৩:২২   ৪৭৬ বার পঠিত   #  #  #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আজকের সকল পত্রিকা’র আরও খবর


নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন হাজী মোহাম্মদ হারিজ খান
সেরে উঠলেন ক্যানসার রোগীরা
আশুলিয়ায় খুশবু রেস্তোরাঁ উদ্বোধন
ধর্মপাশায় ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে শিক্ষকদের কর্মসূচী
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা ও কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি পণ্য সরবরাহ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা ও কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি পণ্য সরবরাহ
বিশ্বব্যাপী প্রবাসীদের প্রতি দায়িত্ব পালনে কূটনীতিকদের আন্তরিক হতে হবে: শেখ হাসিনা
শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় ইদুর নিধন
শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় ইদুর নিধন

আর্কাইভ