বঙ্গ-নিউজঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবরুদ্ধ হয়ে থাকা উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে ‘উদ্ধারে’র পর এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রাখা ব্যক্তিদের বহিরাগত ‘বাম সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়েছে ছাত্রলীগ। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্র সংগঠনটি এসব দাবি জানিয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবান সম্পদ বিনষ্টকারী, নারী নির্যাতনকারী ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বিনষ্টকারীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ। মঙ্গলবার উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে অবরুদ্ধ ও লাঞ্ছনা করে বহিরাগত বাম সন্ত্রাসীরা। এ খবর সাধারণ শিক্ষার্থীদের কানে পৌঁছালে তারা ছাত্রলীগের সঙ্গে একত্রিত হয়ে উপাচার্যকে উদ্ধার করে। এ সময় বাম সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ন্যক্কারজনকভাবে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। মেয়েদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগত বাম সন্ত্রাসীদের পাল্টা পাল্টি ধাওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান যেন নষ্ট না হয় সে জন্য ছাত্রলীগের দুই পক্ষকেই নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু এতে বাম সংগঠনের সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে ছাত্রলীগের ১২ নেতা-কর্মী আহত হন। এরা হলেন, ছাত্রলীগের সহসভাপতি নিশীতা ইকবাল নদী, বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হলের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হলের সভাপতি ফরিদা ইসলাম, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সভাপতি বেনজির হোসেন নিশি, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের রনক জাহান রাইন, বেগম রোকেয়া হলের সভাপতি বি. এম লিপি আক্তার ও বেগম রোকেয়া হলের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী ইসলাম, শামসুন নাহার হলের সভাপতি নিপু ইসলাম তন্বী, শামসুন নাহার হলের সাধারণ সম্পাদক জিয়াস ইসলাম শান্তা, ইশরাত জাহান তন্বী, জেরিন দিয়া, বিষিকা দাস। আহতেরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র ভর্তি আছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাম সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি জানিয়েছে। তাদের শাস্তির দাবিতে পাঁচ দফা দাবি করেন। দাবি হলো—
*ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ওপর হামলাকারী লাঞ্ছনাকারী এবং উপাচার্যের কার্যালয় ভাঙচুরকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে
*সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের ওপর হামলাকারী ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, তানভীর আহমেদ মুঈন, বেনজীর, তুহিন কান্তি, সাদিক রেজা, তমা, সুদীপ্ত, সালমান, ইভা, তমা শাকিল, ইরা, সোহেল রিফাত, সিদ্দীকী, জামিল, মিথিলাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও গ্রেপ্তার করতে হবে
* প্রক্টর অফিস ভাংচুরকারী এবং প্রোক্টর অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর হামলাকারীদের বহিষ্কার করতে হবে
*ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিশিয়াল ক্যামেরা ভাংচুরকারী এবং ক্যামেরাম্যান ও উপাচার্যের অফিস কর্মচারীর ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে
*ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশকে যারা নষ্ট করতে চায় তাদের অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
মঙ্গলবার বিকেলে ছাত্রী নিপীড়নে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাদের বহিষ্কারের দাবিসহ চার দফা দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানকে ‘উদ্ধার’ করে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা। এ ঘটনায় অন্তত ৪০ জন আহত হন।
বিভিন্ন বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের নেতা কর্মী, ডাকসুর নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও ৭ সরকারি কলেজের অধিভুক্ত বাতিলের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ‘নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দ’ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অপরাজেয় বাংলার সামনে জড়ো হয়ে মিছিল শুরু করেন। মিছিলটি টিএসসি, কলাভবন, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ ঘুরে উপাচার্য কার্যালয়ের সামনে আসে। তাঁদের আসার খবর পেয়ে আগে থেকে উপাচার্যের কার্যালয়ের প্রবেশপথগুলোতে তালা দিয়ে দেওয়া হয়।
শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক কার্যালয়ের একাধিক ফটক ভেঙে বেলা দেড়টা থেকে উপাচার্যের কার্যালয়ের দরজার সামনের করিডরে অবস্থান নেন। বেলা সাড়ে তিনটা পর্যন্ত উপাচার্য তাঁর কক্ষেই আটকা থাকেন। বেলা সাড়ে তিনটায় এক অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা থাকলে উপাচার্য পেছনের ফটক দিয়ে বের হন। কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ঘিরে আটকে রাখেন।
এ সময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইনের নেতৃত্বে সংগঠনের ২০-২৫ জনের একটি দল উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে যান। তাঁরা উপাচার্যকে কক্ষে পাঠিয়ে আন্দোলনকারীদের করিডর থেকে সরিয়ে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ৬:৫৫:১৪ ৫৭৪ বার পঠিত #bangla news #bangla newspaper #bangladesh news #bd news #daily newspaper #World News