বঙ্গ-নিউজঃ স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা নিতে অর্থমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। আমরণ অনশনরত শিক্ষক-কর্মচারীদের অনশন ভাঙাতে মঙ্গলবার সকাল ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে যান মন্ত্রী। এ সময় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোহরাব হোসাইনও তার সঙ্গে ছিলেন। বক্তব্যে এক পর্যায়ে অনশনরত শিক্ষকদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। কিন্তু অনশনে থাকা শিক্ষকরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এমপিওভুক্তির সুনির্দিষ্ট তারিখের দাবিতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিনয় ভূষণ রায়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনেক চেষ্টার পর অর্থমন্ত্রী (আবুল মাল আবদুল মুহিত) আমাদের এমপিওভুক্তির ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে এজন্য আগে নীতিমালা করতে হবে।
আন্দোলনে থাকা শিক্ষকরা এ সময় ‘কবে, কবে’ বলে চিৎকার করে এমপিওভুক্তির সুনির্দিষ্ট তারিখ জানতে চান। এ বছরের শুরু থেকেই এমপিওভুক্তির দাবি কার্যকরের দাবি জানান অনেকেই। হট্টগোলের এক পর্যায়ে নাহিদ বলেন, নীতিমালা করে এমপিওভুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য সময় লাগবে। তবে অর্থমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়া গেছে এটাই বড় অর্জন।
এক পর্যায়ে আন্দোলনরত শিক্ষকদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রেস ক্লাব এলাকা ত্যাগ করেন শিক্ষামন্ত্রী।
এরপর আন্দোলনরত শিক্ষকদের নেতা বিনয় ভূষণ রায় মাইকে বলেন, মন্ত্রী আমাদের সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস দিতে পারেননি। তাই তার বক্তব্য আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম। প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত আমরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাব।
রোববার থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আমরণ অনশন শুরু করেন শিক্ষকরা। অনশনে সোমবার রাত পর্যন্ত ১৪ শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গেছে। এর আগে একই দাবিতে গত ২৬ ডিসেম্বর থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা। শীতের রাতেও শিক্ষকরা ফুটপাতে অবস্থান করছেন।
বোররবার দুপুরে অনশনস্থলে গিয়ে দেখা যায়, অসুস্থ শিক্ষকদের জন্য দোয়া করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টরা যাতে শিক্ষকদের দাবির প্রতি সদয় হন সে জন্য দোয়া করেন তারা। এ সময় অনেক শিক্ষককে কাঁদতে দেখা যায়। কর্মসূচি আহ্বানকারী সংগঠন নন-এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যক্ষ গোলাম মাহমুদুন্নবী ডলার রোববার সন্ধ্যায় সমকালকে বলেন, টানা দু’দিনের অনশনে তাদের ১৪ শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর মধ্যে বর্তমানে ৬ জন ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। কয়েকজনকে অনশনস্থলেই স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ তাদের খোঁজ নেননি; যোগাযোগ করেননি।
শিক্ষক নেতারা বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তারা আশা প্রকাশ করেন, অনশনে মৃত্যুর খবর শোনার আগেই প্রধানমন্ত্রী এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেবেন।
সরকার স্বীকৃত সব মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার দাবিতেই শিক্ষকদের এ আন্দোলন। স্বীকৃতি পেলেও নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা সরকার থেকে কোনো আর্থিক সুবিধা পান না। সারাদেশে এমন নন-এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান আছে ৫ হাজার ২৪২টি। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা ৭৫ থেকে ৮০ হাজার। অন্যদিকে বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে প্রায় সাড়ে ২৬ হাজার। এগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী ৪ লাখের বেশি। সর্বশেষ ২০১০ সালে এক হাজার ৬২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৫৫:৪৮ ৬৫২ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #breaking news #World News