বঙ্গ-নিউজঃ কলকাতায় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসবের সমাপ্তি দিনে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কলকাতা, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৭। ছবি: ভাস্কর মুখার্জিবাংলাদেশের সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্য এখনো স্বাধীনতাবিরোধীদের ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রের ছুরি ও বুলেট এখনো তাড়া করছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে।
কাদের বলেন, ‘আমাদের সেই ষড়যন্ত্র সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে। পরাজিত করতে হবে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের। কলকাতায় মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসবের সমাপ্তি দিবসে যোগ দিয়ে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পাঁচ দিনব্যাপী বিজয় উৎসবের আজ মঙ্গলবার ছিল সমাপ্তি দিন। উৎসবে প্রধান অতিথির ভাষণে ওবায়দুল কাদের আরও বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমাদের দুই দেশের মধ্যে যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, তা আজও অটুট। আমরা এখনো সেই বন্ধুত্বের বন্ধনে আছি এবং থাকব। সন্ত্রাসবাদ, জঙ্গিবাদ আমাদের অভিন্ন শত্রু। এই অভিন্ন শত্রুকে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের ৬৮ বছরের ছিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। সমাধান হয়েছে আলোচনার মাধ্যমে। আমাদের তিস্তা নদীর পানিবণ্টন সমস্যারও অচিরেই সমাধান হবে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের উত্তরাঞ্চলে পানির সমস্যা রয়েছে। আমাদের ভারত সরকার আশ্বস্ত করেছে তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যা সমাধানের। আমরা চাই, তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনে ন্যায়সংগত সমাধান।’ মন্ত্রী এ ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইতিবাচক সমর্থনও প্রত্যাশা করেন।
বিজয় উৎসবে চিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখছেন ওবায়দুল কাদের ও পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। ছবি: প্রথম আলোকাদের বলেন, ‘মমতা দিদির সঙ্গে রয়েছে আমাদের সুমধুর সম্পর্ক। আমরা মনে করি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান হবে।’
গতকাল সোমবার রাতে দুদিনের সফরে ওবায়দুল কাদের কলকাতায় আসেন।
পাঁচ দিনব্যাপী আয়োজিত এই বিজয় উৎসবের শুক্রবার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। আজকের সমাপ্তি দিনে আরও বক্তব্য দেন পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান এবং নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কলকাতায় নিযুক্ত উপহাইকমিশনার তৌফিক হাসান। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট অভিনেত্রী শমী কায়সার ও রোকেয়া প্রাচী।
অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, বাংলাদেশই পৃথিবীর বুকে বাংলাভাষাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বাংলা ভাষার একটি দেশ প্রতিষ্ঠা করেছে। সাংবাদিক আবেদ খান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র এখনো তৎপর। তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে।’
কলকাতার বাংলাদেশ উপহাইকমিশন চত্বরে আয়োজন করা হয় এই বিজয় উৎসবের।
এবারেও এ উৎসব ঘিরে পাঁচ দিনব্যাপীই আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলোচনা সভা। ছিল নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসংগীত, লোকগীতি, বাউলগান, লালনগীতি, আধুনিক গান, নৃত্য, গীতিনাট্য, নাটকসহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক আলোকচিত্র, তথ্যচিত্র ও চলচ্চিত্র প্রদর্শনী।
এসব অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা শিল্পীরা। এই বিজয় উৎসবকে ঘিরে আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশের পণ্যের এক প্রদর্শনীরও।
বাংলাদেশ সময়: ৭:৫৭:২৩ ৬৩৯ বার পঠিত #bangaldesh news #bangla news #bangla newspaper #bd news #daily newspaper #world news.bongo-news.com