পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফর কূটনৈতিক ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ

Home Page » আজকের সকল পত্রিকা » পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশ সফর কূটনৈতিক ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ
রবিবার, ৩ ডিসেম্বর ২০১৭



ঢাকায় পৌঁছানোর পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পোপ ফ্রান্সিসকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান রাষ্ট্রপতি মো. আবুদল হামিদ। পরে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।

বঙ্গ-নিউজঃ   ছয় দিনের বাংলাদেশ-মিয়ানমার সফর শেষে শনিবার রোমের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়ে গেলেন পোপ ফ্রান্সিস। তার এই বাংলাদেশ-মিয়ানমার সফরকে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা হলেও রোহিঙ্গা ইস্যুর কারণে এটি কার্যত রাজনৈতিক-কূটনৈতিক সফরে পরিণত হয়েছে বলে মনে করছেন কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা।

এদিকে, মিয়ানমার সফরের সময়ে তিনি কূটনৈতিক বিবেচনায় রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করেননি কিন্তু বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে পৃথকভাবে দেখাও করেছেন। একইসঙ্গে তিনি রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করে বলেছেন, ‘ঈশ্বরের উপস্থিতির আরেক নাম রোহিঙ্গা।’

মিয়ানমারে জাতিগত সম্প্রীতির কথা যেমন উল্লেখ করেছেন, তেমনি ঢাকায় রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করে তাদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেছেন পোপ ফ্রান্সিস।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রে দায়িত্বপালনকারী বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির বঙ্গ-নিউজকে বলেন,‘পোপ একজন বিশ্ব ব্যক্তিত্ব। তিনি যেখানে যান, সেখানে তার সঙ্গে বিশ্ব মিডিয়াও সফর করে।’ এই কূটনীতিকের ভাষ্য, প্রথমে মিয়ানমার, পরে বাংলাদেশ সফরের সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় ছিল, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি কী বলেন।

উল্লেখ্য, মিয়ানমার কর্তৃপক্ষের অনুরোধে পোপ ফ্রান্সিস মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করেননি।

এই প্রসঙ্গে হুমায়ুন কবির বলেন, ‘তার যথেষ্ট নৈতিক কর্তৃত্ব আছে। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রভাবিত করার ক্ষমতা রাখেন।’ তার মতে, ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ করে পোপ বাংলাদেশের হাতকে শক্তিশালী করেছেন। এর ফলে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশেষ করে তাদের নাগরিকত্ব ও দুঃখ-দুর্দশার চিত্র পোপের মাধ্যমে সারা বিশ্ব দেখেছে বলেও মনে করেন তিনি।

হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমি বলছি না, এর ফলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, তবে একটি পরিবেশ তৈরি হবে।’

জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বঙ্গ-নিউজকে বলেন, ‘পোপ একটি দেশের রাষ্ট্রনায়কও বটে। সে হিসেবে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থাকবে, এটিই স্বাভাবিক।’ তার মতে, বর্তমান বিশ্বের রাষ্ট্রনায়করা চলমান সহিংসতা ও অন্যান্য বৈরি পরিবেশ মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে অক্ষমতা দেখাচ্ছেন। সেই জায়গায় পোপ তার অনন্য অবস্থান থেকে এই শূন্যস্থান পূরণ করার চেষ্টা করছেন।

হুমায়ুন কবির বলেন, ‘যেকোনও ধরনের দুর্যোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় দুর্বল ও সংখ্যালঘুরা। রোহিঙ্গাদের প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে পোপ একদিকে তাদের প্রতি বিশ্বের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন, অন্যদিকে তাদের সাহস যোগানোর চেষ্টা করেছেন।’ তিনি বলেন, ‘পোপের রাষ্ট্রনায়কসুলভ আচরণ ও নিপীড়িত মানুষের পক্ষে দাঁড়ানো—উভয় কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’ তার ভাষ্য, পোপ রোহিঙ্গাদের কথা বলে শুধু যে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তা নয়। একইসঙ্গে যেকোনও দেশের যেকোনও ধরনের দুর্বল ও সংখ্যালঘু মানুষের পক্ষেও কথা বলেছেন।

যুব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান

সফরের শেষ দিনে পোপ যুব সমাজকে পথভ্রষ্ট না হয়ে জীবনের লক্ষ্য ঠিক করে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার (২ ডিসেম্বর) পোপ নটরডেম কলেজে যুব সম্প্রদায়ের উদ্দেশে দেওয়া তার বক্তব্যে বলেন, ঈশ্বর আমাদের একটি উদ্দেশ্য নিয়ে পাঠিয়েছেন। এটি অনেকটা কম্পিউটার সফটওয়ারের মতো, যা সবসময়ে আপগ্রেড করতে হয়। তিনি বলেন, সবসময় চেষ্টা করো, আপডেট করার। ঈশ্বর যে চ্যালেঞ্জ দেন, তা গ্রহণ করো। এ সময় যুব সম্প্রদায়কে সবসময় ফোনে ব্যস্ত না থেকে বয়স্কদের সঙ্গে আলাপ করে জ্ঞান অর্জনেরও পরামর্শ দেন পোপ।

বাংলাদেশ সময়: ৭:৩৬:৪৩   ৪৯৫ বার পঠিত   #  #  #  #  #  #




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

আজকের সকল পত্রিকা’র আরও খবর


নেতাকর্মীদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন হাজী মোহাম্মদ হারিজ খান
সেরে উঠলেন ক্যানসার রোগীরা
আশুলিয়ায় খুশবু রেস্তোরাঁ উদ্বোধন
ধর্মপাশায় ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে শিক্ষকদের কর্মসূচী
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা ও কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি পণ্য সরবরাহ
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা ও কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে কৃষি পণ্য সরবরাহ
বিশ্বব্যাপী প্রবাসীদের প্রতি দায়িত্ব পালনে কূটনীতিকদের আন্তরিক হতে হবে: শেখ হাসিনা
শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় ইদুর নিধন
শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় ইদুর নিধন

আর্কাইভ