বঙ্গ-নিউজঃ রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য বৃটেন কূটনৈতিক এবং রাজনৈতিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী পেনি মরডান্ট। তিন দিনের বাংলাদেশ সফরে মিস মরডান্ট কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। বিবিসির সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেছেন, রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে থাকবে। রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর থেকে তিন মাস অতিবাহিত হলেও সংকটের দ্রুত সমাধানের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। মিস মরডান্ট বলেন, ‘মানুষ যদি তার বাড়িতে ফিরে স্বস্তি না পায় তাহলে তাদের সেখানে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আপনি আশা করতে পারেন না। তাদের প্রতি যা ঘটেছে সেটা যাতে আর না ঘটে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সুতরাং এ বিষয়ে আমাদের বাস্তবসম্মতভাবে চিন্তা করতে হবে।’ নজিরবিহীন রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সহায়তা দরকার। এ সংকট দীর্ঘায়িত হবে বলেই মনে হচ্ছে। সংকট শুরুর কিছুদিন পর থেকেই মিয়ানমার বিশেষ করে দেশটির নেত্রী অং সান সু চির ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মিস সু চির সাথে বৃটেনের সম্পর্ক অনেক পুরেনো। তিনি যখন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন তখন অন্য অনেকের মতো বৃটেনও তার পাশে ছিল। কিন্তু বর্তমান বাস্তবতায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য মিস সু চিকে বৃটেন কতটা প্রভাবিত করতে পারছে? আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী জানালেন, সার্বিকভাবে এ সংকট মোকাবিলার জন্য বৃটেন তার তরফ থেকে সব চেষ্টাই করছে। জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থায় রোহিঙ্গা ইস্যুটি তুলে ধরার জন্য বৃটেন অনেক কাজ করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের জন্য বৃটেনের তরফ থেকে রাজনৈতিক এবং কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। ‘আমি দায়িত্ব গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ সফরে এসেছি। এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে, এ সংকট আমাদের এজেন্ডা থেকে হারিয়ে যাবে না। আমরা বাংলাদেশকে সহায়তা করে যাব এবং কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রাখবো’, বলেন মিস মরডান্ট। গত আগস্ট মাস থেকে প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ এবং মিয়ানমারের মধ্যে একটি দলিল স্বাক্ষরিত হয়েছে। : বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন আগামী দুই মাসের মধ্যে সে প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিন্তু কবে নাগাদ শেষ হবে সেটির কোনো সময়সীমা নেই। যে সময় এ দলিল স্বাক্ষর হয়েছে তখন অন্তত এক হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে। : ব্রিটিশ মন্ত্রী মিস মরডান্ট মনে করেন, রোহিঙ্গারা যেখানে ফেরত যাবে সেখানে নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রয়োজন। : মিস মরডান্ট বলেন, ‘মানুষ যদি তার বাড়িতে ফিরে স্বস্তি না পায় তাহলে তাদের সেখানে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি আপনি আশা করতে পারেন না। তাদের প্রতি যা ঘটেছে সেটা যাতে আর না ঘটে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সুতরাং এ বিষয়ে আমাদের বাস্তবসম্মতভাবে চিন্তা করতে হবে।’ : নজিরবিহীন রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সহায়তা দরকার। এ সংকট দীর্ঘায়িত হবে বলেই মনে হচ্ছে। গত মাসে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের উদ্যোগে এক বৈঠকে প্রায় ৩৪০ মিলিয়ন ডলার আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। : রোহিঙ্গাদের ফেরত নেবার বিষয়ে সম্প্রতি একটি দলিল স্বাক্ষর করেছে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ কিন্তু সংকট মোকাবিলায় ভবিষ্যতে আরো সহায়তা লাগবে। বৃটেন এ বিষয়ে কোনো সহায়তা করতে পারে কিনা? এমন প্রশ্নে মিস মরডান্ট বলেন, তার সফরের সেটাই আসল কারণ। ক্যাম্পগুলোতে ব্যবস্থাপনা যাতে আরো ভালো করা যায় সেজন্য তারা আগ্রহী। : ‘আমরা কি করতে পারি সে বিষয়টিতে আমাদের পথ দেখাতে পারে বাংলাদেশ সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা। সংকট মোকাবিলার জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারের পাশে আছি। আন্তর্জতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে অর্থ জোগাড়ের জন্য আমরা নেতৃত্ব দিয়েছি। আমরা সে জায়গাটি ধরে রাখবো’ : রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশ যেভাবে আশ্রয় দিয়েছে সেটির প্রশংসা করে ব্রিটিশ মন্ত্রী বলেন, সংকট মোকাবিলার জন্য মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের কী ধরনের সহায়তা প্রয়োজন সেদিকে তাদের দৃষ্টি থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:৫৯:৩৯ ৪২৬ বার পঠিত #bangla news #bangla newspaper #bangladesh news #bd news #daily newspaper #World News