বঙ্গ-নিউজ ডটকমঃ প্রধান বিরোধী দল বিএনপি সমাবেশ করার জন্য আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত পুলিশের অনুমতি পায়নি। দলটি কাল বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে।গত ১৯ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর চট্টগ্রামের মিরসরাই গিয়ে জানান, ঢাকায় এক মাস সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। তাঁর ঘোষণা অনুযায়ী ওই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ১৮ জুন শেষ হবে। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিভিন্ন সময় বলেছিলেন, বিশৃঙ্খলা হবে না-এমন নিশ্চয়তা পেলে সভা-সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
গতকাল সোমবার এক বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপি বুধবার সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। সমাবেশের অনুমতি নিতে আজ দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন সংসদে বিরোধী দলের ভারপ্রাপ্ত চিফ হুইপ শহীদ উদ্দীন চৌধুরী ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্যসচিব আবদুস সালাম।
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ঢাকা মহানগর পুলিশ তাঁদের জানিয়েছে, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে রাস্তায় সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না। কোনো মিলনায়তনে সমাবেশ করার পরামর্শ দেওয়া হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। বিএনপি এ সময় নয়াপল্টন না হলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বা অন্য কোনো মাঠে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য বলেছে। মহানগর পুলিশ বলেছে, আজ বিকেলে এ বিষয়ে বিএনপিকে জানানো হবে।
গত ৪ মে মতিঝিলে এক সমাবেশ থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মানতে সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে (আলটিমেটাম) দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দাবি না মানলে লাগাতার অবস্থানের মতো কর্মসূচিতে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সরকার দাবি মানেনি। বিরোধী দলও কিছুদিন চুপচাপ ছিল।
এই আলটিমেটামের পর গত ১৩ মে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ডেকেছিল বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট। কিন্তু পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় তা হয়নি। সেদিন ১৩ মের পরিবর্তে ১৫ মে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু ওই দিনও সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে এর প্রতিবাদে হরতাল ডেকে সাত ঘণ্টার মাথায় তা আবার প্রত্যাহার করে নেয় তারা।
বিএনপির সূত্র জানায়, পুলিশ, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে এক ধরনের সমঝোতার ভিত্তিতে ১৩ মের সমাবেশ ১৫ মে নেওয়া হয়েছিল। বিএনপি ধরে নিয়েছিল, ১৫ মে তাদের সমাবেশ করতে দেওয়া হবে। কিন্তু তা হয়নি। এর কয়েক দিন পর ১৯ মে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর চট্টগ্রামের মিরসরাই গিয়ে জানান, ঢাকায় এক মাস সভা-সমাবেশ করতে দেওয়া হবে না।
হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ ও শাপলা চত্বরে অবস্থানের পর বিএনপি গত ১৩ মে সমাবেশ করতে গেলে পুলিশ অনুমতি দেয়নি। সে হিসাবে বিএনপি মনে করছে, সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে।
বিএনপি মনে করছে, এক মাসের মাথায় এবারও তাদের সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না। এর মাধ্যমে তারা জনগণকে বোঝাতে চায়, সরকার আসলেই ‘বাকশালি আচরণ’ করছে। এক মাস নয়, সরকার বিরোধী দলকে আর রাস্তাতেই নামতে দিতে চায় না। তাই হরতালের মতো কর্মসূচিতে যাওয়া ছাড়া বিএনপির কোনো উপায় থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:০৪:০২ ৪১৪ বার পঠিত