বঙ্গ-নিউজঃ দেশে চামড়াশিল্প বিকাশে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আরও দুটি চামড়া শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। শুধু ঢাকায় চামড়া শিল্পাঞ্চল করলে হবে না, একে সমগ্র দেশে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টার বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনের ‘লেদার প্রোডাক্ট শো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রদর্শনীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।
‘থিংক অ্যাহেড, থিংক বাংলাদেশ’ শিরোনামে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও লেদারগুডস অ্যান্ড ফুটওয়ার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলএফএমইএবি)। ১৫টি দেশের চামড়াশিল্প-সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী নেতারা প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, এ দেশে বিনিয়োগ ও রপ্তানিতে চামড়া প্রত্যক্ষ ভূমিকা রাখবে। এই খাতের উৎপাদনশীলতা ও গুণগত উৎকর্ষ বৃদ্ধিতে আরও সহায়ক হবে এ প্রদর্শনী। চলতি বছরের জন্য চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যকে সরকার ‘প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার ২০১৭’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে চামড়া খাত থেকে ১ দশমিক ২৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় হয়েছে। সম্প্রতি অধিকাংশ ট্যানারি হাজারিবাগ থেকে সাভারে নেওয়া হয়েছে। পরিবেশসম্মতভাবে সাভারে এই শিল্পনগরী গড়ে তোলা হচ্ছে। একে ঘিরে যেন আরও শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠতে পারে সে জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, শিল্প স্থানান্তরের প্রণোদনা হিসেবে সাভার ট্যানারি শিল্পাঞ্চল থেকে ফিনিশড চামড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাদুকা রপ্তানির ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। চামড়াশিল্প স্থাপনে প্রয়োজনীয় মেশিনারি আমদানিতে স্বল্প সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রপ্তানি নীতি ২০১৫ থেকে ২০১৮তে এই খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারের খাত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এসব উদ্যোগে পৃথিবীর খ্যাতনামা ব্র্যান্ড বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের সঙ্গে যৌথভাবে চামড়াজাত পণ্য উৎপাদনের কাজ শুরু করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চামড়া খাতে ১৫ শতাংশ নগদ সহায়তা আগামী ৫ বছর অব্যাহত রাখার বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এই সুযোগ পাবেন। তিনি দেশে জবাই করা পশুর চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও এ শিল্পের দিকে আরও নজর দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা যদি এসব কাজে একটু আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারি, তবে এই চামড়াকে অত্যন্ত মূল্যবান ও গুণগত মানসম্পন্ন করে প্রস্তুত করতে পারি।’
ক্রেতাদের বাংলাদেশের চামড়া খাতে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে ও চামড়া খাতে অধিক পরিমাণে সোর্সিং করতে এ শিল্পের সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ আইসিসিবির অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত থেকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন। এলএফএমইএবির সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম ও বিশিষ্ট উদ্যোক্তা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও এফবিসিসিআইয়ের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফজলে ফাহিমের রেকর্ডকৃত বক্তব্য প্রচার করা হয়।
গণভবনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বেসরকারি খাত উন্নয়নবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও প্রেস সচিব ইহসানুল করিম উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা অপেরা হাউসের নকশা দেখলেন প্রধানমন্ত্রী
ঢাকার হাতিরঝিলে একটি আধুনিক অপেরা হাউস নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঢাকা অপেরা হাউস কমপ্লেক্স নামের এ প্রকল্পের নকশা গতকাল দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে। অনুষ্ঠান শেষে ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের বলেন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় সব আধুনিক সুবিধাসহ এই অপেরা হাউস নির্মাণ করবে।
বাংলাদেশ সময়: ৮:১৩:৩১ ৫৭৩ বার পঠিত #bangaldesh news #bangla news #bangla newspaper #bd news #daily newspaper #world news.bongo-news.com