আনোয়ার ইউনুস বঙ্গ-নিউজঃ বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার একটি ক্ষুদ্র কিন্তু জনবহুল রাষ্ট্র । জনসংখ্যার অধিকাংশ বাঙালি হলেও অনেকগুলো ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী রয়েছে যাদের উপজাতি বলেও সচরাচর উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশের উপজাতি জনগোষ্ঠির সংখ্যা ৮৯৭৮২৮ প্রায় ; সমগ্র জনগোষ্ঠির এক শতাংশ মাত্র । বাংলাদেশের উপজাতি জনগোষ্ঠির সিংহভাগ পাবর্ত্য চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহ , সিলেট ও রাজশাহী অঞ্চলে বসবাস করে । বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ উপজাতিক গোষ্ঠী হল চাকমা।
বাংলাদেশের প্রধান নৃগোষ্ঠী হলো বাঙ্গালী । বাংলাদেশ ছাড়াও ভারতে অনেক বাঙ্গালী বসবাস করে।
বিবিএস ১৯৮৪ সালের রিপোর্টে ২৪টি নৃ তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী এবং মোট জনসংখ্যা ৮,৯৭,৮২৮ জন বলা হয়েছে । উপজাতিগুলো হলো সাঁওতাল , ওঁরাও , পাহাড়িয়া , মুন্ডা, রাজবংশী, কোঁচ, খাসিয়া, মনিপুরী, টিপরা, প্যাংখো, গারো, হাজং, মার্মা, চাকমা, তংচঙ্গা, চাক, সেন্দুজ, ম্রো, খিয়াং, বোম (বনজোগী), খামি, লুসাই (খুমি)। পক্ষান্তরে ১৯৯১ সালের রিপোর্টে ২৯টি নৃ তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী মোট ১২,০৫,৯৭৮ জন মানুষের অস্তিত্ব স্বীকার করা হয়েছে। নৃ তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীগুলো হলো বংশী, বোম, বুনা, চাক, চাকমা, কোঁচ, গারো, হাজং, হরিজন, খাসিয়া, খিয়াং, খুমি, লুসাই, মাহাতো, মারমা, মণিপুরি, মুন্ডা, মুরুং, ম্রো, পাহাড়ি, প্যাংখো, রাজবংশী, রাখাইন, সাঁওতাল, তংচঙ্গা, টিপরা, ত্রিপুরা, ওঁরাও, উরুয়া। লক্ষণীয় বিষয়, এতে প্রচুর তথ্যবিভ্রাট রয়েছে। যেমন টিপরা ও ত্রিপুরা, ম্রো ও মুরুং, ওঁরাও ও উরুয়া একই নৃ তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র হলেও রিপোর্টে এদের আলাদা নৃ তাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী বলা হয়েছে। বিভিন্ন রিপোর্টে প্রচলিত ইংরেজি বানানে ভিন্ন রীতির কারণে এমনটি হয়েছে বলে মনে হয়। বুনা, হরিজন নামে আলাদা কোনো নৃ তাত্ত্বিক ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী । কোঁচ জনগোষ্ঠীর বসবাসের মূল এলাকা উত্তরবঙ্গ হলেও এ বিভাগে কোঁচদের কথা উল্লেখ করা হয়নি।[১] সর্বশেষ আদমশুমারি ও গৃহগণনা বলছে, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৪৭টিতেই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীসংখ্যা কমেছে। অন্য ১৭ জেলায় বেড়েছে এক লাখ ৭৫ হাজার ৯৭২ জন। তবে বাস্তব অবস্থার সঙ্গে এই হিসাবের মিল নেই। ফলে আদমশুমারির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আদমশুমারি ও গৃহগণনা ২০১১ প্রতিবেদনে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ‘এথনিক পপুলেশন’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।[২]