বঙ্গ-নিউজঃ টেকনাফের নাফ নদে আটটি ভেলায় ভেসে এলো আরো সাড়ে ৫শ’ রোহিঙ্গা। শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে ২টার মধ্যে এসব রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেছে।
নাফ নদ হয়ে প্রথমে সাবরাং নয়াপাড়া সীমান্তে ভেলায় ভেসে আসে ২৬ জন রোহিঙ্গার একটি দল।
এর পর একই এলাকা দিয়ে দুইটি ভেলায় আরো ৭০ জন ও ৬২ জন রোহিঙ্গা প্রবেশ করে। আধাঘণ্টা পর সাবরাং ৩ নং সুইচ গেইট এলাকা দিয়ে তিনটি ভেলায় ৫৬ জন, ৪৮ জন ও ১২৩ জন রোহিঙ্গা প্রবেশ করে। পরপর সাবরাং কবির মেম্বারের প্রজেক্ট এলাকা দিয়ে দুইটি ভেলায় আসে ১২২ জন ও ৪২ জন রোহিঙ্গা। সব মিলিয়ে ৫৪৯ রোহিঙ্গা নারী শিশু ও পুরুষ ঢুকেছে আজ। এসব রোহিঙ্গাদের বিজিবি উদ্ধার করে হেফাজতে নিয়েছে। এদিকে কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে নির্দেশনা মোতাবেক রোহিঙ্গাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সাবরাং বিওপি বিজিবির কর্মকর্তা।
গত কয়েকদিন ধরে মিয়ানমার রাখাইন থেকে বিভিন্ন কৌশলে প্লাস্টিক জারিকেনের উপর বাঁশ ও কাঠ বসিয়ে ভেলা তৈরী করে রোহিঙ্গারা একের পর এক নাফ নদ পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে। এ সব ভেলায় ভেসে বাংলাদেশে ৭৩৫ জন রোহিঙ্গা ঢুকেছে বলে জানা গেছে।
শুক্রবার সকালের দিকে রাখাইনের ঢংখালী চর থেকে ভেলায় ভেসে বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা নাফ নদে জোয়ারে ভেসে দুপুরের দিকে সাবরাং নয়াপাড়া ঘাটে তিনটি ভেলায় ১৫৮ জন রোহিঙ্গা পৌঁছেন। এর আধা ঘণ্টার ব্যবধানে অপর তিন ভেলায় ২২৭ জন রোহিঙ্গা সাবরাং ৩ নং সুইচ গেইটে পৌঁছেন। পরে দুই ভেলায় ১৬৪ জন রোহিঙ্গা সাবরাং কবির মেম্বারের প্রজেক্ট এলাকায় পৌঁছেন।
ভেলায় চড়ে আসা বুচিডং হারাংখালী এলাকার রোহিঙ্গা আব্দুল শুক্কুর জানান, রাখাইনের মংডু ঢংখালী চর থেকে ১০টি ভেলায় করে এপারের উদ্দেশে রওয়ানা দেন। এসব ভেলা জোয়ারের মধ্যে কিছু এপারে আসে কিছু ওপারে থেকে যায়। আমাদের বসতবাড়ি ছিল বুসিডং এলাকায়। রাখাইনে সেনার চাপের মুখে অতিষ্ট হয়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে সবাই। তারা এক থেকে দেড় মাস আগেই বাড়িঘর ছেড়ে মংডু ধাওনখালী চরে এসে অবস্থান নেয়। এপারে আসতে নৌকা বা কোন বাহন না পেয়ে হতাশ হয়ে অপেক্ষায় থাকে। কিন্তু সেদেশে খাদ্য ও চিকিৎসা সংকটে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হচ্ছে তাদের। তাছাড়া নানা সংকটের মধ্যে পরিবারের লোকজনের জীবন বাঁচাতে এপারে পৌঁছাতে প্লাস্টিক জারিকেনে বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ভেলা তৈরী করে নাফ নদ পাড়ি দিয়ে এপারে চলে আসেন। এর আগে কোন উপায় না পেয়ে ৬১ রোহিঙ্গা যুবক জারিকেন বুকে নিয়ে নাফ নদ সাঁতরিয়ে বাংলাদেশে ঢোকে।
বুচিদং কোয়াইনচং এলাকার রোহিঙ্গা মোঃ ইলিয়াছ জানান, সেদেশে বাস করলে এনভিসি কার্ড নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। এই এনভিসি কার্ডে বাঙ্গালী হিসাবে উল্লেখ করা হচ্ছে। তবে স্বাভাবিক চলাচলে এবং চাষাবাদের জমিতে বাঁধা দিচ্ছে। রোহিঙ্গারা ৪০ হাজারের অধিক কিয়েট আয় করতে পারবে না। এ অবস্থায় রোহিঙ্গারা নিরুপায় হয়ে এদেশে পালিয়ে আসছে। পালিয়ে আসতে মংডু ধাওনখালী চরে ১ মাসের অধিক সময় অপেক্ষা করেছি। সেই চরে তাবু করে এতদিন অপেক্ষায় ছিলাম। এখনো ধাওয়ানখালী চরে হাজার হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে আসতে প্লাস্টিকের তাবুতে অপেক্ষা রয়েছেন। সেখানে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে রোহিঙ্গা শিশু ও নারীরা। তাছাড়া খাদ্যেরও ব্যাপক সংকট চলছে বলে জানায়।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪১:৫২ ৫০৪ বার পঠিত #24/7 latest headlines 24/7 Tech News Bangla Newspa #Bangla News 24 and rest of all continuously updated Ban #BD News 24