বঙ্গ-নিউজঃ দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও হারল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার দেয়া ৩৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিততে দরকার ছিল টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের বড় ইনিংস। তবে সেই শর্ত পূরণ করতে পারলেন না কেউই। ফলাফল যা হওয়ার তাই হলো। প্রথম ওয়ানডের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও লজ্জার হার বরণ করলো বাংলাদেশ। বুধবার পার্লের বোল্যান্ড পার্কে প্রোটিয়াদের কাছে ১০৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছে ম্যাশ বাহিনী। পাহাড় সমান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করে বাংলাদেশ। সতর্ক সূচনা করেন তামিম ও ইমরুল। তবে ভালো খেলতে খেলতে থেমে যান তামিম। ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের বলে এলবিডব্লিউর শিকার হয়ে ফেরেন ড্যাশিং ওপেনার (২৩)। তামিম ফিরলেও স্কোর বোর্ডে রান যোগ হচ্ছিল। ইমরুলকে যথার্থই সঙ্গ দিচ্ছিলেন লিটন দাস। কিন্তু হঠাৎই খেই হারিয়ে ফেলেন তিনি। আন্দিলে ফিকোয়াওর বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান (১৪)। স্কোর বোর্ডে ৬৯ রান তুলতেই তামিম-লিটনকে হারিয়ে প্রাথমিক বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন ইমরুল। তাকে যথার্থ সমর্থন দেন গেল ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মুশফিক। প্রথমে তারা ইনিংস মেরামত করেন। তাতে ১৮ ওভারে শতরান পেরিয়ে যায় টাইগাররা। পরে হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন। দুজনে এগুচ্ছিলেনও বেশ। তাদের ব্যাটে লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছিল বাংলাদেশ। তবে আশা জাগিয়ে ফেরেন ইমরুল। দলীয় ১৬২ রানে ইমরান তাহিরের শিকার হয়ে ফেরেন বাঁহাতি ওপেনার (৬৮)। ইমরুলের বিদায়ের পর সাকিবকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছিলেন দেশের কোটি ক্রিকেটপ্রেমী। তবে সেই স্বপ্নে বিন্দুমাত্র জ্বালানি যোগাতে পারেননি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার (৫)। দলীয় স্কোর বোর্ডে আর ৯ রান যোগ হতেই তাহিরের শিকার হয়ে ফেরেন তিনি। এরই সঙ্গে খাদে পড়ে সফরকারীরা। কিছুক্ষণ পরই প্রিটোরিয়াসের শিকার হয়ে ফেরেন মুশফিক (৬০)। এতে পুরোপুরি কক্ষপথচ্যুত হয় বাংলাদেশ। মিস্টার ডিপেন্ডেবল ফিরলে যাওয়া-আসার মধ্যেই থাকেন বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। দলীয় ২১৯ রানে ঘাতক তাহিরের শিকার হয়ে ফেরেন সাব্বির (১৭)। দলীয় ২৩৪ রানে ফিকোয়াওর শিকার হন নাসির (৩)। একই রানে ফেরেন মাশরাফি (০)। এতে টাইগারদের জন্য হারটা হয়ে দাঁড়ায় সময়ের ব্যাপার। শেষ পর্যন্ত ২৪৯ রান তুলতেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রোটিয়াদের হয়ে ৪ উইকেটে নিয়ে বাংলাদেশকে গুঁড়িয়ে দেন ফিকোয়াও। ৩টি তাহির ও ২টি উইকেট নিয়ে তাতে সামিল হন প্রিটোরিয়াস। এর আগে টস জিতে প্রথমে বোলিং নেয় বাংলাদেশ। আগের ক’দিনের বৃষ্টিতে শুরুতে উইকেট কিছুটা আর্দ্র ও মন্থর থাকায় সতর্ক সূচনা করেন হাশিম আমলা ও কুইন্টন ডি কক। প্রথমে দেখেশুনে খেলেন দুই প্রোটিয়া উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ধীরে ধীরে রূদ্রমূর্তি ধারণ করতে থাকেন তারা। চোখ রাঙাতে থাকেন টাইগার বোলারদের। তবে তাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান সাকিব আল হাসান। দলীয় ৯০ রানে ডি কককে (৪৬) ফিরিয়ে সেই জুটি ভাঙেন তিনি। প্রথম উইকেট পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হলেও দ্বিতীয়টি আসে দ্রুত। একই ওভারে ডু প্লেসিসকে (০) ক্লিন বোল্ড করে ফেরান বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। জোড়া আঘাতের পর একটু থমকে যাওয়ার কথা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। তবে ঘটে ঠিক উল্টোটা। ক্রিজে এসেই তাণ্ডব চালান এবি ডি ভিলিয়ার্স। প্রায় চার মাস পর নামলেও তার ব্যাটিং দেখে একবারও মনে হয়নি, এত দিন পর ২২ গজের ক্রিজে নামেন তিনি। অপর প্রান্তে ঠাণ্ডা মাথায় খেলে যান আমলা। ভিলিয়ার্সের সাহচর্যে ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যান তিনি। তবে তাতে বাধ সাধেন রুবেল। তার বল খোঁচা মারতে গিয়ে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন এই ডানহাতি ওপেনার (৮৫)। আমলা ফিরলেও ভিলিয়ার্স কম্পন থামেনি। একপ্রান্তে থেকে টাইগার বোলারদের ওপর রীতিমতো স্টিম রোলার চালান তিনি। ৩৬০ ডিগ্রি খ্যাত ব্যাটসম্যানের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয় টাইগার বোলিং আক্রমণ। দলীয় ৩৪৩ রানে রুবেলের শিকার হলে থামেন এই মারকুটে ব্যাটসম্যান (১৭৬)। এটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। ভিলিয়ার্সের বিদায়ের পর স্কোর বোর্ডে খুব একটা রান যোগ করতে পারেনি প্রোটিয়ারা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভার খেলে ৬ উইকেটে ৩৫৩ রান করে তারা। এদিন বাংলাদেশের সেরা বোলার রুবেল। তিনি ঝুলিতে ভরেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। ২টি উইকেট নেন সাকিব।
বাংলাদেশ সময়: ৯:২২:১৩ ৬২২ বার পঠিত