বঙ্গ-নিউজ: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঠিক পরিকল্পনার অভাবে বিপাকে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভর্তি পরীক্ষার আগে যে ধরনের পরীক্ষা কেন্দ্রের প্রস্তুতির প্রয়োজন তার ঘাটতি অনেকাংশে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন।
রবিবার ‘এ’ ইউনিটের (গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদ) প্রথম দিনের ভর্তি পরীক্ষায় প্রায় নব্বই ভাগ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (শিক্ষা) ও কেন্দ্রীয় ভর্তি পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মো. আবু হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেন। এ দিকে সোমবার (৯ অক্টোবর) সকাল থেকে দ্বিতীয় দিনের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
রবিবার সকাল ৯ টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১টি অনুষদ ভবনের বিভিন্ন কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবার ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষায় ৪৩৫টি আসনের বিপরীতে ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা মোট ৬৬ হাজার ৩৪১ জন। প্রথম দিনে ৩৬ হাজার ৫৮০ জনের পরীক্ষা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় বাকি ২৯ হাজার ৭৬১ জনের পরীক্ষা আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কিন্তু ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের সমস্যার সম্মুক্ষীণ হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। অধিকাংশ শিক্ষার্থীর অভিযোগ তারা সঠিক সময়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারছেন না। এছাড়া পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজে পেতে তাদের অনেক সময় নষ্ট হচ্ছে। এ জন্য তারা পরীক্ষা কেন্দ্রের নিদিষ্ট দিকনির্দেশনা না থাকাকে দায়ী করেছেন।
রাজধানী ঢাকার ধামরাই থেকে পরীক্ষা দিতে এসেছেন মোতালেব হোসেন। তার পরীক্ষা দ্বিতীয় শিফটে ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার এক ঘন্টা আগে ক্যাম্পাসে এসে পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজছেন। কিন্তুু নিদিষ্ট কোন দিকনির্দেশনা না থাকায় পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজে পেতে অনেক সময় লেগেছে বলে জানান তিনি।
এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মাহফুজ হোসেন নামের একজন অভিভাবক বলেন, অনেক কষ্টে মিরপুর থেকে সকালে মেয়ে নিয়ে এসেছি পরীক্ষা দিতে। কিন্তু এখানে এসে পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজে পেতে অনেক ভোগান্তির শিকার হয়েছি। যদি প্রশাসন থেকে পরীক্ষা কেন্দ্রের নিদিষ্ট করে দিকনির্দেশনা দেওয়া থাকতো তাহলে এরকম ভোগিন্ততে পড়তে হতো না। শুধুমাত্র পরীক্ষা কেন্দ্র খুঁজ পাওয়াই ভোগান্তির শেষ নয় বরং অনেক শিক্ষার্থীর অভিযোগ ভিন্ন। তারা জানালেন পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে পরীক্ষার কক্ষ খুঁজে পেতে ভোগিন্ততে পড়তে হয়েছে। এক কক্ষের নম্বরের সাথে অন্য কক্ষের নম্বরের মিল নেই। এছাড়াও পরীক্ষা কেন্দ্রে টয়লেট, ওয়াস রুমের ব্যবস্থা থাকলে অধিকাংশ টয়লেটে তালা ঝুলানো । ফলে টয়লেট, ওয়াসরুম খুঁজতে সময় নষ্ট হচ্ছে অনেক।
এ দিকে সুজা হক নামের এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত শিক্ষকরা সময় নষ্ট করছেন। পরীক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পরিদর্শন করতে নিদিষ্ট সময় ৫ মিনিট দেওয়া থাকলেও। অনেক কক্ষে শিক্ষকরা ৫ মিনিটের বেশি সময় ব্যয় করছেন। এতে করে উত্তরপত্র দাগানোর জন্য সময় পাচ্ছি কম। ফলে সময়ের অভাবে প্রশ্ন কমন থাকলেও দাগাতে পারছি না।
ভর্তি পরীক্ষা দিতে আসা লক্ষণ নামের আর এক শিক্ষার্থী বলেন, পরীক্ষা শুরু এবং শেষের ৫ বা ১০ মিনিট আগে দায়িত্বরত শিক্ষকরা এলার্ম দিলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভাল হয়।
শিক্ষকরা এলার্ম দিচ্ছেন কিন্তু তা উত্তরপত্র জমাদানের ১ মিনিট পূর্বে। এতে করে তড়িঘড়ি করে শেষ সময়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে ভুল দাগিয়ে এসেছি। নিদিষ্ট সময়ের ৫বা ১০ মিনিট পূর্বে এলার্ম দিলে শিক্ষার্থীদের জন্য ভাল হয়।
এ সব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আবুল হোসেন বলেন, ভর্তি পরীক্ষা চলাকালীন কিছু সমস্যা তো হবে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতভাগ চেষ্টা করতেছি সব সমস্যার সমাধান করতে। আশা করি পরবর্তী শিফটের পরীক্ষাগুলোতে এ ধরনের সমস্যা হবে না। আজ সোমবার ৯ অক্টোবর (সোমবার) প্রথম চারটি শিফটে ‘এ’ ইউনিটের দ্বিতীয় দিনের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একই দিনে ৫ম শিফটে ‘আই’ ইউনিটের (বঙ্গবন্ধু তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউট) ভর্তি পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:৩৯:১৭ ৪৩১ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news