শরিফুল লালমনিরহাট প্রতিনিধি, বঙ্গ-নিউজঃ সাম্প্রতিক বন্যায় লালমনিরহাটের পাঁচটি উপজেলায় ৬৪ হাজার ৬৪৫ জন রোপা আমন চাষি ও ১ হাজার ৭০ জন শাকসবজি চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের ৮ হাজার ৭৯২ হেক্টর রোপা আমন ক্ষেত ও ১০৭ হেক্টর শাকসবজির ক্ষেত সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। এসব জমির উৎপাদিত ফসলের ক্ষয়ক্ষতির মূল্য টাকার অঙ্কে প্রায় ৮৮ কোটি ৩০ লাখ ৮৭ হাজার টাকা বলে দাবি করেছে স্থানীয় কৃষি অফিস।
লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের সাকোয়া এলাকার কৃষক শাহ আলম বলেন, ‘বন্যায় আমার ২ বিঘা জমির আমন ক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। কোথাও আমন চারা পাওয়া যাচ্ছে না। রংপুরের পীরগাছা থেকে ১ বিঘার জন্য ১৪শ টাকা দিয়ে কিছু রোপা আমন চারা কিনেছি। আর খুঁজছি কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক (ডিডি) বিধু ভূষণ রায় বলেন, ‘বন্যায় জেলার ৫টি উপজেলার ৩১ হাজার ১৩৫ হেক্টর রোপা আমন ও ২৬৫ হেক্টর জমির শাকসবজি ক্ষেত জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ৬৪ হাজার ৬৪৫টি রোপা আমন চাষি পরিবার ও ১ হাজার ৭০টি শাকসবজি চাষি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরমধ্যে ৮ হাজার ৭৯২ হেক্টর রোপা আমন ও ১০৭ হেক্টর জমিতে শাকসবজি ক্ষেত সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে প্রায় ৮৮ কোটি ৩০ লাখ ৮৭ হাজারর টাকা কৃষকের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।’
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ৮২ হাজার ২৫৯ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৮৪ হাজার ২৯৫ হেক্টর। ৬৮০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে অর্জিত হয়েছে ৭১০ হেক্টর। প্রতি হেক্টর রোপা আমন ক্ষেত থেকে ২ দশমিক ৮২ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ও প্রতি হেক্টর শাকসবজির ক্ষেত থেকে ১৫ মেট্রিক টন শাকসবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। কিন্তু গত ১২ আগস্ট থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত অতিবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যায় ২৬৫ হেক্টর শাকসবজি ও ৩১ হাজার ১৩৫ হেক্টর রোপা আমন ফসলি ক্ষেত জলমগ্ন হয়ে পড়ে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৭৯২ হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত ও ১০৭ হেক্টর জমির শাকসবজি ক্ষেত সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া ২৬ হাজার ৯৩৩ হেক্টর রোপা আমন ও ২২০ হেক্টর শাকসবজি ক্ষেত আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী এতে ক্ষতিগ্রস্ত ৮ হাজার ৭৯২ হেক্টর জমির রোপা আমন ক্ষেত থেকে ২৪ হাজার ৭৯৩ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের কথা। প্রতি মেট্রিক টন চালের মূল্য ৩৪ হাজার টাকা হলে ২৪ হাজার ৭৯৩ মেট্রিক টন চালের মূল্য হওয়ার কথা ৮৪ কোটি ২৯ লাখ ৬২ হাজার টাকা। এছাড়া প্রতি হেক্টর শাকসবজি ক্ষেতে ১৫ মেট্রিক টন শাকসবজি উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়। এতে ১০৭ হেক্টর জমিতে ১৬০৫ মেট্রিক টন শাকসবজি উৎপাদনের কথা। প্রতি মেট্রিক টন শাকসবজির মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলে ১ হাজার ৬০৫ মেট্রিক টন শাকসবজির মূল্য দাঁড়ায় ৪ কোটি ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা। এতে রোপা আমন ও শাকসবজিতে লালমনিরহাটে মোট ৮৮ কোটি ৩০ লাখ ৮৭ হাজার টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
সুত্র-দেশ বিদেশ
বাংলাদেশ সময়: ১২:৫১:২৫ ৬৩৯ বার পঠিত #bangla news #bangla newspaper #bangladesh news #bd news #daily newspaper #World News