বঙ্গ-নিউজ: আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ, নিরপেক্ষ করতে তিনটি শর্ত থাকতে হবে বলে মনে করছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। শনিবার (১৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এ তিনটি শর্তের কথা বলেন।তিনটি শর্তের মধ্যে প্রথমটি হচ্ছে নির্বাচনের সময় একটি নিরপেক্ষ সহায়ক সরকার থাকতে হবে। যাদের কোন স্বার্থ থাকবে না। যাদের অধীনে সব দল সমান সুযোগ পাবে।
দ্বিতীয়ত এই সহায়ক সরকারকে সহায়তা দেবার জন্য একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন থাকতে হবে।
তৃতীয়ত, ভোট দেওয়ার নিশ্চয়তা দিতে হবে। এ জন্য সেনাবাহিনীকে প্রতিটি ভোট কেন্দ্র নিরাপত্তার দায়িত্ব দিতে হবে। যেন সবাই ভোট দিতে পারে।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই সরকার গণতন্ত্র চায় না, যদি গণতন্ত্র চাইতো তাহলে আমাদেরও সমান ভাবে সমাবেশ করতে দিতো। আজকে আমরা ঘরোয়া মিটিংও করতে পারিনা।
তিনি বলেন, এই মুহূর্ত থেকে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। আমরাও সভা করতে চাই, ধানের শীষে ভোট চাওয়ার অধিকার চাই। একই সঙ্গে আমাদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহার করতে হবে বলেও জানান তিনি।
নির্বাচন কমিশন সংলাপের নামে আই ওয়াশ করছে বলে মন্তব্য করে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বারবার বলছি এই নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ নয়। সিইসির রাজনৈতিক দলীয় পরিচয় রয়েছে। আওয়ামী লীগের দ্বারা নির্ধারিত কমিশন দিয়ে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকলে কখনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। কমিশন নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে না।
কমিশন যে রোডম্যাপ দিয়েছে তার কোন ভেলু নেই বলে মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, যেখানে রোড নেই সেখান ম্যাপ দিয়ে কি হবে? নির্বাচনের সময় দায়িত্বে থাকবে সরকারি কর্মকর্তা। তবে কিভাবে কমিশন সুষ্ঠু নির্বাচন করবে?
রাজনৈতিক দলগুলোকে সমঝোতায় আনার জন্য আমাদের কোন ভূমিকা নেই নির্বাচন কমিশনের দেয়া এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, নির্বাচনে সকল দলকে একত্রিত করা কমিশনের দায়িত্ব। তিনি এটা করতে ব্যর্থ হয়েছে।
সরকারের সমালোচনা করে মওদুদ আহমদ বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায়, তারা কোন বিরোধী দল চান না। সত্যিকার অর্থে দেশে কোন গণতন্ত্র ফিরে আসুক তারা তা চান না। কাজেই যে লেভেল প্লেইং ফিল্ড এর কথা বলা হচ্ছে তা কখনো তারা মানবে না। দেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ বিরাজ করলে আজকে দেশ এতো অন্যায়, অপরাধ থাকতো না। নৈরাজ্যজনক অবস্থা তৈরি হতো না।
এসময় তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ৩ জন নারী ধর্ষিত হচ্ছে। প্রতিদিন ১২ থেকে ১৫ জন খুন হচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মুখে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলে। ৯ মাসে যত মন্দির ভাংচুর করা হয়েছে এর আগে কখনো এমন ঘটেনি।
লেবেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা শীর্ষক আলোচনা সভাটি আয়োজন করে বাংলাদেশ ডেমক্রেটিক কাউন্সিল (বিডিসি)। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এম এ হালিম। এসময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা সুকুমার বড়ুয়া প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৯:১৬:০৬ ৪২৯ বার পঠিত