বঙ্গ-নিউজঃ বিড়ি ব্যবসা থেকে ফুলেফেঁপে দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় শিল্পগোষ্ঠীতে উন্নীত হওয়া আবুল খায়ের গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান শাহ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের বিরুদ্ধে ৯০ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। উপকরণ কেনার তথ্য গোপন, অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান থেকে কাঁচামাল ক্রয়সহ নানা কৌশলে এ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানিয়েছে, এনবিআরের মূসক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর সম্প্রতি শাহ সিমেন্টের ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এই ফাঁকি উদঘাটন করেছে। মাত্র তিন বছরে এ বিপুল পরিমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কম্পানিটি এমন কৌশলে বছরের পর বছর ধরে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তিন বছর আগে শাহ সিমেন্টের রাজস্ব ফাঁকির আরও একটি বড় ঘটনা উদঘাটন করেছিল মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) বিভাগের বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)। ২০১৪ সালে এলটিইউ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ৭৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকার রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ আনে।
‘জন্ম, সৃষ্টির লক্ষ্যে’ স্লোগান, ১০০ মাসের কোয়ালিটি টেস্ট আর ৪০% বেশি শক্তি এমন মনভোলানো প্রচারণার আড়ালে কম্পানিটি বছরের পর বছর ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে।
উৎপাদনক্ষমতার দিক থেকে দেশের সবচেয়ে বড় কম্পানি শাহ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানা মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরের চরমিরেশ্বরে। প্রতিষ্ঠানটি বৃহৎ করদাতা ইউনিট, মূল্য সংযোজন কর, ঢাকায় ভ্যাট নিবন্ধিত।
মূসক নিবন্ধন নম্বর ১৯২৯১০০৫০৭৩।এনবিআর সূত্র জানায়, ২০১২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত কম্পানির হিসাব নিরীক্ষা করা হয়। এর আগে ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির হিসাব নিরীক্ষা করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, আবু সাঈদ চৌধুরী শাহ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। প্রতি ব্যাগ ৫০ কেজি ওজনের শাহ ব্র্যান্ডের সিমেন্ট স্থানীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে বাজারজাত করে প্রতিষ্ঠানটি।
নিরীক্ষা মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি ১৩৩ কোটি ৯ লাখ ২৭ হাজার ২০ টাকার মূসক জমা দিয়েছে। ৩ হাজার ২৫৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকার উপকরণ বিদেশ থেকে আমদানি ও ৫২ কোটি ৬ লাখ টাকা ৮৯ পয়সার উপকরণ স্থানীয়ভাবে ক্রয় করেছে। এতে ১১ কোটি ৩ লাখ টাকার অব্যাহতি পেয়েছে। নিরীক্ষা মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি ৫৫৮ কোটি ১৪ লাখ টাকার রেয়াত গ্রহণ করে। নিরীক্ষা মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি ৪ হাজার ২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার সিমেন্ট উৎপাদন করেছে।
এনবিআর সূত্র জানায়, সিমেন্ট উৎপাদন ও প্যাকেজিং এর জন্য ক্লিংকার, জিপসাম, ফ্লাই অ্যাশ, লাইমস্টোন, স্লাগ, পিপি ইয়ার্ন, কালার, ক্যালসিয়াম, প্রিন্টিং কালি, থিনার, লেমিনেশন ও এলডিপিউ প্রভৃতি উপকরণ ব্যবহৃত হয়।
শাহ সিমেন্টে লিমিটেড মূসক গোয়েন্দার কাছে নিরীক্ষা যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তাতে প্রদর্শিত ক্রয় তথ্যের সাথে ক্রয় রেজিস্টারে (মূসক-১৬) এ প্রদর্শিত মূল্যের বিপুল পার্থক্য পাওয়া যায়। ২০১২, ২০১৩ ও ২০১৪ সালের নিরীক্ষিত বার্ষিক আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটি ৩ হাজার ৫৩২ কোটি ৫৫ লাখ টাকার উপকরণ কিনেছে।
কিন্তু মূসক রেজিস্ট্রারে (মূসক-১৬) দেখানো হয়েছে, ৩ হাজার ৩১৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকার উপকরণ কেনার তথ্য। প্রতিষ্ঠানটি ২১৬ কোটি ১১ লাখ টাকার উপকরণ কেনার তথ্য আড়াল করেছে। প্রদর্শিত উপকরণের অনুমোদিত মূল্য ঘোষণা অনুযায়ী নির্ধারিত সংযোজন ধরে মূসক আরোপযোগ্য মূল্য হয় ২৭০ কোটি ১৮ লাখ টাকা।
শাহ সিমেন্টের প্রতিটি ব্যাগে ৫০ কেজি সিমেন্ট হিসেবে ধরে এ হিসেব করা হয়েছে। এর ওপর ভ্যাট বা মূসক হয় ৪০ কোটি ৫২ লাখ টাকা। যা প্রতিষ্ঠানটি তিন বছরে ফাঁকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭ এর উপধারা ৩ অনুযায়ী ফাঁকি দেওয়া মূসকের ওপর মাসিক ২% হারে সুদ হয় ৩৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। সুদসহ উপকরণে শাহ সিমেন্ট ৭৮ কোটি ৯ লাখ টাকার মূসক ফাঁকি দিয়েছে।
তবে প্রতিষ্ঠানটি বছরের পর বছর সঠিক ক্রয় তথ্য গোপন করে সিমেন্ট তৈরি করে গোপনে বিক্রির মাধ্যমে আরও বেশি ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিষ্ঠানটির মূসক-১৬ রেজিস্ট্রার থেকে দেখা যায়, শাহ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নিরীক্ষা মেয়াদে অধিকাংশ উপকরণ আমদানি ও মূসক-১১ চালানের মাধ্যমে ক্রয় করেছে।
তবে ২০১২ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিন বছর প্রতিষ্ঠানটি নিয়মবহির্ভূতভাবে ভ্যাট নিবন্ধনহীন প্রতিষ্ঠান থেকে ১১ কোটি ৩ লাখ টাকার উপকরণ লাইমস্টোন ও ক্যালসিয়াম কিনেছে।
মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর বিধি ১৮ (ক) অনুযায়ী ভ্যাট নিবন্ধনহীন প্রতিষ্ঠান থেকে উপকরণ ক্রয় করলে তার ওপর উৎসে মূসক প্রযোজ্য।
নিবন্ধনহীন প্রতিষ্ঠান থেকে উপকরণ ক্রয় করায় এর ওপর যোগানদার সেবা হিসেবে ৪% মূসক প্রযোজ্য। সে হারে ১১ কোটি ৩ লাখ ১০ হাজার টাকার ওপর ৪% হারে মূসক ৪৪ লাখ ১২ হাজার ৪০০ টাকা।
এর ওপর মাসিক ২% হারে সুদ ৩৪ লাখ ৮২ হাজার ২৫৬ টাকা। সুদসহ মোট ফাঁকিকৃত উৎসে মূসক ৭৮ লাখ ৯৪ হাজার ৬৫৬ টাকা। যা প্রতিষ্ঠানটি তিন বছরে ফাঁকি দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র আরও জানায়, প্রতিষ্ঠানটি ৩ বছরে বিধিবহির্ভূতভাবে পণ্য নমুনা দেখিয়ে প্রায় ৪ কোটি টাকার মূসক ফাঁকি দিয়েছে বলে রিপোর্টে উঠে এসেছে।
সিএ রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি ৩ বছরে মার্কেটে ১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার পণ্য নমুনা সরবরাহ করেছে। যা প্রতিষ্ঠানটি তার মূসক রেজিস্ট্রার-১৭তে উল্লেখ করেনি।
পণ্য নমুনা ১৪ কোটি ৪৯ লাখ টাকার ওপর অপরিশোধিত মূসকের পরিমাণ ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর ওপর ২% হারে সুদ ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
পণ্য নমুনায় সুদসহ অপরিশোধিত মূসকের পরিমাণ ৪ কোটি টাকা। যা প্রতিষ্ঠানটি ফাঁকি দিয়েছে বলে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সূত্র জানায়, শাহ সিমেন্ট লিমিটেড বিধিবহির্ভূতভাবে মোটা অংকের রেয়াত গ্রহণ করেছে বলেও নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
প্রতিষ্ঠানটির রেয়াতের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০১২ সালের বিভিন্ন সময়ে দাখিলকৃত মূল্যভিত্তি ঘোষণাপত্র এর পরবর্তী সময়ে উপকরণ মূল্য বৃদ্ধিজনিত কারণে নতুনভাবে মূল্য ঘোষণা দাখিল না করে ক্রয়কৃত উপকরণ ক্রয়মূল্যের বিপরীতে প্রাপ্যতার তুলনায় ৫% এর অধিক অতিরিক্ত রেয়াত গ্রহণ করেছে।
সে হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত ৬৭ লাখ ৬২ হাজার ১৬৭ টাকা ৯১ পয়সা রেয়াত নিয়েছে। যা মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা-৯(১)(চ)(ছছ) মোতাবেক বাতিলযোগ্য।
সূত্র জানায়, এনবিআরের এসআরও (১৭৫-আইন২০১১/৫৯৮-মূসক, ১৮২-আইন/২০১২/৬৪০-মূসক, ১৬৮-আইন/২০১৩/৬৭২-মূসক, ১০৮-আইন/২০১৪/৭০৩-মূসক) অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির নির্ধারিত হারে উৎসে মূসক কর্তনের বিধান রয়েছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সঠিকভাবে উৎসে মূসক পরিশোধ করেনি।
নিরীক্ষা প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটির ৩ বছরে কর্তনযোগ্য উৎসে মূসকের পরিমাণ ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
প্রতিষ্ঠানের দাখিলপত্র (মূসক-১৯) অনুযায়ী, ২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬২ হাজার ৫১০ টাকার উৎসে মূসক পরিশোধ করেছে।
নিরীক্ষা মেয়াদে শাহ সিমেন্ট লিমিটেড বাকি ৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা উৎসে মূসক পরিশোধ না করে ফাঁকি দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
অপরিশোধিত এ মূসকের ওপর ২% হারে সুদ হয় ২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। সুদসহ উৎসে মূসকের পরিমাণ (৩,২৭,৬৮,০৩৯.৫২+ ২,৭৫,৯০,৭৪৭.৮২) বা ৬ কোটি ৩ লাখ টাকা। যা প্রতিষ্ঠানটি ফাঁকি দিয়েছে বলে নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
শাহ সিমেন্ট লিমিটেড ২০১৫ ও ২০১৬ সালের সিএ ফার্মের বার্ষিক রিপোর্ট জমা দেয়নি। রিপোর্ট প্রস্তুত না হওয়ায় তা দাখিল করা হয়নি বলে মূসক গোয়েন্দাকে জানানো হয়েছে।
সূত্র অনুযায়ী, শাহ সিমেন্ট অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান হতে উপকরণ ক্রয়, ক্রয় পুস্তকে কম উপকরণ দেখানো, বিধিবহির্ভূত নমুনা সরবরাহ, উপকরণ মূল্য বৃদ্ধি ৫% হওয়া সত্ত্বেও বিধিবহির্ভূতভাবে রেয়াত গ্রহণ ও উৎসে মূসক জমা না দেওয়ার মাধ্যমে মোট ৪৭ কোটি ১১ লাখ টাকার মূসক ফাঁকি দিয়েছে। ফাঁকিকৃত মূসকে সুদের পরিমাণ ৪২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। তিন বছরে সুদসহ ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ ৮৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
শাহ সিমেন্টে ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ভ্যাট ফাঁকি রোধে নিরীক্ষা মেয়াদ প্রতিষ্ঠানটির পরিশোধকৃত ১৩৩ কোটি ৯ লাখ টাকার সিটিআর যাচাই করার জন্য এলটিইউকে অনুরোধ জানিয়েছে মূসক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
এ ছাড়া মূসক ফাঁকিরোধে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সেবা গ্রহণের বিপরীতে প্রযোজ্য হারে উৎসে মূসক কর্তনের ট্রেজারি চালান নিয়মিত সার্কেল অফিসে দাখিল তদারকি, নিরীক্ষা মেয়াদে প্রতিষ্ঠানটি যে ৪ লাখ ৮০ হাজার ৭২০ মার্কিন ডলারের সিমেন্ট রপ্তানি করেছে তার পিআরসিসমূহ এলটিইউতে দাখিল ও প্রতিষ্ঠানটি একই কায়দায় ভবিষ্যতে যাতে মূসক ফাঁকি দিতে না পারে সে জন্য পদক্ষেপ নিতেও প্রতিবেদনে মতামত ও সুপারিশ করা হয়।
সূত্র আরও জানায়, ২০১৪ সালে এলটিইউ (ভ্যাট) শাহ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ৭৮ কোটি ৮৫ লাখ ৪৬ হাজার টাকার মূসক ফাঁকি উদঘাটন করে। পরে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা করে।
প্রতিষ্ঠানটি এনবিআর অনুমোদিত মূল্যে সিমেন্ট সরবরাহ না করে তাদের ঘোষিত মূল্যে বিক্রি করে। আবার ঘোষিত মূল্যের চেয়ে উপকরণ মূল্য বেশি দেখিয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে বিপুল অংকের অবৈধ ভ্যাট রেয়াত নিয়ে তা আত্মসাৎ করে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শাহ সিমেন্ট ইন্ডাস্ট্রিজের ম্যানেজার (ভ্যাট) জামাল উদ্দিন মজুমদার গণমাধ্যমকে বলেন, রিপোর্ট এখনো ফাইনাল হয়নি। তবে আমরা একটা চিঠি পেয়েছি।
ভ্যাট ফাঁকি বিষয়ে তিনি বলেন, ভ্যাট ফাঁকির যে অভিযোগ করা হয়েছে ভ্যাট আইনে তা কতটুকু টিকবে না-টিকবে তা এখনো বলা যাচ্ছে না। যাচাই শেষে এ প্রতিবেদন ফাইনাল হবে।
রিপোর্ট এখনো ফাইনাল হয়নি দাবি করে তিনি বলেন, মূসক গোয়েন্দা যেসব অভিযোগ তুলেছে সেগুলো সঠিক নয়। এর পক্ষে আমাদের জবাব আছে। ব্যাখ্যা চেয়ে তারা যে চিঠি দিয়েছে তার জবাবে আমরা প্রয়োজনীয় তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরব।
বাংলাদেশ সময়: ১৩:৩২:১৫ ৫৬১ বার পঠিত