বঙ্গ-নিউজ: মানুষের সঙ্গে ভূতের যৌন সংসর্গকে বলা হয় ‘স্পেক্ট্রোফিলিয়া’। এটি আসলে এক ধরনের তীব্র যৌন আকাঙ্ক্ষা, যার ফলে মানুষ আয়নায় দেখা নিজের প্রতিবিম্ব, এমনকী অশরীরীর প্রতিও আকৃষ্ট হয়।**এক জন ৩৪ বছর বয়স্ক চিনা ভদ্রলোকের অভিজ্ঞতা বেশ করুণ। তিনি ১৬ বছর ধরে এক সাক্কুবুসের অত্যাচারের শিকার। তাঁর কথায়, ‘১৮ বছর বয়সে প্রথম তাকে স্বপ্নে দেখি। তার পর থেকেই দুর্ভোগের শুরু। চাকরিও চলে গেছে, কারণ কাজে মনোযোগ দিতে পারি না। মেয়ে-বন্ধুর সঙ্গে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও বিয়ে করতে পারিনি।’
**মডেল অ্যানা নিকোল স্মিথ আমেরিকার একটি পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বেশ কয়েক বছর আগে তাঁর এই রকম অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ‘অনেক দিন আগে যখন টেক্সাসে থাকতাম, এক দানো আমার পা বেয়ে উঠে আসত এবং আমার সঙ্গে যৌন সংসর্গ করত। প্রথম দিকে ঘুমের ঘোরে ভেবেছিলাম, বোধহয় আমার বয়ফ্রেন্ড, কিন্তু এক দিন দেখলাম তা নয়। অনেক ভয় পেতাম।
**জিনা লেনিয়ার (এক জন ‘প্যারানর্মাল ইনভেস্টিগেটর’- অলৌকিকের গোয়েন্দাগিরি করা যাঁর কাজ) তাঁর ওয়েবসাইটে বলেছেন, তিনি কিছু দিন আগে ম্যারি জ্যানসেন ক্রস নামে এক মহিলার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন, যিনি মাঝে মাঝেই অশ্লীল ফোন কল পান। ম্যারি বলেছেন, ‘আমি জানি, যে আমায় ফোন করে সে একটা ভূত, কারণ জীবিত অবস্থায়ও সে আমাকে প্রায়ই ফোনে নানা নোংরা কথা বলে উত্ত্যক্ত করত এবং এর জন্যে পুলিশ তাকে বেশ কয়েক বার অ্যারেস্টও করেছিল। সে মারা যাওয়ায় ভাবলাম, যাক, অব্যাহতি পেয়েছি। কিন্তু আবার ফোন আসা শুরু হল। আশ্চর্য ব্যাপার, ফোন কোম্পানি কিছুতেই এই ‘কলার’কে ট্রেস করতে পারেনি। এমনও হয়েছে, আমি কোনও বন্ধু বা আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছি, তাদের ফোনে রিং হল, আমাকে ডেকে দিতে বলা হল, আর আমি ফোন ধরেই শুনলাম, সেই কণ্ঠস্বর।’
**বিখ্যাত প্যারাসাইকোলজিস্ট ব্র্যান্ড স্টাইগারের লেখা একটি বই আছে, যার বিশাল নামটার গোড়াটা বাংলায় অনুবাদ করলে দাঁড়ায়: ‘ভৌতিক প্রেমকাণ্ড…’ এতে আছে ভূতে পাওয়া প্রেমিক-প্রেমিকার কাহিনি, ভূত স্বামী-স্ত্রী’র গল্প, আর অবশ্যই ছায়াজগতের সেই সব শয়তানের কথা, যারা মানুষদের যৌন নিগ্রহ করার জন্যে রাতের পর রাত ঘুরে বেড়াচ্ছে! হলিউডের একটা নামী ভূতের ছবি ‘দ্য এনটিটি’। সেখানে দেখানো হয়েছিল, নায়িকাকে প্রায়ই জোর করে ভোগ করে চলে যায় এক অশরীরী। উদ্দাম যৌনতার চিহ্ন নায়িকার সর্বাঙ্গে। গা ভর্তি কালশিটে, আঁচড়-কামড়ের দাগ। মন-চিকিৎসক দেখেশুনে বলেন, ভূতের ধর্ষণ আবার হয় না কি? এ সবই মেয়েটির মনগড়া। নিজের জীবনে সে অনেক যৌন অত্যাচার বা ‘অ্যাবিউজ’ সয়েছে, তার থেকেই জটিল এই মানসিক রোগ বাধিয়েছে। নিজেই নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করছে। এ দিকে অশরীরী কখনও কখনও সবার সামনেই অত্যাচার চালায়। তার পর অনেক কাণ্ড করে, প্রেতবিশেষজ্ঞদের সাহায্যে, কামাতুর প্রেতাত্মাকে রোখা হয়। এটা টুকে হিন্দি ফিল্মও হয়েছিল, ‘হাওয়া’। নায়িকা ছিলেন তব্বু।
বহু কাল ধরে চর্চিত এই রকম রোমহর্ষক ব্যাপারের বিজ্ঞানসম্মত কারণ থাকা বাঞ্ছনীয় এবং (দুঃখজনক ভাবে) আছেও। বিজ্ঞান একে ব্যাখ্যা করেছে ‘স্লিপ প্যারালিসিস’ হিসেবে। এটা সাধারণত হয় ঘুমের শুরুতে বা শেষের দিকে। এতে শরীরটা অবশ থাকে এবং অনেক রকম ‘হ্যালুসিনেশন’ হয়, যেগুলোকে ঘুমন্ত লোকটি একেবারে বাস্তব বলেই ভুল করে। ঘুম ভেঙে যাওয়ার পরেও তার রেশ থেকে যায় এবং বোঝা যায় না ঘটনাটা আসলে ঘুমের মধ্যে ঘটেছে, না জাগ্রত অবস্থায়। মানসিক উৎকণ্ঠা, মাইগ্রেন, অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপ্নিয়া এবং স্নায়ুতন্ত্রের বিভিন্ন রোগ এর জন্য দায়ী। বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই স্লিপ প্যারালিসিসই আসলে ভূতের সঙ্গে যৌনতা, ভ্যাম্পায়ার-আক্রান্ত হওয়া, বা এলিয়েনদের দ্বারা অপহৃত হওয়ার মোদ্দা/আসল ব্যাখ্যা।
আপনি আরও ভালোভাবে জানার জন্য গুগোলে Spectrophilia লিখে সার্চ দিয়ে দেখতে পারেন।
বাংলাদেশ সময়: ২৩:৩৪:৩৯ ১০৯৮ বার পঠিত