বঙ্গ-নিউজ: আওয়ামী লীগের চলমান সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ্যে বিএনপি’র বিরুদ্ধে এলোমেলো সামঞ্জস্যহীন বক্তব্য রাখছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, দেশজুড়ে বিএনপির দুই মাসব্যাপী প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ণ অভিযান চলছে। দলের এই কর্মসূচি ইতোমধ্যে মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষেরা স্বত:স্ফুর্তভাবে বিএনপি সদস্য ফরম সংগ্রহ ও সদস্য পদ নবায়ণ করছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের চলমান সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ্যে বিএনপি’র বিরুদ্ধে এলোমেলো সামঞ্জস্যহীন বক্তব্য রাখছেন।
রিজভী বলেন, সবদিক থেকে তারা চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। মিথ্যাচারই হলো আওয়ামী লীগের একমাত্র অবলম্বন। মিথ্যার মায়াজাল সৃষ্টি করা ছাড়া আওয়ামী লীগের উন্নয়ন বলে কিছু নেই। তারা জনগণকে বিভ্রান্ত ও বিরোধী দল ও মতকে নির্দয়ভাবে দমন করার পর মিথ্যার মায়াজাল ছড়িয়ে দেয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, জেলায় জেলায় বিএনপি’র উদ্যোগে প্রাথমিক সদস্য পদ গ্রহণ ও নবায়নের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান পন্ড করতে পুলিশ ও দলীয় সশস্ত্র ক্যাডারদের লেলিয়ে দিয়েছেন। ভোটারবিহীন সরকারের ভয়াবহ দুঃশাসন, লুটপাট আর নারকীয় উল্লাসে গোটা জাতি আজ ক্ষতবিক্ষত। ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগসহ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের তান্ডবে বাংলাদেশের বিভিন্ন জনপদ ও জনবসতি এখন রক্তমাখা। তাদের আগ্রাসী চাঁদাবাজী, দখলবাজী, টেন্ডারবাজী, খুনখারাবিতে সারাদেশ এখন শ্মশানের অন্ধকারে ঢেকে গেছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীনরা যেন সারাদেশে প্রাণের স্পন্দন স্তব্ধ করে দেয়ার কর্মসূচিতে লিপ্ত। যেন বনে সকল প্রাণীকে ধ্বংস করে তারা শৃগালের রাজত্ব কায়েম করার মতো পরিস্থিতি তৈরী করেছে। মানুষ আজ আওয়ামী লীগকে লাল কার্ড দেখাতে শুরু করেছে। তাই আওয়ামী লীগ সদস্য সংগ্রহ অভিযানে ব্যর্থ হয়ে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করতে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী ক্যাডার ও তাদের লালিত পালিত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির দেশব্যাপি সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমে বাধা দিচ্ছে, হামলা করছে, ভাঙচুর করেছে এমনকি বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার নির্যাতনও করছে। এমনকি বিশেষ অভিযানের নামে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আবারও গণগ্রেফতার শুরু হয়েছে। বিভিন্ন জেলা উপজেলায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও তাদের পরিচয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ীতে বাড়ীতে হামলা, ভাংচুর ও তান্ডবলীলা চালানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে-সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে ক্ষুব্ধ সরকার। যার প্রথম কিছুটা আভাস পাওয়া যায় ষোড়শ সংশোধনী নিয়ে অর্থমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়ায়। অর্থমন্ত্রী উচিত অনুচিতের এথিকসের ধার ধারেন না। সোমবার সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ নিয়ে নাকি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। একই সঙ্গে রায়ের পর্যবেক্ষণে দেয়া অনেক বক্তব্যকে ‘আপত্তিকর’ বলে অভিহিতও করেছেন তারা। রায়ের পর্যবেক্ষণে দেয়া ‘আপত্তিকর’ বক্তব্য প্রত্যাহার করতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রধান বিচারপতি বরাবর লিখিত আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আমরা গণমাধ্যম সূত্রে জেনেছি।
মহামান্য হাইকোর্টের একটি আদেশে বলা হয়েছে-আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণ মানা অবশ্যই বাধ্যতামূলক। সুতরাং ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ে যে পর্যবেক্ষণ দেয়া হয়েছে, এরপরেও সেখানে আপত্তিকর বিষয় বলে প্রত্যাহার করা বলাটা সরকারের চরম ধৃষ্টতা। সুপ্রীম কোর্টের রায়ের উক্ত পর্যবেক্ষণে সরকারের আসল চরিত্রটা সঠিকভাবে চিত্রিত হওয়ার কারণেই তাদের ক্ষুদ্ধ হওয়া। এই পর্যবেক্ষণে সরকার আর কর্মক্ষম থাকতে পারেনা, পার্লামেন্টের কোন বৈধতা থাকতে পারেনা। সরকারের ক্ষমতায় থাকাটা শুধু বেআইনী নয়, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়ে ফেলেছে। পর্যবেক্ষণে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের কথাও বলা হয়েছে, অখন্ড নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, তাহলে আওয়ামী লীগের দলীয় লোক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে কীভাবে নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন করবেন?
বাংলাদেশ সময়: ২০:৪৪:১২ ৫২৭ বার পঠিত #bangla news #bangladeshi News #bd news #bongo-news(বঙ্গ-নিউজ) #জাতীয় #শিরোনাম