বঙ্গ-নিউজঃ জনদৃষ্টি ভিন্ন দিকে ফেরাতে সরকার বিশিষ্ট কবি ও রাষ্ট্র চিন্তক ফরহাদ মজহারকে অপহরণ করেছিল বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। কারণ গুম- খুন-অপহরণের সংস্কৃতি হচ্ছে ক্ষমতাসীনদের বৈশিষ্ট্য। তিনি বলেন, অবৈধ পার্লামেন্টে সংবিধানের ১৬তম যে সংশোধনী এনেছিল তা মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। এর ফলে সেই রায়ের প্রতি ব্যাপক জনদৃষ্টি পড়েছে। কিন্তু সরকার জনগণের সেই দৃষ্টি ও আস্থাকে অন্যদিকে ফেরাতেই ফরহাদ মজহারকে অপহরণের নাটক মঞ্চস্থ করেছে। গতকাল বুধবার দুপুরে রাজধানীর বাড্ডায় সন্জি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে দলের প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রিজভী এসব বলেন। প্রসঙ্গত, দুই মাসব্যাপী প্রাথমিক সদস্য নবায়ন এবং সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নেমেছে বিএনপি। গত ১ জুলাই রাতে কেন্দ্রীয়ভাবে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। আর ঢাকা মহানগরীতে তৃণমূল পর্যায়ে গতকাল এই কর্মসূচির উদ্বোধন করলেন রুহুল কবির রিজভী। মহানগরীর বাড্ডা থানা বিএনপির উদ্যোগে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এই কর্মসূচি চলবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। : রুহুল কবির রিজভী বলেন, ফরহাদ মজহারকে গুম করার ১৬ ঘন্টা আগে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন। ভারতে মুসলিম নিধনের প্রতিবাদ করেছিলেন। ফ্রিজে গরুর মাংস রাখা আছে এই কারণে মুসলমানকে পিটিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। খাসির মাংস রাখা আছে তারপরও বলা হচ্ছে গরুর মাংস রাখা আছে। এভাবে মুসলমানদের ওপর চড়াও হচ্ছে। এই যে অন্যায়। সবার মানবাধিকার থাকবে মুসলমানের মানবাধিকার থাকবে না। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন মাহমুদুর রহমান। সেখানে পাশে বসেছিলেন বিশিষ্ট কবি ফরহাদ মজহার। এই অপরাধে তাকে গুম করা হয়। তিনি বলেন, জনদৃষ্টিকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ফরহাদ মজহারকে গুম করা হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। ৯০ থেকে ৯১ ভাগ মুসলমান। ভারতেই এই অন্যায় আচরণের একটি সেন্টিমেন্ট এখানে হতে পারে। সেই সেন্টিমেন্ট যাতে না হয়, সেটাকে অন্যদিকে ধাবিত করার জন্যই ফরহাদ মজহারকে গুম করা হয়। এই যে নাটক, এর নাটকের ডাইরেক্টর, প্রডিউসার, প্রোডাকশন ম্যানেজার সব কিছুই হচ্ছে সরকার। অন্য কেউ নয়। কিন্তু এই কথা বললে সরকারের মন্ত্রীরা খুব রাগ করেন, উষ্মা প্রকাশ করেন। : রিজভী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, অপহরণ ও গুমের ঘটনা সবই তো সরকারের বৈশিষ্ট্যের মধ্যে। এটা যদি কোনো ছিঁচকে সন্ত্রাসী হতো তাহলে এক কথা হতো। আমরা দেখেছি আপনাদের বৈশিষ্ট্য বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হীরু, হুমায়ুন পারভেজ, বিএনপির জনপ্রতিনিধি চৌধুরী আলম তাদেরকে গুম করেছেন। এই কাজগুলো আপনারা করেছেন। তিনি বলেন, গুম-খুনের সংস্কৃতি আপনাদের। গোটা জাতি বিশ্বাস করে ফরহাদ মজহারকে আপনারাই গুম করেছেন। এখন যত কথাই বলেন না কেন? : প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ ও নবায়ন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ঢাকা মহানগরীতে তৃণমূলের মাঝে আরো বেশি করে কাজ করতে হবে। এই কর্মসূচি আমাদের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া উদ্বোধন করেছেন। বাড্ডা থানা বিএনপি যে উদ্যোগ নিয়েছে তা খুবই প্রশংসনীয়। অতীতে যেভাবে আপনারা মাঠে থেকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি সফল করেছেন এবারো মাঠে থেকে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচি সফল করবেন। বাড্ডা থানায় এক থেকে দেড় লাখ প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ করা হবে বলে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। : বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ বলেন, ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে। ইনশাল্লাহ সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে আমরা এই সরকারকে বাধ্য করব। তিনি নেতাকর্মীদেরকে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান। : বাড্ডা থানা বিএনপির সভাপতি এজিএম শামসুল হকের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, মহানগর উত্তরের সিনিয়র সহসভাপতি মুন্সী বজলুল বাছিত আঞ্জু, ঢাকা মহানগর যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকা মহানগর মহিলাদল উত্তরের সভাপতি পিয়ারা মোস্তফা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৩৫:২৩ ৩৯৬ বার পঠিত