বঙ্গ-নিউজঃ চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক যোগাযোগ স্বাভাবিক হতে আগামী এক মাস সময় লাগবে। এর মধ্যে সওজ ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট সড়ক থেকে বিশাল বিশাল মাটি ও পাথরের স্তূপ সরিয়ে হালকা যান চলাচলের উপযোগী করার চেষ্টা চলছে। আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে হালকা যান চলতে পারবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাহাড়ধসে রাঙামাটির ঘাগড়া এলাকা থেকে মানিকছড়ি সেনা ক্যাম্প পর্যন্ত ৮ কিলোমিটার সড়কের ১৫০টি স্থানে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মূল সড়ক। কোনো কোনো জায়গায় পুরো রাস্তা ধসে পড়েছে। এসব জায়গায় নতুন করে সড়ক নির্মাণ করতে হবে, যা খুবই সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তবে ঈদের আগে এই সড়কটি ভারি যানবাহন চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের প্রধান মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান গতকাল শনিবার মানিকছড়ি সেনা ক্যাম্পের কাছে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে এক মাস সময় লাগতে পারে। তবে আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে হালকা যান চলাচলের উপযোগী করা হবে।
সওজর রাঙামাটি অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ১৫০টি স্থানের মধ্যে ৩৭টিতে সড়ক দেবে নিচু হয়ে গেছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চট্টগ্রাম থেকে রাঙামাটির পথে সদর উপজেলার সাপছড়ি শালবাগান এলাকায়। এখানে পাহাড় ভেঙে পড়ে ১০০ মিটার সড়ক কমপক্ষে দেড়শ ফুট রাস্তা নিচে নেমেছে। এ সড়কটির লাগোয়া পাহাড় কেটে নতুন সড়ক তৈরির পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।
সওজর আওতায় রাঙামাটি সদরের সঙ্গে মানিকছড়ি-মহালছড়ি-খাগড়াছড়ি, চট্টগ্রাম, ঘাগড়া-চন্দ্রঘোনা-বাঙালহালিয়া-বান্দরবান, বাঙালহালিয়া-রাজস্থলী, রানীরহাট-কাউখালী, বাঘাইছড়ি-নানিয়ারচর-লংগদু সড়ক আছে। এর বাইরে শহরের পাঁচটি সড়কও সওজর অধীনে। এর সবকটিতেই ভূমিধস হয়েছে। প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যয়ে পড়ায় চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছে। চট্টগ্রামমুখী লোকজন প্রায় ১০ কিলোমিটার পথ হেঁটে এবং বাকি পথ অটোরিকশায় চড়ে ২৫ কিলোমিটার দূরের ঘাগড়া গিয়ে বাসে উঠছেন। আবার যাদের জরুরি ভিত্তিতে রাঙামাটি যাওয়া প্রয়োজন তারা কাপ্তাই নৌপথ দিয়ে যাতায়াত শুরু করেছেন। এতে সহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসন। অন্যদিকে সড়ক যোগাযোগ না থাকায় চট্টগ্রাম থেকে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্য রাঙামাটিতে আনতে পারছে না। নৌপথে যেসব প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী রাঙামাটি আনা যাচ্ছে তা দিয়ে শহরের মানুষের চাহিদা মিটছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তবে কয়েক দিন ধরে দ্রব্যমূল্য যেভাবে বেড়েছিল তার কিছুটা কমতে শুরু করেছে।
প্রকৌশলী মোহাম্মদ এমদাদ হোসেন জানান, রাঙামাটির সাপছড়ি এলাকার সড়কের অবস্থা ভয়াবহ। সাপছড়ি শালবাগান অংশে বিকল্প ব্যবস্থায় লোকজন যাতে নিরাপদে অন্তত হেঁটে যেতে পারেন সেই চেষ্টাও করা হচ্ছে। পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়ক যোগাযোগ চালুর চেষ্টা চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:৩২:০৭ ৬২২ বার পঠিত