বঙ্গ-নিউজঃ ভাঙন থেকে রক্ষা করতে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় প্রস্তাবিত নতুন দুটি ঘাট নির্মাণের কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। দৌলতদিয়ার লঞ্চ ও ১ নম্বর ফেরি ঘাটের মাঝখানে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নির্মাণকাজ চলছে। তবে আসন্ন ঈদের আগে ঘাট চালু হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
এদিকে পদ্মায় পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় গতকাল সোমবার দুপুরে ৩ নম্বর ঘাটের র্যাম্প তলিয়ে যায়। এ কারণে ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। আর বন্ধ থাকা ৪ নম্বর ঘাটটি ওই দিন বিকেলে চালু হয়েছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের আগে প্রস্তাবিত স্থানে নতুন দুটি ঘাট চালু নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তায় আছি। যদি কোনো কারণে নতুন দুটি ঘাট চালু করা সম্ভব না হয় এবং ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট ভাঙনের কারণে বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে ঈদে ঘরমুখী মানুষকে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হবে।’
শফিকুল ইসলাম জানান, নতুন ঘাট দুটির নির্মাণকাজ এখন পর্যন্ত ৩০-৩৫ শতাংশের মতো হয়েছে। পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় ৩ নম্বর ঘাটের র্যাম্প তলিয়ে গেছে। এ কারণে সোমবার দুপুর থেকে ঘাটটি বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া গত শুক্রবার থেকে বন্ধ থাকা ৪ নম্বর ঘাট সোমবার বিকেলে চালু হয়েছে। পানি বাড়া অব্যাহত থাকলে পুরো বর্ষায় ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট রক্ষা করা সম্ভব হবে না। এরই মধ্যে ঘাট দুটি ঝুঁকিতে পড়েছে। শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের আগে নতুন প্রস্তাবিত ঘাট দুটি চালু করতে আমরা সওজ ও বিআইডব্লিউটিএকে অনুরোধ জানিয়েছি। এ ছাড়া যাত্রী ও যানবাহন পারাপার নির্বিঘ্ন করতে ঈদের আগে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে আরও তিন-চারটি ফেরি বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি। বর্তমানে এই নৌপথে ছোট-বড় ১৫টি ফেরি চলছে।’
আজ মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রস্তাবিত নতুন দুটি ঘাটের ১ নম্বরটিতে মাত্র সাতজন শ্রমিক কাজ করছেন। এ সময় রফিকুল ইসলাম, আলম শেখ, আছান শেখসহ আরও কয়েকজন শ্রমিক জানান, ঈদের আগে ঘাট চালু হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যেভাবে কাজ চলছে তাতে করে ঈদের পরও আরও কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।
বিআইডব্লিউটিএর দৌলতদিয়া কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহ আলম বলেন, ‘৩০ মে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ঘাট পরিদর্শন করেন এবং তাঁর নির্দেশের পরের দিন ৩১ মে থেকে প্রস্তাবিত ঘাটের সামনে নদীতে খননকাজ শুরু করা হয়। সওজ যত দ্রুত সড়কের কাজ শেষ করতে পারবে, তত দ্রুত ঘাট তৈরি করতে পারব। আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে।’ তিনি বলেন, নতুন ঘাট দুটি ঈদের আগে চালু হওয়া নিয়ে তাঁদের মনেও শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই বিকল্প হিসেবে ৩ ও ৪ নম্বর ঘাট যাতে সচল রাখা যায়, এ জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি রাখা হয়েছে।
সওজের রাজবাড়ী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, প্রস্তাবিত নতুন দুটি ঘাটের সড়ক নির্মাণ নিয়ে মামলাসংক্রান্ত জটিলতা গত ২৯ মে নিষ্পত্তি হয়। ওই দিন দুপুর থেকে নির্ধারিত স্থানে থাকা সব বাড়ি-ঘর সরানো শুরু হয়। এরপর এক্সকাভেটর দিয়ে মাটি খননকাজ শুরু হয়। গত ২৪ এপ্রিল সড়ক নির্মাণের জন্য মেসার্স সাইফুল হাসান জোয়াদ্দার নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দুই কোটি টাকার কার্যাদেশ দেওয়া হয়। আসন্ন ঈদের আগে নতুন এই দুটি ঘাটের সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ করা হবে। এ জন্য দ্রুতগতিতে কাজ এগিয়ে নিতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৫:২৬ ৫০২ বার পঠিত