বঙ্গ-নিউজঃ ঢাকার রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রী হয়ে ডেমরার আমুলিয়া পর্যন্ত রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাই কোর্ট।সেইসঙ্গে ওই রাস্তা দিয়ে ভারী যান চলাচলে বাধা না দেওয়ায় এবং রাস্তাটি ‘ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে বিবাদীদের নিস্ক্রীয়তা’ কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছে আদালত।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, পুলিশের আইজিপি, পুলিশ কমিশনার, রামপুরা থানার ওসি, খিলগাঁও থানার ওসিসহ ১১ জনকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
একটি রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একেএম জাহিরুল হকের হাই কোর্ট বেঞ্চ সোমবার এই আদেশ দেয়।
বনশ্রীর বাসিন্দা এ এফ এম কামরুল হাসান খান পাঠান রোববার হাই কোর্টে ওই রিট আবেদন করেন।
রিটকারীর পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার গোলাম সারোয়ার পায়েল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অরবিন্দ কুমার রায়।
আইনজীবী গোলাম সারোয়ার পায়েল পরে সাংবাদিকদের বলেন, ওজন নীতিমালা ২০১২ অনুযায়ী সিঙ্গেল এক্সেল রোডে সাড়ে ১৫ টন ওজনের বেশি ওজনের যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু এই নির্দেশনা অমান্য করে ভারী যানবাহন চলাচল করায় বনশ্রী-আমুলিয়া সড়কে বিশাল খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে।
গত ২৫ মে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এই রিট আবেদন করা হয়। সেখানে বলা হয়, হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য রাজধানীর রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রীর পাশ দিয়ে চলে যাওয়া রামপুরা-ডেমরা-আমুলিয়া সড়কটি মাত্র কয়েক বছর আগে নির্মাণ করা হয়।
ওই রাস্তায় সর্বোচ্চ ৫ টনের যানবাহন চলাচলের নির্দেশনা থাকলেও কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও তদারকির অভাবে ৩০-৪০ টনের লরি-ট্রেইলরও সেখানে চলছে। এতে রাস্তাটি নির্মাণের এক বছরের মধ্যেই বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিভিন্ন স্থানে ভারি যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা সংবলিত সাইন বোর্ড বসানো থাকলেও চালকরা তা আমলে নিচ্ছেন না। এমনকি দিনের বেলায়ও ট্রাফিক পুলিশকে রাস্তায় সঠিক ওজনের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণে কাজ করতে দেখা যায়নি।
রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রী হয়ে রাস্তাটি মিশেছে ডেমরা হাইওয়ের ডেমরা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে। প্রায় দশ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক বিভাগের বসানো সাইন বোর্ডে লেখা রয়েছে- ‘সড়কটিতে ভারি যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ নিষেধ’।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ঢাকা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মেহেদী ইকবাল গত ২০ এপ্রিল রাস্তাটি রক্ষায় সহযোগিতার জন্য ঢাকা মহানগড়র পুলিশের কমিশনার, ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার, ট্রাফিক বিভাগের উপ কমিশনার, রামপুরা ও খিলগাঁও থানার ওসিসহ দায়িত্বশীল আটজনকে একটি চিঠি দেন।
সেখানে বলা হয়, গত বছর ডেমরা-আমুলিয়া-রামপুরা সড়কটি হালকা ও মাঝারি ওজনের যানবাহনের জন্য নির্মাণ করা হয়। চালু হওয়ার পর থেকেই সেখানে ভারী ট্রাক, কভার্ড ভ্যান, লরি, ফুয়েল ট্যাঙ্কারসহ অন্যান্য ভারী যানবাহন চলাচল শুরু করে। ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই সড়কের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও গর্ত সৃষ্টি হয়ে ভেঙেচুরে গেছে।
জনসাধারণের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করতে এবং সড়কটি সচল রাখার স্বার্থে এখনই অতিরিক্ত ওজনবাহী যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি বলে চিঠিতে তাগিদ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:১৬:৫৭ ৪৬৬ বার পঠিত