নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জাকিরুল আজাদ মান্না” তিনি সুনামগঞ্জ জেলা,ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থানাধীন ‘চামরদানী ইউনিয়ন’ পরিষদের চেয়ারম্যান।তিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই নিজের ক্ষমতা জাহির করার চেষ্টায় আছেন। কখনও সংখ্যালঘু ব্যক্তিকে মারধর করে জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া, আবার কখনও নিরীহ ব্যক্তির ওপর খবরদারি। পরিষদের বাইরে বাজে লোকদের নিয়ে একটি কক্ষে বসে মাদক গ্রহণের কাজটিও করেন তিনি। গত মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সকল সদস্য লিখিতভাবে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন। মাস তিনেক আগে এ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আরও একবার অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছিলেন পরিষদের সদস্যরা।
জানা যায়, জাকিরুল আজাদ মান্না গত বছর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হন।
এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় নানান অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান মান্নার বিরুদ্ধে। চেয়ারম্যান মান্না ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদেরকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের বিলে স্বাক্ষর নেন। যদি কেউ স্বাক্ষর করতে না চায় তাহলে তাকে পরিষদ থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। ভিজিডি, ভিজিএফ, জিআর বিতরণে অনিয়ম করে আসছেন। চেয়ারম্যান মান্না আলাদা
একটি কক্ষে বসেই বিভিন্ন প্রকার মাদক গ্রহণ করেন বলে ইউপি সদস্যদের অভিযোগ রয়েছে।
৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওয়াসিল আহমেদ বলেন, ‘চেয়ারম্যান মান্না ইয়াবা ট্যাবলেট গ্রহণ করে নেশাগ্রস্ত থাকে। দিনের বেলায় তিনি পরিষদে থাকেন না এবং আমাদের নিয়ে কোনো মিটিং করতে চায় না। তিনি আমাদের নিয়ে রাতের বেলায় মিটিংয়ে বসেন। তিনি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য আমাদের কাছ থেকে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেন। যদি স্বাক্ষর না করি তাহলে মেম্বারি থাকবে না বলে হুমকি দেন চেয়ারম্যান।’
৭, ৮ ও ৯ (সংরক্ষিত) নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সেজুনা আক্তার বলেন, ‘চেয়ারম্যান মান্না মদ, গাঁজা খায় এবং তার পরিচিত লোকজনদেরকে পরিষদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। আমি ভিজিএফের তালিকা তৈরি করে জমা দিলেও তিনি তা পরিবর্তন করে নিজের লোকজনদের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেন,নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো কয়েকজন সদস্যর এই অভিযোগ আছে। আমাদের নামে কোনো প্রকল্প দিলে আগেই চেয়ারম্যানকে টাকা দিতে হয়।’
৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. আব্দুল মোতালেব বলেন, ‘পরিষদ এলাকায় চেয়ারম্যানের একটি আলাদা রুম আছে। যেখানে বসে তিনি নেশা করেন। তিনি আমাদের নিয়ে কোনো মিটিং করেন না। তিনি শুরু থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি করে পরিষদ পরিচালনা করে আসছেন।’
এ ব্যাপারে প্রতিবেদন না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে চামরদানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকিরুল আজাদ মান্না বলেন, ‘আমার উদার মানসিকতার জন্য বারবার এমন অভিযোগ হচ্ছে। আমি নেশা করি না, ধুমপান করি। আমার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা।’
ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মামুন খন্দকার বলেন, ‘অনাস্থা প্রস্তাব পেয়েছি। বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের কয়েকজন সাধারণ লোককে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন “এভাবে অনাস্থা দিয়ে লাভ কি, পুর্বের অনাস্থার কারণে তিন মাসের মত সরকারী বিল থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি,এখন ব্যাবস্থা নিলে হয়ত আরো অনেক দিন এই ভাবে আমাদের প্রাপ্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হব।যা আমাদের জন্য খুব হতাশা জনক।
তাছারা সুনামগঞ্জ জেলা পানিতে তলিয়ে গেলেও এখনো দূর্গত বলে ঘোষনা করা হয় নি।তাই আমরা শংকিত।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৪৮:৫৩ ৪৮৪ বার পঠিত