বঙ্গ-নিউজঃ দুদিন আগেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৪১ রান করা দল আজ ভারতের কাছে গুটিয়ে গেলো মাত্র ৮৪ রানে! অবিশ্বাস্য এক ব্যাপারই বটে। ম্যাচটা যতোই প্রস্তুতিমূলক হোক না কেনো, একদিন পরই আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মূল পর্ব শুরু করতে যাওয়া বাংলাদেশ আজ বড় এক হোঁচটই খেলো।
টস জিতে বোলিং নেয়ার সময় আজকের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছিলেন যে, বোলিং অনুশীলনের কথা মাথায় রেখে আজ খেলতে নামছেন তারা। সেই বোলিং অনুশীলনেই তাসকিন- সানজামুলরা ভারতকে দিলেন ৩২৪ রান। জবাব দিতে নেমে ১০ ওভার হওয়ার আগেই বাংলাদেশ হারিয়ে বসে ছয় উইকেট! ইনিংস শেষ হয় ৮৪ রানে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরে গেছে ২৪০ রানের বিরাট ব্যবধানে।
সাকিব যে বলেছেন, আজ বোলিং অনুশীলনটাই তাদের মূল লক্ষ্য। টিম মিটিংয়ে নিশ্চয় এভাবেই আলোচনা হয়েছে। ব্যস, এই আলোচনা থেকে ব্যাটসম্যানরা হয়তো ধরে নিয়েছিলেন, আজ আর তাদের কাজ- টাজ নেই!
ব্যাটসম্যানদের ভাবনা যদি এমনই না হবে, এই বাংলাদেশ কিভাবে ১০ ওভার না যেতেই ছয় উইকেট হারায়? ভারতের বর্তমান পেস অ্যাটাককে যতোই ইতিহাসের সেরা বলে দাবি করা হোক না কেনো, এটা তো নিশ্চিত যে, এই অ্যাটাককে আবার আজই মাঠি নামিয়ে দেয়া হলে, আর যাই হোক আবার তারা ১০ ওভারেই বাংলাদেশের ১০ উইকেট নিতে পারবে না। এটা নিশ্চিত।
তাহলে এই লজ্জার কারণটা কী? ক্রিকেটীয় বিশ্লেষণে হয়তো এর কারণ খুঁজে বার করা মুশকিল। এর চেয়ে ভালো ব্যাটসম্যানদের মনস্তত্বের উপর দোষ চাপিয়ে দেয়া। বোলিং অনুশীলনটা ভালোভাবে করতে হবে, এই কথাটা বারবার শুনেই হয়তো ব্যাটসম্যানরা মনে মনে ছুটি নিয়ে ফেলেছিলেন। ব্যাটিংয়ে পড়েছে যার বিশ্রী প্রভাব। এর বাইরে আর কোনো যৌক্তিক ব্যাখ্যা হয়তো নেই!
এ দিকে, আগে ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র তিন রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত। তারপরও তারা ৩২৪ রানে পাহাড় গড়ে দিনেশ কার্তিক, হার্দিক পান্ডিয়া ও শিখর ধাওয়ানের ব্যাটে চড়ে। দিনেশ সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ছয় রান দূরে থাকতে স্বেচ্ছায় উইকেট ছেড়ে চলে যান। পান্ডিয়া মাত্র ৫৪ বলে ৮০ রান করে বাংলাদেশি বোলারদের নিয়ে এক রকম খেলাই করেছেন। আর শিখর ধাওয়ান করেছেন ৬০ রান। মূলত এই তিনজনের ব্যাটিংয়ে ভর করেই বড় পুঁজি পায় ভারত।
আজ ব্যাটিং করেননি বিরাট কোহলি, এমএস ধোনি ও যুবরাজ। অনুশীলনের আমেজেই ছিলেন তারা। অন্য দিকে আজ দুর্দান্ত ছিলেন ভারতীয় পেসাররা। বিশেষ করে ভুবনেশ্বর কুমার ও উমেশ যাদব জুটি। ১০ ওভারের আগে বাংলাদেশের পড়ে যাওয়া ছয় উইকেট সমান দুই ভাগে ভাগ করে নিয়েছেন তারাই। ম্যাচ থেকে বাংলাদেশ ছিটকে গেছে তাদের বল সামলাতে না পেরেই।
প্রস্তুতি ম্যাচ বলে হয়তো বাংলাদেশি সমর্থকরা দ্রুতই এই ম্যাচটা ভুলে যেতে চাইবেন। কিন্তু ম্যাচটা যেহেতু ভারতের বিপক্ষে ছিলো, তাই এই ম্যাচের এমন সকরুণ হার অনেক দিন বুকের ভিতরে একটা চিনচিনে ব্যথা হয়েই থাকবে।
উল্লেখ্য, আজকের প্রস্তুতি ম্যাচ দিয়েই শেষ হলো বাংলাদেশের প্রস্তুতিপর্ব। একদিন বাদে, পহেলা জুন মাশরাফিদের মাঠে নামতে হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ওই ম্যাচ দিয়েই শুরু হবে আসল লড়াই। তার আগে ভারতের কাছে এমন লজ্জার হারের কথা মুশফিকরা যতো দ্রুত ভুলবেন, তাদের জন্য ততোই মঙ্গল।
বাংলাদেশ সময়: ০:২৪:১০ ৪১৬ বার পঠিত