বঙ্গ-নিউজঃ আইপিএলের এবারের ফাইনালটা ‘ফাইনালের’ মতোই হলো! প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১২৯ রান তুলেছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। অনেকে হয়তো তখনই ম্যাচের ফল নির্ধারণ করে ফেলেছিলেন। টি-টোয়েন্টিতে এ আর তেমন কী রান! কিন্তু তারপর পুনের ইনিংসটাতে যে এতো নাটকীয়তা লুকিয়ে ছিলে কে জানতো। রোমাঞ্চে ভরপুর ফাইনালে শেষ পর্যন্ত মুম্বাই-ই জিতেছে এক রানে! আইপিএলে মুম্বাইয়ের এটি তৃতীয় শিরোপা জয়। অবশ্যই আইপিএলের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।মিচেল জনসনের করা শেষ বলটা সীমানা ছাড়া করার উদ্দেশ্যে হাকিয়ে দিলেন পুনের ড্যানিয়েল ক্রিস্টিন। কিন্তু সীমানা ছাড়া হলো না, সীমানা দড়ির একেবারে কাছ থেকে ধরে জোসা উইকেট রক্ষকের কাছে জমা দিলেন ক্রুনাল পান্ডিয়া। দুইবারের বেশি জায়গা বদল করতে পারলেন না পুনের দুই ব্যাটসম্যান। ব্যাস, সঙ্গে সঙ্গে দুই হাত ছড়িয়ে শিরোপা জয়ের উল্লাসে মেতে উঠলেন রোহিত শর্মা। মিচেল জনসন, কাইরন পোলার্ড, হার্দিক পান্ডিয়ারাও ভেসে গেলেন উল্লাসে। ড্রেসিং রুম থেকে ছুটে এলেন শচীন টেন্ডুলকারও।
কিন্তু এই মুহূর্তটার আগে ছিল ‘নখ কামড়ানো উত্তেজনা’। ১৩০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে দলীয় ১৭ রানেরই ওপেনার রাহুল ত্রিপাথিকে হারায় পুনে। দ্বিতীয় উইকেটে অজিঙ্কা রাহানে ও স্টিভেন স্মিথ যেভাবে খেলছিলেন মনেই হচ্ছিল না যে মুম্বাইয়ের কোন সুযোগ আছে।
দ্বিতীয় উইকেটে ৫৪ রান যোগ করেছেন এই দুজন। কিন্তু ৩৮ বলে ৪৪ রান করে যখন রাহানে ফিরলেন তারপরই যেন পথ হারালো পুনের ইনিংস। রাহানে ফেরার পর মহেন্দ্র সিং ধোনিও সুবিধা করতে পারেননি। ১৩ বলে ১০ রান করে ফিরেছেন। একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়েই যাচ্ছিলেন স্টিভেন স্মিথ।
কিন্তু অপর প্রান্তের ব্যাটসম্যানরা সুবিধা করতে না পারায় প্রয়োজনীয় রেন রেট বেড়েই চলছিলো। এখানে পুনের ব্যাটসম্যানের চেয়ে মুম্বাইয়ের বোলারদের অবদানই অবশ্য বেশি। অসাধারণ বোলিং করেছেন লাথিস মালিঙ্কা, জাসপ্রিত বুমরাহ ও মিচেল জনসন।
শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১১ রানের। মিচেল জনসনের প্রথম বলেই চার হাকিয়ে দিলেন মনোজ তিওয়ারি। অর্থাৎ সাত বলে পাঁচ। পরের বলে আবারো হাকাতে গিয়ে ক্যাচ আউট তিওয়ারি। স্বাভাবিক ভাবেই তখন বেশ চাপে পুনে। এই চাপ শেষ করে দিতে জনসনের করা শেষ ওভারের তৃতীয় বলটা গ্যালারিতে আছড়ে ফেলতে চাইলেন একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই চালিয়ে যাওয়া স্মিথ।
পুনের প্রথম আইপিএল শিরোপা জয়ের স্বপ্নভঙ্গ সেখানেই। একেবারে সীমানার কাছে আম্বাতি রাইডুর অসাধারণ এক ক্যাচ হলেন স্মিথ। এরপর তিন বলে লাগতো সাত, কিন্তু পুনের নিচের দিকের দুই ব্যাটসম্যান নেন পাররেন পাঁচ। এক রানের জয় নিয়ে দশম আইপিএলের চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ানস।
এর আগে ২০১৩ সালে প্রথমবার এবং ২০১৫ সালে দ্বিতীয়বার আইপিএল শিরোপা জিতেছিলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ২০১০ সালেও সুযোগ এসেছিলো মুম্বাইয়ের সামনে। কিন্তু চেন্নাই সুপার কিংসের কাছে হেরে শেষ হয় তাদের প্রচেষ্টা। মুম্বাই এবার নিয়ে মোট চারবার ফাইনাল খেললো। এর মধ্যে তারা শিরোপা জিতে নিলো তিনবারই।
বাংলাদেশ সময়: ১১:৩৭:১৭ ৩৬৮ বার পঠিত