বঙ্গ নিউজঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম। হাতীবান্ধা থানা প্রতিনিধি :লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলায় বিয়ে করার জন্য প্রেমিকাকে তার দাদার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধার করার অভিযোগ উঠেছে প্রেমিকের পরিবাবের উপর।
শুক্রবার সকালে হাতীবান্ধা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রেমীকা কলেজ ছাত্রীকে ভর্তি করা হয়েছে। হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নে জাওরানী গ্রামে ঘটেছে।
জানা গেছে, গত দুই বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পূর্ব কাদমা এলাকার আব্দুল করিমের মেয়ে রোমানার সাথে একই ইউনিয়নের জাওরানী গ্রামের কাজিমুদ্দিনের ছেলে শামীমের সাথে।
রোমানা এবার স্থানীয় বোর্ডের হাট বি এম কলেজ থেকে এইচএসসি ফাইনাল পরিক্ষা দিয়েছে। আর শামীম উপজেলার আলিমুদ্দিন কলেজের বাংলা বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র।
কথা হয়েছিল পরিক্ষা শেষ হলেই শামীমকে বিয়ে করবে রোমানা। সে অনুযায়ী গত রবিবার মধ্যরাতে রোমানার বাবা-মাকে না বলে তাকে বিয়ে করার জন্য নিজ বাড়িতে নিয়ে যায় শামিম। তবে তা মানতে নারাজ শামীমের পরিবারের লোকজন।
পরে সোমবার সকালে শামীমের ভাই বোন মিলে রোমানাকে নির্যাতন করে বাড়ির বাইরে বের করে দেয়। নির্যাতের ফলে রোমানা অচেতন হয়ে পড়ে থাকে বাড়ির বাইরে। পরে এলাকাবাসী রোমানাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মেম্বার নুরুজ্জামান বাবুলের বাড়িতে নিয়ে যায়।
ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মহির হোসেন বৃহস্পতিবার মিমাংসা করা হবে বলে আশ্বাস দিলে রোমানার বাবা মেম্বারের বাসা থেকে রোমানাকে বড়িতে নিয়ে যায়। তবে এ বিষয়ে চেয়ারম্যান আর কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেনি। এদিকে নির্যাতনের ফলে রোমানা শারীরিক ভাবে খুবই অসুস্থ হয়ে পড়লে অনেকটা বাধ্য হয়ে শুক্রবার সকালে রোমানাকে হাতীবান্ধা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
শুক্রবার দুপুরে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে নির্যাতিনের স্বীকার রোমানা শারীরিক যন্ত্রনায় বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে।
রোমানা জানান, প্রায় দুই বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে সামিমের সাথে আমার। প্রেম শুরুর পর থেকে শামিম আমাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিল। তাই আমি কথা দিয়েছিলাম এইচএসসি পরিক্ষা শেষ হলেই তাকে বিয়ে করবো। সে অনুযায়ী রবিবার মধ্যরাতে শমিম আমার দাদার বাসায় এসে আমাকে চুপকরে নিয়ে যায় তার বাসায়। তবে শামীমের পরিবারের লোকজন এ বিষয়টি কোনভাবে মেনে নিচ্ছেনা।
সোমবার সকালে শামীমের ভাই বোন মিলে আমাকে মারধর করেলে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি আর বলতে পারি না। জ্ঞান ফিরে দেখি আমি বাবুল মেম্বারে বাড়িতে । তিনি আরও জানান, শামীমের ভাই বোন আমার মোবাইল ফোন ও মেমোরী কার্ড ভেঙ্গে ফেলেছে। সেই ফোনে শামীম আর আমার অনেক ছবি ও রেকোর্ড ছিল।
রোমানার বাবা আব্দুল করিম জানান, চেয়ারম্যান বিচার করার কথা ছিলো কিন্তু করেনি। এদিকে আমার মেয়ে আরো বেশী অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে। তাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চেয়ারম্যান মেম্বর কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় আমি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
শামীম জানান, তার সাথে আমার প্রেমের সর্ম্পক ছিল। এখন নাই ভেঙ্গে গেছে। তাকে আমি আমার বাসায় নিয়ে আসিনি। সে নিজেই আমার বাসায় এসে উঠেছি।
ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড সদস্য নুরুজ্জামান বাবুল জানান, স্থানীয় কিছু লোক রোমানাকে আমার বাসায় নিয়ে এসেছিল। আমি তাকে চেয়ারম্যানের নিকট পাঠিয়ে দিয়েছি।
ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের চেয়্যারম্যান মহির হোসেন জানান, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না।
এ ব্যাপারে হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রেজাউল করিম জানান, এ রকম কোন অভিযোগ আমরা পাইনি। পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:১২:৪৫ ৩৮১ বার পঠিত