শিক্ষা শুধু বই পড়ায় সীমিত নয়- রোকসানা লেইস

Home Page » ফিচার » শিক্ষা শুধু বই পড়ায় সীমিত নয়- রোকসানা লেইস
শনিবার, ১১ মার্চ ২০১৭



Image may contain: one or more people, people standing and child
আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মান এত উন্নত। বাচ্চারা ঘুম থেকে উঠেই বইয়ের ভাড়ি ব্যাগ নিয়েস্কুলে যায়। স্কুল থেকে এসে কোচিং সেন্টারে যায়। রাতে প্রাইভেট টিচারের কাছে পড়ে। পড়ার উপর পড়া করতে করতে বাচ্চাদের সাথে অভিভাবকেরও নাভী শ্বাস উঠে যায়। শিক্ষকরা এখনও ধমক ধামকে কঠিন শাসনে পড়ান। কেউ কেউ এখনও হাত তুলেন শিক্ষার্থীর গায়ে।
প্রথম দ্বিতীয় আর জিপি এ পাওয়ার খুশিতে আত্মহারা হয়ে যান।
কিন্তু এত পড়ার পরও । বড়্ বড় ডিগ্রী নিয়ে এসে বিদেশের কোন দেশে এইসব পড়ালেখার কোন মূল্য থাকে না। ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার, প্রফেসর, শিক্ষক পিএইচডি, লইয়ার যে কোন পেশায় থাকা মানুষটিকে আবার নতুন করে বিদেশে পড়ালেখা করে ডিগ্রী নিতে হয় পছন্দের পেশায় কাজ করতে চাইলে। বিদেশের মান সম্পন্ন হয়ে উঠতে হয়।
আজকাল অনেক দেখি আনন্দে আত্মহারা হয়ে যান।বিদেশে, বাঙালি ছাত্রের কৃতিত্বে। দেশ থেকে মানুষ বিদেশে চলে আসার জন্যও দেশের মানুষ অনেক সমালোচনায় মুখর হন।বিদেশে থাকা মানুষদের তুচ্ছাতি তুচ্ছো ভাবেন অনেকে। আবার বিদেশের কৃতি শিক্ষার্থী দেশে ফিরে গেলে, তাকে স্ট্রাগল করতে হয়। তিনি অনেক সময় একটা জব পেয়ে গেলেও স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারেন না দেশ সেবার সুযোগ বঞ্চিত করে রাখেন আগে থেকে নিয়ম নিয়ে বসে থাকা সহকর্মি বা উর্ধতন কর্মকতার সহযোগীতা পান না বলে।
কৃতিত্ব পাওয়া ছাত্ররা বিদেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছে। এবং গবেষনা করেছে। এবং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে পড়ালেখার জন্য বাবা মার প্রাণ ওষ্টাগত হয়নি। স্কুলের প্রাথমিক পড়ালেখা শুরু করে আনন্দময় এবং হালকা ভাবে এবং ক্রমে এক সময়ে আগ্রহের ভিত্তিতে তাদের পড়ার ওজন বাড়তে থাকে। যে শিক্ষার্থি আসলে পড়তে চায় জানতে চায় তারা একটা সময়ে নিজেদের প্রাণ ওষ্ঠাগত করে ঐসব কৃতিত্ব অর্জন করে।
বর্তমানে বিদেশে থাকা অনেক নতুন অভিভাসী অভিভাবক অবশ্য প্রাথমিক স্কুলে বাচ্চাদের পড়ালেখার উন্নত বিশ্বের নিয়ম পছন্দ করেন না। আরো পড়া দিয়ে সারাদিন পড়ায় বসিয়ে রাখতে চান নিজস্ব অভিজ্ঞতা আর নিয়মের ভিত্তিতে। অথচ বিদেশে বাচ্চারা যখন স্কুলে ভর্তি হয় এবং টিচারকে ঘিরে মাটিতে বসে গল্প শোনে। ছবি আঁকে সারা স্কুল বাড়ির দেয়াল জুড়ে ছবি সেটে সাজায়। খেলা, গান, বাজনা, লিডারসীপ শিখে,স্কুলের চারপাশ জুড়ে দৌড়ায় প্রজাপতির মতন উচ্ছোলতায়। এ ভাবেই তারা পড়া শেখে এবং আগ্রহী হয়ে উঠে ধীরে ধীরে। শিক্ষকরা খুঁজে পান বাচ্চাটির পছন্দের বিষয়। নানা প্রতিযোগীতায় প্রতিটি বাচ্চা অংশ গ্রহণ করে। ক্লাসের সেরা শিক্ষার্থী এভাবে সবার নজরে পড়ে। এক একজন এক এক বিষয়ে পারর্দশি। কেউ সব বিষয়ে। এটা পুড়োই নির্ভর করে একটি শিশুর মানসিক এবং শারীরিক গঠনের উপর। সাথে পরিবারের সহযোগিতা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। জোড় করে বইয়ের বোঝায় ডুবিয়ে দিয়ে এবং শাসন করে কিছু শিখানো যায় না। আর শুধু পড়িয়ে হয়না সাথে অনুসাঙ্গিক অনেক কিছু শেখানো প্রয়োজন গুরুত্ত সহকারে। উন্নত বিশ্বের স্কুলগুলোতে সেভাবেই শিক্ষা ব্যবস্থা সাজানো।
গতকাল একটা সংবাদ দেখলাম, বাংলাদেশের একটি গ্রামের স্কুলে ছাত্রকে পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দিয়েছে প্রধান শিক্ষক। দু একজন বাদে বেশীর ভাগ মানুষের মন্তব্য পরে আমার বিবমিষা হলো। এখনও তারা কঠিন ভাবে সমর্থন করেন বাচ্চাদের পিটানো দরকার এবং হাত পা ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেয়া উচিত। এখনের বাচ্চারা বদ এবং উশৃঙ্খল। বাচ্চারা বদ হয়না কখনো বাচ্চারা অনেক সরল এবং সৎ থাকে । কিন্ত তাদের চারপাশের পরিস্থিতি যা প্রথমে বাবা মা থেকে শুরু হয়। তার প্রভাবে বাচ্চারা পরিবর্তন হয়।
ভালো বিষয়গুলো নাই বললাম। সংসারে যখন প্রবল অশান্তি হয়। বাচ্চাদের মারা হয় বা বাচ্চার মায়েরা নির্যাতিত হয় বাচ্চারা বিদেশের মতন জায়গায়ও অনেক সময় চুপ করে থাকে শিক্ষকের বা পুলিশের জেরার কাছে। তারা জানে তারা যদি বলে তবে তাদের জন্মদাতা বাবা মায়ের শাস্তি হবে।
তারা চেষ্টা করে তাদের রক্ষা করতে মুখ না খুলে। বাচ্চাদের মনে একটা সহজ সুন্দর অনুভুতি থাকে তাকে আদরে যত্নে লালন করতে হয় বিকাশ করতে সাহায্য করতে হয় সুন্দরে পথে।
অনেক কিছুতে বাধা না দিয়ে সে বিষয়টি কেন করা যাবে না সে বিষয়গুলো কখনো কি খোলাখুলি আলাপ করেন আপনার বাচ্চার সাথে ? দিয়েছেন গল্প কথায়, ভালোলাগায় কখনো একটা গাইড লাইন জীবনে ভালো কাজের অনুশীলন করার। নিয়ম এবং শাসনের বাইরে। ব্যস্ত সময়ে বাবা মা বিদ্যা নিকেতনে ভর্তি করে দিয়ে আর প্রাইভেট পড়ার সুযোগ দিয়ে নিজের অনেক কাজ শেষ করে ফেলেন বাচ্চাদের সাথে।
বলছিনা সবাইকে বিদেশে চলে যেতে হবে। কিন্তু দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সুন্দর করার জন্য উন্নত করার জন্য সুদূর প্রসারি পরিকল্পনা দরকার। দেশে পড়া মানুষটি বিদেশে গেলে যেন আরো কয়েক বছর পড়ালেখায় ব্যয় করে সে দেশের শিক্ষা মান অর্জন করতে না হয় সে রকম ব্যবস্থা থাকা দরকার।
সর্বপরি শিশুরা যেন অপকট এবং অকৃত্তিম ভাবে মনের ভাবটি প্রকাশ করতে ভয় না পায় সে ব্যবস্থাও করতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১:৩১:১৬   ৪২২ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ফিচার’র আরও খবর


অ্যানেন্সেফ্লাই কী? - রুমা আক্তার
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়নের অগ্রদূত : স্পিকার ; ১০০০ নারী উদ্যোক্তা’র মধ্যে ৫ কোটি টাকার অনুদান প্রদান
“ম্রো’ আদিবাসীর গো হত্যা’ অনুষ্ঠাণ ” - তানিয়া শারমিন
আলোকিত স্বপ্ন নিয়ে তৃতীয় বর্ষে রবিকর ফাউন্ডেশন
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন রক্ষায় প্রয়োজন জেন্ডার সংবেদনশীল নীতির পর্যালোচনা
জিনগত ত্রুটির অপর নাম “ডাউন সিনড্রোম”- রুমা আক্তার
মোহাম্মদ শাহ আলমের জীবন ও কর্ম
ইসফাহান নেসফে জাহান
সিলেটে গ্রুপ ফেডারেশনের কর্মশালায় বির্তকিত মুরাদ- আয়োজকদের দুঃখ প্রকাশ
ডলারের দাম যেভাবে বাড়ছে, টাকার দাম কেন কমছে

আর্কাইভ