0
বঙ্গনিউজঃ নৌপরিবহন মন্ত্রী শাহাজান খানের বাসায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বৈঠকে কর্মবিরতির ঘোষণা আসায় এ নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে গত কয়েক দিন ধরে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল মনে করেন, নৌমন্ত্রীর বাসায় এই বৈঠকে অন্যায় কিছু হয়নি। তিনি বলেন, ‘শাজাহান খান একজন মন্ত্রী, পাশাপাশি একজন শ্রমিক নেতাও। সেখানে শ্রমিকরা বৈঠক করতেই পারে।’
শুক্রবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁও মডেল হাইস্কুলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন তিনি।
শাজাহান খানের বাসায় পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বৈঠক থেকে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়া আইন বহির্ভুত কি না-এ বিষয়ে সাংবাদিকরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় পাঁচ জনের মৃত্যুর মামলায় এক বাস চালককে সম্প্রতি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে একটি আদালত। পরিবহন শ্রমিকরা অভিযোগ করছেন, এই সাজা মাত্রাতিরিক্ত। যে ধারায় মামলা হয়েছে তাতে সর্বোচ্চ সাজা বলা আছে তিন বছরের কারাদণ্ড।
এ নিয়ে খুলনা অঞ্চলে পরিবহন ধর্মঘট চলছিল। এই ধর্মঘট অবসানের বিষয়ে গত সোমবার নৌমন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খানের বাসায় বৈঠকে ছিলেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। বৈঠক চলাকালেই সাভারে ট্রাক চাপায় এক নারীর মৃত্যুর মামলায় চালকের ফাঁসির আদেশের খবর আসে। এতে উত্তেজিত মালিক-শ্রমিকরা তাৎক্ষণিকভাবে কর্মবিরতির সিদ্ধান্ত নেয়। আর মঙ্গল ও বুধবার পরিবহন ধর্মঘটে নাকাল হয় দেশবাসী। পাশাপাশি মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দিনের প্রথম ভাগে রাজধানীর গাবতলীতে শ্রমিক-পুলিশের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে এক শ্রমিকের মৃত্যুও হয়।
পরে বুধবার রাজধানীতে নৌমন্ত্রীর সঙ্গে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে বৈঠক করে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের আহ্বান জানান এবং কিছুক্ষণ পরেই যান চলাচল শুরু হয়।
শাজাহান খানের বাসায় বৈঠকে আপত্তি না থাকলেও পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতির মত কর্মসূচির সমালোচনা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের এই আন্দোলন করা উচিত হয়নি। তাদের কোর্টের রায় পছন্দ না হলে উচ্চ আদালতে আপিল করতে পারে। তারা সেটা না করে ধ্বংসাত্মক কাজ করেছে, সেটা ঠিক হয়নি।’
বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় জঙ্গিবাদের ঝুঁকি থেকে দেশ অনেকটাই মুক্ত হয়েছে বলে দাবি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ডাকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে দেশ। অনেক তরুণ জঙ্গিবাদের দিকে ধাবিত হচ্ছিল, এখন পরিবারগুলো সচেতন হয়েছে। বাবা-মাও তাদের জঙ্গি সন্তানকে পুলিশের কাছে স্বেচ্ছায় ধরিয়ে দেয়, কেউ মারা গেলে লাশ গ্রহণ করতে চায় না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গিবাদীরা প্রথমে মাদ্রাসার অপ্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীদেরকেকে বেছে নিত। তারা জঙ্গিবাদ তেমন বুঝতোও না, কিন্তু তাতে জড়িয়ে যেতো। পরে আমরা দেখেছি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে তারা বিভ্রান্ত করেছে।’
ছাত্র-ছাত্রীদেরকে পড়াশোনার বাইরে সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এবং খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকার তাগিদ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। পরে তিনি ওই স্কুলে ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন
বাংলাদেশ সময়: ১৪:৩৩:২১ ৩৮৯ বার পঠিত