বঙ্গ নিউজঃ মোঃ শরিফুল ইসলাম। হাতীবান্ধা থানা প্রতিনিধি :লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার যানজট কমাতে চলতি বছরের মধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবির) অর্থায়নে বুড়িমারী স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্ট থেকে বুড়িমারী বাজার পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত ও ভুটানের সঙ্গে আমদানি-রফতানি দিনদিন বেড়েই চলেছে। এতে গাড়ির চাপে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়ে বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। যানজটের সমস্যা মোকাবেলায় সরকার এই উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এরই মধ্যে মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার জন্য এডিবির বিশেষজ্ঞ দল প্রথম দফার সমীক্ষা কার্যক্রম শেষ করেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে বুড়িমারীতে শুল্ক স্টেশনের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১০ সালের ৩০ মার্চ এ শুল্ক স্টেশনকে স্থলবন্দরে উন্নীত করা হয়। চলতি ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে এ বন্দর দিয়ে সাড়ে পাঁচ হাজার ট্রাক পণ্য রফতানি হয়েছে। এ সময়ে ভারত ও ভুটান থেকে ৩২ হাজার ৩০০ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বুড়িমারী দিয়ে ৮ হাজার ৪৮৯ ট্রাক পণ্য রফতানি ও ৩৩ হাজার ৬৩৩ ট্রাক পণ্য আমদানি হয়েছে।
বর্তমানে প্রতিদিন ৬০০-৭০০ ট্রাক বন্দরে আসা-যাওয়া করে। বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি বাড়ায় এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। কিন্তু স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্ট থেকে বুড়িমারী বাজার সড়ক পর্যাপ্ত প্রশস্ত না হওয়ায় গাড়ি স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে না। এতে প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটের চাপে সাধারণ মানুষ, ব্যবসায়ী ও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়।
সম্প্রতি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তপন কুমারসহ সরকারের উচ্চপর্যায়েরর কর্মকর্তারা স্থলবন্দর সরেজমিন পরিদর্শনে আসেন। এ সময় যানজট কমাতে স্থানীয়রা স্থলবন্দরে জিরোপয়েন্ট থেকে পাঁচ কিলোমিটার সড়ক চার লেন করার দাবি জানায়।
বুড়িমারী স্থলবন্দর ব্যবহারকারী সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি হাসানুজ্জামান হাসান বলেন, বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের চ্যাংরাবান্ধা ও ভুটানের ফুলসিলিং স্থলবন্দরের মধ্যে আমদানি-রফতানি ক্রমে বাড়ছে। এতে গাড়ির চাপ বাড়ায় বন্দরে যানজট তৈরি হচ্ছে। ফলে আমদানি-রফতানি করতে গিয়ে নাকাল হতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এজন্য সড়কটি চার লেন করার দাবি জানানো হয়। এ দাবি আমলে নিয়ে সরকার স্থলবন্দরের জিরোপয়েন্ট থেকে বুড়িমারী বাজার পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়।
সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানী থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর পর্যন্ত চার লেন মহাসড়ক নির্মাণকাজের দ্বিতীয় পর্যায় চলমান রয়েছে। এ কাজের সঙ্গেই স্থলবন্দরের পাঁচ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। এজন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ কোটি টাকা।
সম্প্রতি এডিবির বিশেষজ্ঞ দলও এসে সমীক্ষার কাজ করে। তৃতীয় দফায় রংপুর-বুড়িমারী স্থলবন্দর জাতীয় মহাসড়ক ফোর লেন কার্যক্রম ২০১৯ সালের মধ্যে শেষ করার কথা রয়েছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বলেন, এশিয়ান হাইওয়ে, বিমসটেক ও সাসেক করিডোরের আওতাভুক্ত বুড়িমারী স্থলবন্দর জিরোপয়েন্ট থেকে পাঁচ কিলোমিটার চার লেন মহাসড়কের নির্মাণকাজ শিগগিরই শুরু হবে। হাটিকুমরুল-রংপুর পর্যন্ত ১৫৭ কিলোমিটার চার লেন মহাসড়ক নির্মাণকাজের সঙ্গেই বুড়িমারীতে পাঁচ কিলোমিটার মহাসড়ক চার লেন করা হবে।
এ ব্যাপারে লালমনিরহাট সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সাজেদুর রহমান বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে হাটিকুমরুল থেকে রংপুর পর্যন্ত নির্মাণাধীন চার লেনের কাজ চলমান আছে। এর সঙ্গেই বুড়িমারী স্থলবন্দর জিরো পয়েন্ট থেকে পাঁচ কিলোমিটার সড়ক চার লেন করার সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা মূল্যায়নকাজ শেষ হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২২:৫৮:১২ ২৮৮ বার পঠিত