বঙ্গনিউজঃ রাষ্ট্রপতির গঠিত নতুন নির্বাচন কমিশন জাতির প্রত্যাশা পূরণ করবে বলে আশা প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ।আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ মঙ্গলবার বলেন, “রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। আমাদের আশা, এই নির্বাচন কমিশন জাতির প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে এবং তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে।”সাবেক সচিব কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নতুন এই কমিশন সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে বলেই মনে করছেন ক্ষমতাসীন দলটির এই নেতা।রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সোমবার রাতে সার্চ কমিটির সুপারিশ থেকে পাঁচ জনকে নতুন ইসির জন্য মনোনীত করেন। পরে রাতেই নতুন ইসির প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার।এই কমিশনে সিইসি নূরুল হুদার সঙ্গে কমিশনার হিসেবে আছেন সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরী।দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাবের মধ্যে থেকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির তালিকার দুই জন করে মোট চারজনের নাম দশজনের চূড়ান্ত সুপারিশে রেখেছিল সার্চ কমিটি। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের প্রস্তাবের কবিতা খানম ও বিএনপির সুপারিশের মাহবুব তালুকদারকে কমিশনার হিসেবে নিযোগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি।দুই দলের সুপারিশ থেকে সমান সংখ্যক ব্যক্তি নতুন কমিশনে স্থান পাওয়ার বিষয়টিকে সার্চ কমিটির ‘নিরপেক্ষতার প্রমাণ’ বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ।আর দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ বললেন, “আমার কাছে মনে হয়, খুব ভালো একটা নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে। এমন একটা নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে, যেখানে প্রধান নির্বাচন কমিশন কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত নয়, যার নাম আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রস্তাব যায়নি।”আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রস্তাবনা থেকে রাষ্ট্রপতি একজন করে নির্বাচন কমিশনার মনোনীত করাকে খুব ‘ভালো’ ও ‘আশাব্যঞ্জক’ বলে বলে বর্ণনা করেন তিনি।কণ্ঠে একই সুরে প্রতিধ্বনিত করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, “আমরা আশা করি, এই নবগঠিত নির্বাচন কমিশন তাদের দক্ষতা দিয়ে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিবেন।”
ইসি নিয়োগে রাষ্ট্রপতি ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করার পর তারা রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে নামের প্রস্তাব চেয়েছিল। তাতে অধিকাংশ দল সাড়াও দেয়।
সেই নামগুলো নিয়ে এবং বিশিষ্টজনদের সঙ্গে আলোচনার পর সোমবার ১০ জনের নামের সুপারিশ রাষ্ট্রপতিকে দেয় সার্চ কমিটি। তার মধ্য থেকে পাঁচজনকে নিয়ে নতুন ইসি গঠন করেন রাষ্ট্রপ্রধান মো. আবদুল হামিদ।
সার্চ কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সংবাদ সম্মেলনে এসে সার্চ কমিটি প্রস্তাবিত ১০ জনের নাম পড়ে শোনানোর পর সিইসি এবং চারজন নির্বাচন কমিশনারের নাম ঘোষণা করেন।
সাবেক সচিব কে এম নূরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) করেছেন রাষ্ট্রপতি। নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে সাবেক অতিরিক্ত সচিব মাহবুব তালুকদার, সাবেক সচিব রফিকুল ইসলাম, অবসরপ্রাপ্ত জেলা জজ কবিতা খানম ও অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদৎ হোসেন চৌধুরীকে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া মোট ১২৮টি নাম সার্চ কমিটিতে জমা পড়ে। তার মধ্য থেকে ১০ জনকে বাছাই করে সার্চ কমিটি।
পাঁচ সদস্যের নতুন নির্বাচন কমিশনে ‘বড় বড়’ সব দলের প্রস্তাবিত নামই আছে বলে জানান শফিউল।
নতুন কমিশনারদের মধ্যে বিচারক কবিতা খানমের নাম ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের কাছ থেকে এসেছিল বলে জানান তিনি।
সার্চ কমিটির সুপারিশে আসা পরিকল্পনা কমিশনের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নানের নাম আওয়ামী লীগ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছিল। তিনি বাদ পড়েছেন।
বিএনপির প্রস্তাব করা পাঁচটি নাম থেকে দুজন গল্পকার মাহবুব তালুকদার ও অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদের নাম সার্চ কমিটির ১০ জনের তালিকায় এসেছিল বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান। তার মধ্য থেকে মাহবুব তালুকদার পেয়েছেন রাষ্ট্রপতির মনোনয়ন।
সিইসি পদে ২০০৬ সালে অবসরে যাওয়া সচিব নূরুল হুদার সঙ্গে ২০০৮ সালে অবসরে যাওয়া মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদারের নামের প্রস্তাব রেখেছিল সার্চ কমিটি। আলী ইমামের নাম গতবারের মতো এবারও বাদ পড়েছে।
সিইসি পদের দুজনের নাম কোন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে এসেছিল, তা স্পষ্ট করে বলতে পারেননি মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বাংলাদেশ সময়: ১৫:০৮:২৬ ৩২২ বার পঠিত