উগ্রবাদ ও সশস্ত্র সংঘাত বিশ্বে মানবাধিকার, শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি হুমকি হিসেবে দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের সমাধান সামনে রেখে বাংলাদেশের শিক্ষাক্রম ও শিক্ষা উপকরণ সংস্কার করা হচ্ছে।’আজ রাজধানীর হোটেল রেডিসনে ই-নাইন ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের ১১তম সম্মেলন উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘উদ্ভাবন, সমঝোতা ও দূরদর্শী নীতি দিয়ে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সশস্ত্র সংঘাতের সমাধান সম্ভব।’ শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘পারস্পরিক বোঝাপড়া, সহিষ্ণুতা ও বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিতে শিক্ষা সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করতে পারে। সমাজে সঠিক মূল্যবোধ, আকাঙ্ক্ষা এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ভিত গড়ে দিতেও শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সংস্কৃতি, ধর্ম, বর্ণ ও ভাষার বিভিন্নতার পরও বর্তমানে আমরা এমন একটি বিশ্বে বসবাস করছি, যেখানে সবাই একে অন্যের ওপর নির্ভরশীল।’
শিক্ষা সামাজিক অন্তর্ভুক্তি সমর্থন করে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষা নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা কমানোসহ তাদের ক্ষমতায়নে সাহায্য করে।’ স্যানিটেশন, পানি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ও শিখন ফলের ওপর এর একটা ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে।’
তথ্য প্রযুক্তির ভিত্তিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যালয়ে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে পঠন শিক্ষাকে সহজ করবে, শিক্ষার্থীদের দক্ষতার উন্নয়ন ঘটাবে এবং নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাদের খাপ খাওয়াতে সাহায্য করবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়নের জন্য শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষকতা পেশায় যোগ্য ব্যক্তিদের আকৃষ্ট করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পেশার জন্য একটি দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে নীতিগত উপায় উদ্ভাবন এবং বিশেষ প্রণোদনার বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা যেতে পারে।’
ই-নাইন বৈঠক থেকে সময়োপযোগী এবং বাস্তবমুখী সুপারিশমালা আশা করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সর্বোত্তম কর্ম-উদ্যোগগুলোর বিনিময়, কর্মপরিকল্পনা, কর্মসূচি প্রণয়ন, অংশীদারিত্বের নতুন উপায় উদ্ভাবন, শিক্ষার ওপর আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংলাপ আহ্বান এই বৈঠক থেকেই শুরু হবে।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক ইরিনা বোকোভা, ই-নাইন এর সদ্য বিদায়ী সভাপতি পাকিস্তানের শিক্ষা এবং পেশাগত প্রশিক্ষণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী মুহাম্মদ বালিঘ-উর-রহমান। সভাপতিত্ব করেন ই-নাইন নতুন সভাপতি ও বাংলাদেশের শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। অনুষ্ঠানে নুতন সভাপতির হাতে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন বিদায়ী সভাপতি বালিঘ উর রহমান।
উল্লেখ্য, ই-নাইন-এর জন্ম ১৯৯৩ সালে। ভারত, চীন, মেক্সিকো, পাকিন্তান, বাংলাদেশ, ব্রাজিল, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া—এই ৯টি দেশের শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে সংস্থাটি কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের ৫৩ শতাংশ জনগণ এই ৯টি দেশে বাস করে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬:২২:১৬ ৩৭৭ বার পঠিত