বঙ্গ-নিউজঃ নব্য জেএমবির তৎপরতা শুরু হয়েছিল গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার মধ্য দিয়ে। সেনা কমান্ডো অভিযানে সেখানে তাদের ৫ সদস্য নিহত হয়। এরপর একের পর এক অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরাশায়ী হয়েছে নব্য জেএমবির সদস্যরা। সর্বশেষ শনিবার (৮ অক্টোবর) গাজীপুরে পৃথক দুই অভিযানে ৯ জঙ্গি ও টাঙ্গাইলে দুই জঙ্গি নিহত হয়। দুই মাস ৮ দিনের মাথায় মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী থেকে নব্য জেএমবির ৩৩ নেতাকর্মী নিহত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, নব্য জেএমবির অনেক নেতাকর্মী নিহত হওয়ার পাশাপাশি বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘জঙ্গিবাদের কোনও স্থান আমাদের দেশে নেই। পুলিশের একটি সফল অভিযান হয়েছে।’ ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘একে একে জঙ্গিদের সমূলে উৎপাটন করে চলেছি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চলতি বছরের পয়লা জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলার পর দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে নব্য জেএমবির ৫ জনের একটি দল। জঙ্গি হামলায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ মারা যায় দেশি-বিদেশি ২২ নাগরিক। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে ‘অপারেশন থান্ডার বোল্ট’ চালায় সেনা কমান্ডোর একটি দল। এতে নিহত হয় পাঁচ হামলাকারী। তারা হলো রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, নিব্রাস ইসলাম, মীর সাবিহ মোবাশ্বের, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম পায়েল।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, গুলশানের ঘটনার সাত দিনের মাথায় কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের দিন পুলিশের ওপর হামলা চালায় নব্য জেএমবির একটি গ্রুপ। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় আবীর রহমান নামে নব্য জেএমবির এক সদস্য। আহত অবস্থায় গ্রেফতার হয় শফিউল নামে আরেক জঙ্গি। পরে ৫ আগস্ট র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে শফিউল ও তার সহযোগী আবু মোকাতিল নিহত হয়।
সূত্র জানায়, গত ২৬ জুলাই কল্যাণপুরের একটি জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালান কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। এতে নিহত হয় ৯ জঙ্গি। যাদের মধ্যে ৮ জনের পরিচয় মিললেও একজনের পরিচয় জানা যায়নি। পরিচয় পাওয়া ৮ জন হলো দিনাজপুরের আব্দুল্লাহ, টাঙ্গাইলের আবু হাকিম নাইম, ঢাকার ধানমণ্ডির তাজ-উল-হক রাশিক, ঢাকার গুলশানের আকিফুজ্জামান খান, ঢাকার বসুন্ধরার সেজাদ রউফ অর্ক, সাতক্ষীরার মতিউর রহমান, রংপুরের রায়হান কবির ওরফে তারেক এবং নোয়াখালীর জোবায়ের হোসেন।
গত ২৭ আগস্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয় নারায়ণগঞ্জের পাইকপাড়ায়। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই অভিযানে নিহত হয় নব্য জেএমবির মাস্টার মাইন্ড বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক তামিম আহম্মেদ চৌধুরী। এ সময় তামিমের সঙ্গে মারা যায় তার আরও দুই সহযোগী। তাদের একজন ধানমণ্ডির তওসিফ হোসেন ও যশোরের ফজলে রাব্বী।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট অভিযান চালায় মিরপুরের রূপনগরে। সেখানে পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয় জাহিদুল ইসলাম নামে অবসরপ্রাপ্ত এক মেজর। এর এক সপ্তাহ পর ১০ সেপ্টেম্বর আজিমপুরের একটি বাড়িতে অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। সেখানে নব্য জেএমবির অন্যতম শীর্ষ নেতা ও আশ্রয়দাতা তানভীর কাদেরী নিহত হয়। সেখান থেকে আটক করা হয় তিন নারী জঙ্গি ও তানভীরের ১৪ বছর বয়সী ছেলেকে।
বাংলাদেশ সময়: ৮:৪২:০২ ৮৬২ বার পঠিত