বঙ্গ-নিউজঃ আমের ঝুড়িতে করে চাঁপাইনবাগঞ্জ হয়ে ঢাকায় প্রবেশ করে গুলশান হামলার অস্ত্র। নব্য জেএমবির কমান্ডার নুরুল ইসলাম মারজান সেই অস্ত্র গ্রহণ করে এবং বসুন্ধরায় পাঠায়। তবে অস্ত্রের গায়ে কোনও দেশের নাম লেখা ছিল না বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অস্ত্রসহ গুলশানের ৫ হামলাকারী
সোমবার দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ডার থেকে চাঁপাইনবাগঞ্জ হয়ে আমের ঝুড়িতে করে গুলশান হামলার অস্ত্র ঢাকায় আনা হয়। সেই অস্ত্র নব্য জেএমবির কমান্ডার নুরুল ইসলাম মারজান গ্রহণ করে। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় যে বাসাটি জঙ্গিরা ভাড়া নিয়েছিল, সেখানে সেই অস্ত্র পৌঁছে দেয় মারজান। পরবর্তীতে সেই অস্ত্র দিয়েই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা করা হয়।’
তিনি বলেন, ‘অস্ত্রের গায়ে কোনও দেশ বা প্রস্তুতকারী কোনও কোম্পানির নাম নেই। তাই অস্ত্রের প্রস্তুতকারী দেশের নাম নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’
গত ১ জুলাই রাত সাড়ে ৯টার দিকে গুলশান-২ এর ৭৯ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর বাড়িতে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালায় অস্ত্রধারী জঙ্গিরা। ওই হামলায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিনসহ ২০ জিম্মিকে হত্যা করা হয় বলে জানায় আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)। নিহত ২০ জিম্মির মধ্যে ১৭ জন বিদেশি ও তিনজন বাংলাদেশি। পরে সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানে নিহত হয় পাঁচ জঙ্গিসহ ছয় জন। এঘটনায় দায়ের করা মামলা সিটিটিসি তদন্ত করছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গুলশান হামলার মাস্টারমাইন্ড তামিম চৌধুরী ও সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হক। নারায়ণগঞ্জে পুলিশের অভিযানে তামিম চৌধুরী নিহত হয়। তবে মেজর জিয়া এখনও ধরা ছোঁয়ার বাইরে। অস্ত্র ও অর্থের উৎসের বিষয়ে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গুলশান হামলা বাস্তবায়নের জন্য দুবাই থেকে হুন্ডির মাধ্যমে ১৪ লাখ টাকা আসে। অস্ত্র ভারতের সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।সেই অস্ত্রই চাঁপাইনবাবগঞ্জ হয়ে আমের ঝুড়িতে করে ঢাকায় আনা হয়।’
অস্ত্র সংগ্রহের পর মারজান হামলাকারীদের তা চালানো শেখায় বলে পুলিশ দাবি করেছে। মারজানের গ্রামের বাড়ি পাবনার সদর থানার পৌরসভার পাইটকাবাড়ি। তার বাবার নাম নিজাম উদ্দিন, মা সালমা খাতুন। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পাবনার পুলিশ সুপার (এসপি) আলমগীর কবীর বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘প্রায় তিন বছর ধরে মারজান পরিবার থেকে নিখোঁজ রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।’
মারজানের পারিবারিক সূত্র জানায়, ২০১৪ সালে সে পাবনা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে আলিম পাস করে জিপিএ-৫ পেয়ে। এরপর সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আরবি বিভাগে ভর্তি হয়। গত আট মাস ধরে স্ত্রীসহ নিখোঁজ রয়েছে মারজান। এ বিষয়ে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের বোম ডিস্পোজালের প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘মারজানের বিষয়ে অনেক তথ্য আমাদের কাছে রয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ৯:০৪:০১ ২৭৮ বার পঠিত