বঙ্গ-নিউজঃ কানাডার অর্থমন্ত্রী বিল মরনোর সঙ্গে এক ঘন্টাব্যাপী একটি বৈঠকে মিলিত হন নোবেল লরিয়েট প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। সামাজিক ব্যবসার ভূমিকাসহ উন্নয়ন কৌশল নিয়ে আলোচনার জন্য অর্থমন্ত্রী মরনো কানাডায় অবস্থানত প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে তার হোটেলে সাক্ষাৎ করেন।
প্রফেসর ইউনূস উন্নয়ন সহযোগিতার একটি অংশ সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগগুলোতে অর্থাৎ মানুষের সৃষ্টিশীল শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে বিশেষভাবে নিয়োজিত করার পরামর্শ দেন। বিশেষ করে হাইতি ও আফ্রিকাতে ইউনূস সামাজিক ব্যবসা উদ্যোগগুলো নিয়ে কথা বলেন যেখানে বিভিন্ন সামাজিক ব্যবসাকে অর্থায়ন করার জন্য সৃষ্ট তহবিলগুলো খুবই কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। তারা বাংলাদেশে নবীন উদ্যোক্তা কর্মসূচির অনুসরণে কানাডার আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলোর জন্য উদ্যোক্তা কর্মসূচি গড়ে তোলার বিষয়ে আলোচনা করেন যাতে ওই জনগোষ্ঠীগুলোর বেকার তরুণরা নতুন নতুন ব্যবসা সৃষ্টি করে তাদের নিজেদের ও অন্যদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি করতে পারে।
প্রফেসর ইউনূসকে তার সাক্ষাতের জন্য ধন্যবাদ জানান অর্থমন্ত্রী মরনো এবং দরিদ্র দেশগুলোর বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে ওই দেশগুলোতে সামাজিক ব্যবসা গড়ে তুলতে সেখানে কর্মরত বৃহৎ কানাডিয়ান কোম্পানীগুলোর সম্ভাব্য ভূমিকা নিয়েও তার সঙ্গে আলোচনা করেন।
এর আগে প্রফেসর ইউনূস অটোয়ায় অনুষ্ঠিত ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড শীর্ষ সম্মেলনে বক্তৃতা দেন এবং একটি ভালো চাকরি পাওয়াকে জীবনের লক্ষ্যে পরিণত করার সনাতন ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে তরুণ সমাজ কীভাবে পৃথিবীকে বদলে দিতে পারে সম্মেলনে উপস্থিত এক হাজার ৩০০ তরুণের কাছে তা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “প্রতিটি মানুষই জন্মগতভাবে একজন উদ্যোক্তা এবং নিজস্ব উদ্যোগ সৃষ্টির মাধ্যমে তারা একদিকে যেমন নিজেদের আবিষ্কার করতে পারে, অন্যদিকে ধনিকে আরো ধনি করতে নিয়োজিত কোম্পানিগুলোর জন্য কাজ করার পরিবর্তে সম্পদ ছড়িয়ে দেবার নতুন নতুন কেন্দ্র গড়ে তুলতে পারে।
তিনি তার তিন শূন্য - অর্থাৎ শূন্য দারিদ্র, শূন্য বেকারত্ব ও শূন্য নীট কার্বণ নিঃস্বরণ সম্বলিত পৃথিবীর রূপকল্প নিয়ে কথা বলেন এবং সামাজিক ব্যবসা ও প্রযুক্তির শক্তিতে বলীয়ান হয়ে তরুণ সমাজ কীভাবে এই লক্ষ্যগুলো অর্জনে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা নিতে পারে তা তাদের সামনে তুলে ধরেন।
সম্মেলন মঞ্চে প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে যোগ দেয় ১০ সদস্য বিশিষ্ট বাংলাদেশী তরুণ প্রতিনিধিদল। ইউনূস সেন্টার একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ড শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য এই বাংলাদেশী প্রতিনিধিদলের সদস্যদের বাছাই করে। এই তরুণরা প্রত্যেকে বাংলাদেশ ও পৃথিবীর জন্য তারা ভবিষ্যতে কী করতে চায় তা সম্মেলনে উপস্থিত শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরে।
টরোন্টোতে প্রফেসর ইউনূস টরোন্টো আন্তর্জাতিক ক্ষুদ্রঋণ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ও মূল বক্তা হিসেবে যোগ দেন এবং উপস্থিত ১৫০ জন ব্যবসায়ী ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদ ও ক্ষুদ্রঋণ সংগঠনকারীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তিনি টরোন্টোতে রোটারীর একটি সভায়ও বক্তব্য রাখেন যেখানে তিনি বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে তার সামাজিক ব্যবসা কর্মসূচিগুলো বিষয়ে তাদের অবহিত করেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২:২৮:১৩ ৩৪০ বার পঠিত