বঙ্গ নিউজঃ সুন্দরবনের সন্নিকটে রামপালে কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের প্রতিবাদে আয়োজিত সাইকেল মিছিল কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন, শুক্রবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মিছিলটি শুরু হওয়ার কথা ছিল। এসময় সময় ছাত্রলীগ পুরো শহীদ মিনার এলাকা ঘিরে রাখে। পরে প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশি বাধায় কর্মসূচি শেষ হয়।
জানা যায়, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের ধ্বস্তাধ্বস্তির ঘটনাও ঘটেছে। ছাত্রলীগের কিছু কর্মী জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়ানো তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদকেও ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। পরে আন্দোলনকারীরা শহীদ মিনার থেকে সাইকেল মিছিল নিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এক পর্যায়ে জলকামান দিয়ে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করে।
বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ নানা পেশাজীবীরা সুন্দরবন বাঁচানোর দাবিতে সাইকেল মিছিলের আয়োজন করে। মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে মোহাম্মদপুর, সংসদ ভবন, ফার্মগেট, শাহবাগ হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিলো। মিছিলটি উদ্বোধনের কথা ছিল তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎ বন্দর ও খনিজ সম্পদ রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ ও শিল্পী কফিল আহমেদের।
আন্দোলনকারীদের একজন আব্দুল্লাহ মাহফুজ টোয়েন্টিফোর লাইভ নিউজপেপারকে বলেন, রামপালে বিদ্যুকেন্দ্র স্থাপনের বিরুদ্ধে সুন্দরবন রক্ষায় আজ শুক্রবার শান্তিপূর্ণ সাইকেল মিছিল কর্মসূচি ছিল। প্রথম ধাপে ছাত্রলীগ শহীদ মিনারে আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখে। সেখান থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে সাইক্লিস্টরা প্রেসক্লাবের সামনে আসতে শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। পরে প্রেসক্লাবের সামনে আসলে জলকামান ব্যবহার করে। পুলিশের লাঠিচার্জে ছাত্র ইউনিয়নকর্মী আশিক গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন আছেন। এছাড়াও আরো ২০ জন আহত হয়েছেন।’ এ প্রসঙ্গে বেলা ৩ টায় সংবাদ সম্মেলন করা হবে বলে জানান তিনি।
জানা যায়, সুন্দরবন বাঁচানোর দাবিতে আয়োজিত সাইকেল মিছিলে আন্দোলনকারীদের অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগ শহীদ মিনারে একটি মানববন্ধন করছে। ছাত্রলীগের মানববন্ধনের ব্যানারে লেখা রয়েছে, ‘আমরা রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র চাই।’ ‘সুন্দরবন বাঁচাও সাইকেল মিছিল’ এর সমন্বয়ক সামান্তা শারমিন বলেন, ‘মিছিল শুরুর সময়ই ক্যাম্পাস ছাত্রলীগ মানববন্ধন শুরু করে। তারা শহীদ মিনার ঘিরে রেখেছে। শহীদ মিনার থেকে নেতা-কর্মীদের বের হতেও তারা বাধা দিচ্ছে। পরে প্রেসক্লাব ও শাহবাগ এলাকায় পুলিশি বাধায় সমাবেশ শেষ হয়।’
ঢাবি মহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ইমরান বলেন, ‘এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে মানববন্ধন করছি। কর্মসূচিটি আগেই আমরা ঘোষণা করা হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুম্মন হোসেন বলেন, ‘রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র হলে সুন্দরবনের কোনও ক্ষতি হবে না। আমরা চাই এই বিদ্যুৎকেন্দ্র হোক।’
শাহাবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, কাউকেই বাধা দেওয়া হচ্ছে না। আমাদের দায়িত্ব তাদের নিরাপত্তা দেওয়া। তবে অনুষ্ঠান করার জন্য দুইপক্ষের কেউই শাহাবাগ থানার অনুমতি নেয়নি।’
বাংলাদেশ সময়: ২০:৩৫:৫০ ৩২২ বার পঠিত