বঙ্গ-নিউজঃ নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এস ডি জি) শীর্ষ সদস্য বৃন্দদের নিয়ে জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেলের বিদায়ের পূর্বে তার সদর দফতরে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ সাক্ষাৎ করেন। গত ২১ জানুয়ারি, ২০১৬ ডাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের একটি অনুষ্ঠানে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার অর্জনের প্রচারণায় জাতিসংঘের মহাসচিবকে সহযোগিতা করার জন্য বিশ্বের বিখ্যাত ১৭ জন ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত এসডিজি এডভোকেটস’ যাত্রা শুরু করে যা বিশ্বনেতারা সর্বস্বমতিক্রমে সেপ্টেম্বর ২০১৫ গ্রহণ করেন।
২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অঙ্গীকার রক্ষা ও গতিশীলতা সৃষ্টিতে জাতিসংঘের মহাসচিবকে সহযোগিতার জন্য এসডিজি সমর্থনকারীরা বৈশ্বিক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার এজেন্ডা উন্নীত করতে, এসডিজির প্রকৃতির ব্যাপারে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং নতুন অংশীদারদের অন্তর্ভুক্তিকরণে কাজ করে যাচ্ছে।
নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এলনা সোলবার্গ এবং ঘানার প্রেসিডেন্ট জন ড্রামানি মাহামা সহ-পরিচালনায় এই এসডিজি এডভোকেটস গ্রুপ পরিচালিত হয়।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের পাশাপাশি অন্যান্য উল্লেখযোগ্য এসডিজি সমর্থনকারীরা হলেন- বেলজিয়ামের রানী মাথিলডে, সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া, চীনের অনলাইন ভিত্তিক কোম্পানী আলীবাবা ডট কমের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জ্যাক মা, আর্জেন্টাইন খেলোয়ার এবং জাতিসংঘের শিশু তহবিলের এম্বাসেডর লিও মেসি, কাতার ফাউন্ডেশন এর সহকারী প্রতিষ্ঠাতা শেখ মোজা বিন্ত নাসের, ভয়েস অব লিবিয়ান উইমেন এর প্রতিষ্ঠাতা আলা মুরাতিব এবং ইউনিলিভারের প্রধান কর্মকর্তা পল পলম্যান।
জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে বান কি মুনের এটি শেষ বৈঠক। প্রফেসর ইউনূস মিটিংএ উপস্থিত বান কি মুনকে জাতিসংঘের পদ থেকে অবসরের পরেও বিশ্বের নেতৃত্বর্তে থাকার জন্য অনুরোধ করেন।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন তিনি সঠিক সময়ে পৃথিবীকে বদলিয়ে দিতে সঠিক নির্দেশনা দিতে পেরেছেন। এই জন্য তার বিদায়ের পরে জাতিসংঘ এবং পৃথিবীবাসী তার অভাব অনুভব করবে। অনেক বাধা বিপত্তি সত্বেও এসডিজি নির্দেশনা জাতিসংঘের মাধ্যমে পরিচালিত করে বিশ্বব্যাপী ঐক্যমত গড়ে তুলতে পৃথিবীর ইতিহাসে তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এসডিজি এডভোকেটসগণ প্যারিসে জলবায়ু চুক্তির জন্য বান কি মুনকে অভিনন্দন জানান এবং এটিকে তারা মানব ইতিহাসের একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করেন।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস প্রস্তাব করেন সুশীল সমাজ এসডিজি বাস্তবায়নে তাদের পূর্ণ শক্তি এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে। সুশীল সমাজ প্রতি বছর এসডিজিকে ঘিরে দু’টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে পারে। একটি হলো সিভিল সোসাইটি সামিট যা সুশীল সমাজের সব সংগঠকদেরকে এসডিজি সাফল্যকে নিশ্চিত করতে প্রতি বছর একত্রিত করতে পারে । অন্যটি, হলো ইয়ুথ সামিট যা বিশ্বের সমগ্র যুব সংগঠকদেরকে একত্রিত করতে পারে। এই গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা প্রস্তাবটি আন্তরিক ভাবে গ্রহণ করেছেন।
পরবর্তীতে, প্রফেসর ইউনূস সুইডেন ইউএন মিশন হেডকোয়ার্টারে সুইডেনের ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া আয়োজিত এক অভ্যর্থনায় যোগ দেন। ইউনূস তাকে দারিদ্র্য, বেকারত্ব এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মত বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় সামাজিক ব্যবসার সম্ভাব্যতার ব্যাপারে কথা বলেন।
তারা সুইডেনে স্যোশাল বিজনেসের সম্ভাব্যতা নিয়ে আলোচনা করেন। প্রফেসর ইউনূস সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমে ক্রাউন প্রিন্সেস এর সাথে চলতি বছরে সাক্ষাত করবেন এবং নিউইয়র্কে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরবেন।
বাংলাদেশ সময়: ৮:৫৫:০৬ ২৭০ বার পঠিত