বঙ্গ-নিউজ:গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও অর্থ- দুটোই বিদেশ থেকে এসেছে বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
এই ইউনিটের প্রধান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশে ওই অর্থ কে গ্রহণ করেছিল তা জানতে পারলেও অর্থদাতা হিসেবে সুনির্দিষ্টভাবে কাউকে তারা এখনও শনাক্ত করতে পারেননি।
সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের কার্যালয়ে তিনি পুলিশের জঙ্গি দমন অভিযানের অগ্রগতির তথ্য সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “অর্থটা বাইরে থেকে এসেছে। কিন্তু সেটি বাংলাদেশের কেউ বিদেশ থেকে পাঠিয়েছেন, না কি বাংলাদেশ থেকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পাঠিয়েছে যাতে ধরা না পড়ে- সেটি এখনও তদন্ত সাপেক্ষ।”
মনিরুল বলেন, “অর্থ এসেছে হুন্ডির মাধ্যমে। সেই অর্থ যে গ্রহণ করেছে তার পরিচয় পাওয়া গেছে। তাকে ধরার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
হুন্ডির মাধ্যমে মোট কত টাকা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদে ঢুকেছে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো অংক বলেননি কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট। তবে এক দফায় মোট ১৪ লাখ টাকা জেএমবি জঙ্গিদের হাতে আসার তথ্য পেয়েছেন বলে জানান তিনি।
“একটা সূত্র থেকে পেয়েছি, প্রায় ১৪ লাখ টাকা এসেছে একটা হুন্ডির মাধ্যমে। সেটি সংগ্রহ করে তারা অস্ত্র, বাসাভাড়া- ইত্যাদি কাজে লাগিয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি ।”
কোন দেশ থেকে সেই অর্থ এসেছে জানতে চাইলে সুনির্দিষ্ট কোনো নাম বলেননি মনিরুল। তিনি বলেছেন, তাদের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।
“কোন দেশ থেকে এসেছে সেটি আমরা খুঁজে পেয়েছি। তবে কারা পাঠিয়েছে তা তদন্ত সাপেক্ষ। যেসব দেশ হুন্ডির হাব হিসেবে পরিচিত, তেমনই একটি দেশ থেকে এসেছে।”
গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২২ জন নিহত হন। পরদিন সকালে সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডো অভিযানে হামলাকারী ৫ জঙ্গিসহ ছয়জন নিহত হন। জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হয় ১৩ জনকে।
ওই হামলায় জঙ্গিরা একে-২২ সেমি অটোমেটিক রাইফেল ও নাইন এমএম পিস্তলের পাশাপাশি হাতে তৈরি গ্রেনেড (আইইডি) ও ছুরি-চাপাতির মত ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করেছিল বলে পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
আর গুলশান হামলার এক সপ্তাহের মাথায় ৭ জুলাই ঈদের সকালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের বৃহত্তম ঈদ জামাতের মাঠের কাছে ফের হামলা হয়।
ওই হামলায় নিরাপত্তার চৌকিতে দায়িত্বরত দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন; পরে পুলিশের অভিযানে গোলাগুলির মধ্যে স্থানীয় এক নারীর মৃত্যু হয়, নিহত হন এক সন্দেহভাজন হামলাকারী।
শোলাকিয়ার হামলাতেও পিস্তলের মত আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি গুলশানের মত একই ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছিল বলে পরে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। ঘটনাস্থলের কাছে একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় চায়নিজ কুড়াল ও চাপাতি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মনিরুল বলেন, “অস্ত্র সীমান্ত পেরিয়ে এসেছে। কিন্তু প্রস্তুতকারক দেশের নাম এখানে লেখা নেই। তাই বলতে পারছি না, কোন দেশ তৈরি করেছে। তবে এটি ইন্ডিয়ার ভেতর দিয়ে এসেছে। এটা আমরা তদন্তে পেয়েছি।”
কারা অস্ত্র কোথা থেকে এনেছে- তাও তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন জানিয়ে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “তাদের গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১:০৫:১৬ ৩৯৯ বার পঠিত