বঙ্গ-নিউজ: রাতারাতি নাম বদলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কার্যক্রম চলছে। পিস স্কুলের সিলেবাস অনুযায়ী পড়ানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। যদিও একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা বলছে, ওই স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রমসহ অন্যন্য বিষয়াদি নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার শান্তিমোড়ে তিন তলা একটি ভবন ভাড়া নিয়ে পিস স্কুলের শাখা খোলা হয়। জেহাদি উস্কানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে বিতর্কিত বক্তা জাকির নায়েকের পিস টিভি বন্ধ করার পর সরকারের পক্ষ থেকে পিস স্কুলের ব্যাপারে খোঁজ নেয়া শুরু করে। এ খবর গণমাধ্যমে প্রকাশের পরই চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাতারাতি বদলে ফেলা হয় পিস স্কুলের সাইন বোর্ড। নতুন সাইনবোর্ডে লেখা হয়েছে ইম্পেরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। সোমবার ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় এমনি চিত্র। এ সময় বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গেও কথা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্লে, নার্সারী, প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে চাঁপাইনাবগঞ্জের পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজে। শিক্ষার্থীর সংখ্যাও বেশ ভাল। দেশব্যাপি পিস স্কুলের সুনাম থাকায় অভিভাবকরা অতিরিক্ত ফি হলেও ওই স্কুলে শিক্ষার্থীদের ভর্তি করতেন। মূলতঃ অভিজাত পরিবারের শিশুরাই ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীরা জানান, বৃহস্পতিবার ক্লাস শেষ করে তারা যখন চলে যান তখন পর্যন্ত পিস স্কুলের সাইন বোর্ড ঝুলানো ছিল। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির পর শনিবারে বিদ্যালয়ে এসে দেখেন সব সাইনবোর্ড বদলে গেছে। সেখানে ঝুলানো হয়েছে ইম্পেরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাইনবোর্ড। বিষয়টি দেখে শিক্ষার্থীরা অবাকই হয়েছিলেন। তারা এ ব্যাপারে শিক্ষকদের কাছে জানতে চাইলে তাদের জানানো হয়, যেহেতু পিস স্কুল নিয়ে প্রশ্ন উঠছে তাই সাইনবোর্ড বদলানো হয়েছে।
তবে পিস স্কুলের সিলেবাসসহ অন্যান্য সব ধরণের কার্যক্রম অব্যহত থাকবে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ারও কিছু নাই বলে শিক্ষর্থীদের আশ্বস্ত করেন শিক্ষকরা। এ নিয়ে অভিভাবকরাও স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের ‘ভয়ের কিছু নেই’ বলে আশ্বস্ত করে জানান, সব কিছুই পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নিয়মেই চলবে। শুধুমাত্র সাময়িকভাবে সাইনবোর্ড সরানো হয়েছে।
সরজমিনে বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের পোশাক ও টাই-এ পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মনোগ্রাম ছাপানো আছে। তারা নিজেদের পিস স্কুলের শিক্ষার্থী বলেই দাবি করেছেন।
পিস স্কুলের কার্যক্রম নজরদারি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাও। পিস স্কুলে কী পড়ানো হচ্ছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জে কারা এ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এবং স্কুলের শিক্ষকরা কোন মতাদর্শের তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জে পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটি এবং শিক্ষকদের মধ্যে একাধিক মুক্তিযোদ্ধা রয়েছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে রেখেই কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, স্বনামধন্য ও ব্যবসায়িকভাবে সফল দেখেই চাঁপাইনবাবগঞ্জে পিস স্কুলের শাখা খুলেছিলেন তারা। কিন্তু পরবর্তী ওই স্কুল নিয়ে বিতর্ক উঠলে কার্যক্রম বন্ধ করে দেন। এখন পিস স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ আছে বলে দাবি করেন তিনি। বিদ্যাললের কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের পোশাকে কেন পিস স্কুলের লোগো ছাপানো আছে বা একই সিলেবাস কেন অনুসরন করা হচ্ছে- এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তোর দিতে পারেন নি তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২২:২২:৫৯ ৪৯৭ বার পঠিত