সময়ের সঙ্গে ফ্যাশন

Home Page » ফিচার » সময়ের সঙ্গে ফ্যাশন
মঙ্গলবার, ১৯ জুলাই ২০১৬



ঘড়ির ডায়ালে এসেছে ভিন্নতা

বঙ্গ-নিউজঃ  ঘড়ি পরার চল সব সময়ই আছে। তবে কখনো সেটি বেশি, কখনো কম। এই সময়টাতে ফ্যাশনের অনুষঙ্গ হয়ে গেছে হাতঘড়ি। মেয়েরা পরছেন ফ্যাশনেবল ঘড়ি। চুড়ি কিংবা ব্রেসলেটের পরিবর্তে অনেকেরই এক হাতে দেখা যাচ্ছে ঘড়ি। হাতঘড়ির নকশা ও আঙ্গিকেও এসেছে নানা পরিবর্তন। হাল আমলের ফ্যাশনের সঙ্গে তাল রেখে ঘড়ির ডায়াল থেকে শুরু করে বেল্টের রংও পাল্টে গেছে। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে বিভিন্ন রং ও ডিজাইনের হাতঘড়ি পরতে দেখা যাচ্ছে।

.কোন পোশাকের সঙ্গে কেমন ঘড়ি
কখনো বন্ধুমহল, কখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। সঙ্গে আবার খণ্ডকালীন অফিস। এই হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মালিহা নাসিমের নিত্য রুটিন। মালিহা পড়ছেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি বা আড্ডা আর অফিসের পরিবেশ তো এক নয়। তাই একেক সময় একেক পোশাক বেছে নিতে হয়। সেই অনুযায়ী বেছে নিই হাতের ঘড়িটিও।’
অফিসের আনুষ্ঠানিক পরিবেশের জন্য বেছে নিতে পারেন ছোট কিংবা মাঝারি ডায়ালের হাতঘড়ি। শাড়ি বা সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যাবে এ ধরনের ঘড়ি। চাইলে কামিজের সঙ্গে একটু বড় ডায়ালের হাতঘড়িও বেছে নিতে পারেন। পাশ্চাত্য ঘরানার পোশাক কিংবা ফতুয়ার সঙ্গেও বড় ডায়াল ও চওড়া বেল্টের হাতঘড়ি বেশ মানিয়ে যাবে।
ফ্যাশন ডিজাইনার শাহরুখ আমিন বলেন, ‘পোশাকের সঙ্গে ঘড়ির ব্যাপারটা আসলে পুরোটাই নির্ভর করে নিজের ব্যক্তিত্বের ওপর। আমাকে কোন ধরনের পোশাকে ভালো লাগছে, সেটা আগে বুঝতে হবে। তার ওপর ভিত্তি করেই আমাকে হাতঘড়ি বাছাই করে নিতে হবে।’ শুধু চওড়া বেল্টের হাতঘড়ির প্রচলন বেশি বলেই যে এ ধরনের ঘড়ি পরতে হবে তা কিন্তু নয়। ‘সবার আগে দেখতে হবে যে ঘড়িটা আমি পরছি, সেটা ভালো দেখাচ্ছে কি না কিংবা আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি কি না।’

ছোট ডায়ালের হাতঘড়ি পরে যেতে পারেন অনুষ্ঠান বা দাওয়াতেঘড়ির নানা রূপ
সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বদলেছে ফ্যাশনের ধরন। হাতঘড়িই বা বাদ থাকবে কেন? সেই নব্বই দশকের সরু বেল্টের মধ্যেই তো আর সীমিত নেই হাতের ঘড়িটি।
হাতঘড়ির প্রসঙ্গ আসতেই খুব উৎসাহী হয়ে ওঠেন অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা মীম। তিনি বলেন, ‘হাতঘড়ি আমার খুবই পছন্দের। সেই হিসেবে আমার সংগ্রহও বিশাল। তবে এখন বড় ডায়াল আর চওড়া বেল্টের ঘড়িই বেশি পরা হয়।’ শুধু চওড়া বেল্টই নয়, সঙ্গে চেইনের ঘড়ি পরতেও পছন্দ করেন এই তারকা। তাই তো যেকোনো অনুষ্ঠানে এবং পোশাকে তাঁর হাতে ঘড়ি থাকবেই।
পশ্চিমা পোশাকে বড় ডায়ালের এবং চওড়া বেল্টটাই বেছে নেন তিনি। তবে ফ্যাশনের ব্যাপারটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। শাড়ির সঙ্গে রোল্যাক্স ব্র্যান্ডের সোনালী আর রূপালী দুই রঙের মিশেল ঘড়ি বেছে নেন। এ ক্ষেত্রে বেল্ট হওয়া চাই একটু চিকন।
.এ ছাড়া তিনি গুচি, র‍্যাডো, হুগো ব্র্যান্ডের ঘড়িও পরতে বেশ ভালোবাসেন।
ফ্যাশন এবং প্রচলন-এই দুই মিলিয়ে বাজারে এখন মেয়েদের চওড়া বেল্টের এবং চিকন চেইনের হাতঘড়িই বেশি চোখে পড়ে। যেকোনো বয়স ও পেশার নারীদের কথা মাথায় রেখেই বাজারে এসেছে বিভিন্ন ধরনের হাতঘড়ি।
ঘড়ির বেল্টের মধ্যেও রয়েছে নানা রঙের ছোঁয়া। বেল্টের নানা ধরনের উপাদানের মধ্যে রয়েছে চামড়া, রাবার, রেক্সিন ও জিনস। এ ছাড়া এখন বেল্টে বিভিন্ন ধরনের পাথর, ক্রিস্টাল বসানো হাতঘড়ি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। তবে চেইনের চেয়ে চওড়া বেল্টের হাতঘড়ির চাহিদাই নাকি বেশি বলে জানালেন ঘড়ি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান টাইম জোনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মনজুরুল ইসলাম। তিনি বললেন, তরুণীরা বেশি পছন্দ করছেন চওড়া বেল্ট আর বড় ডায়ালের হাতঘড়িগুলো। এ ছাড়া কম বয়সীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন স্পোর্টস ঘড়ি।
ঘড়ির ডায়ালেও এসেছে বিভিন্ন আকৃতি। শুধু গোলাকৃতি নয়, বাজারে আছে ওভাল, চতুর্ভুজ আকৃতির বিভিন্ন ডায়াল।
নানা রঙের পাথর ও ধাতুর আকর্ষণীয় কারুকাজ থাকছে এসব ডায়ালে। পোশাক এবং হাতের সঙ্গে মানানসই ডায়াল যে কারও লুক পাল্টে দিতে পারে!
ঢাকা নিউমার্কেটের দ্য ডায়মন্ড ওয়াচের বিক্রেতা তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বড় ডায়ালের ঘড়িগুলোর চাহিদাই এখন সবচেয়ে বেশি। তরুণীরাই মূলত বেছে নিচ্ছেন এই ধাঁচের ঘড়ি। আর মধ্যবয়স্ক নারীরা পছন্দ করছেন মাঝারি এবং ছোট আকৃতির ডায়াল।’ কোনো ডায়ালে রয়েছে তিনটি কাঁটা। সেকেন্ডের খবরটাও যেন জানান দেওয়া চাই দ্রুত। তবে দুই কাঁটা সমেত বড় ডায়ালের হাতঘড়িরই চাহিদা এখন সবচেয়ে বেশি।

ঘড়ির ডায়ালে এসেছে ভিন্নতাযেখানে পাবেন

প্রচলিত স্টাইল এবং চাহিদার কথা মাথায় রেখে প্রতিবছরই বিভিন্ন ব্র্যান্ড বাজারজাত করে থাকে মেয়েদের নানা ধাঁচের হাতঘড়ি। কর্মজীবীদের জন্য যেমন রয়েছে উপযোগী ডিজাইন, তেমনি কিশোরী ও তরুণীদের জন্যও রয়েছে বিভিন্ন নকশা। ক্রেডেন্স, টিসট, ক্যাসিও, মন্ট্রেক্স, টাইটান, ফাস্ট ট্র্যাক, ওমেগা, গুচি, সিকো, র‍্যাডোসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডে পাবেন বিভিন্ন ডিজাইন আর আকৃতির হাতঘড়ি।

পোশাক: লা রিভ সাজ: পারসোনাবিভিন্ন রঙের হাতঘড়ি পাবেন বসুন্ধরা সিটি, গুলশান ডিসিসি মার্কেটে, রাপা প্লাজা, সীমান্ত স্কয়ার, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন শপিং মলে।
এ ছাড়া মেয়েদের বিভিন্ন ডিজাইনের শৌখিন হাতঘড়ি পাবেন নিউমার্কেট কিংবা বায়তুল মোকাররম মার্কেটে।
আর এখন অনলাইনের বিভিন্ন দোকান থেকে বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের হাতঘড়িটি। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইটও রয়েছে।
ঘড়ির বেল্টকে রাঙানো হচ্ছে উজ্জ্বল রঙে। মডেল: তাসমিয়াদরদাম
সাধারণত ঘড়ির মান ও ব্র্যান্ডের ওপর নির্ভর করে দাম। ব্র্যান্ডের বিভিন্ন হাতঘড়ির রয়েছে বিভিন্ন দাম। যেমন টাইটানের রাগার দাম পড়বে সাড়ে ৩ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা। ফাস্ট ট্র্যাক, ক্রেডেন্সের হাতঘড়ি পাবেন ৩ হাজার ৫০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। টিসটের দাম পড়বে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। একটু দামি ঘড়ির খোঁজ করলে যেতে পারেন সীমান্ত স্কয়ার টাইম জোনে। এর আরেকটি শাখা রয়েছে বসুন্ধরা সিটিতে। এখানে ২ হাজার ৫০০ থেকে শুরু করে ৮ লাখ টাকার ঘড়ি রয়েছে।
ব্র্যান্ড ছাড়াও স্বল্প মূল্যে নানা ধরনের হাতঘড়ি পাবেন নিউমার্কেট, বায়তুল মোকাররমসহ বিভিন্ন শপিং মলে। রঙিন রাবার, চেইন ও কাপড়ের বেল্টের এই চীনা ওয়ান টাইম ঘড়িগুলোর দাম পড়বে ২৫০ থেকে ২ হাজারের মধ্যে। এ ছাড়া এখানে পাবেল এলইডিযুক্ত ডিজিটাল হাতঘড়ি। এর মূল্য পড়বে ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে।
তবে যে ধরনের ঘড়িই হোক না কেন, কেনার সময় ঘড়িটির নির্দিষ্ট ফিচার এবং সুবিধাগুলোর দিকেও খেয়াল রাখা চাই। কত দিনের ওয়ারেন্টি সুবিধা রয়েছে, ব্যাটারি ঠিকমতো চলছে কি না, তা দেখে নিন।

এবার তাহলে সময়টাও হয়ে উঠুক ফ্যাশনেবল!

বাংলাদেশ সময়: ৭:০৩:৩০   ৫৮৫ বার পঠিত  




পাঠকের মন্তব্য

(মতামতের জন্যে সম্পাদক দায়ী নয়।)

ফিচার’র আরও খবর


অ্যানেন্সেফ্লাই কী? - রুমা আক্তার
শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নারী ক্ষমতায়নের অগ্রদূত : স্পিকার ; ১০০০ নারী উদ্যোক্তা’র মধ্যে ৫ কোটি টাকার অনুদান প্রদান
“ম্রো’ আদিবাসীর গো হত্যা’ অনুষ্ঠাণ ” - তানিয়া শারমিন
আলোকিত স্বপ্ন নিয়ে তৃতীয় বর্ষে রবিকর ফাউন্ডেশন
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন রক্ষায় প্রয়োজন জেন্ডার সংবেদনশীল নীতির পর্যালোচনা
জিনগত ত্রুটির অপর নাম “ডাউন সিনড্রোম”- রুমা আক্তার
মোহাম্মদ শাহ আলমের জীবন ও কর্ম
ইসফাহান নেসফে জাহান
সিলেটে গ্রুপ ফেডারেশনের কর্মশালায় বির্তকিত মুরাদ- আয়োজকদের দুঃখ প্রকাশ
ডলারের দাম যেভাবে বাড়ছে, টাকার দাম কেন কমছে

আর্কাইভ