বঙ্গ-নিউজ: এর আগেও লম্বা ‘টেস্ট বিরতি’তে যেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ২০০৬ সালের এপ্রিলে দেশের মাটিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচের সিরিজ খেলার পর ১৩ মাস আর টেস্টই খেলার সুযোগ পায়নি তারা। পরের বছরের মে মাসে ভারতের বিপক্ষে খেলতে নেমে অনভ্যাসজনিত জড়তায় ভোগা বাংলাদেশ এবার আরো বড় বিরতিতে আছে। গত বছরের জুলাই-আগস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার পর আবার দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচ খেলার কথা আসছে অক্টোবরে। ‘কথা’ই কারণ নভেম্বরে ভারতে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে আসার সূচি ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) চূড়ান্ত করলেও অক্টোবরে বাংলাদেশ সফরের নিশ্চয়তা এখনো দেয়নি।যা গুলশানের হলি আর্টিজান ক্যাফেতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা ইস্যু আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার ফল। যথাসময়ে ইংল্যান্ড এলেও বাংলাদেশ টেস্ট খেলতে নামবে ১৪ মাস পর। তবে যদি না আসে, সে ক্ষেত্রে বিরতি লম্বা হবে আরো। তখন নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে জানুয়ারিতে নির্ধারিত দুটি টেস্ট খেলার অপেক্ষায় থাকতে হবে। তা টেস্ট খেলার অপেক্ষা আরো দীর্ঘ হবে কি হবে না, তা ইংল্যান্ডের আসা না-আসার ওপরই নির্ভর করছে। তবে তারা আসুক বা না আসুক, দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচে ফেরার প্রস্তুতি কিন্তু শুরু হয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের। আগস্টে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক ফার্স্ট ক্লাস আসর বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) দিয়েই প্রস্তুতি শুরুর ব্যাপারটি আপাতত ঠিক হয়ে আছে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান গতকাল দিয়েছেন সে খবরই, ‘ইংল্যান্ড সিরিজের আগে আমরা বিসিএলের কিছু ম্যাচ আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সম্ভবত ২০ আগস্ট থেকে শুরু হবে বিসিএল।’ দীর্ঘ পরিসরের ম্যাচের ওই টুর্নামেন্ট থেকেই ক্রিকেটারদের টেস্ট প্রস্তুতি সেরে নেওয়ার চিন্তার কথাও বলতে ভোলেননি তিনি, ‘ইংল্যান্ড সিরিজের আগে বিসিএল খেললে আমাদের খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাসটা খুব ভালো জায়গায় থাকবে।’ ১৪ মাস পর টেস্ট খেলতে নামার আগে অন্তত বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ প্রস্তুতিটা বিসিএল থেকে ভালোভাবেই হয়ে যাওয়ার কথা মুশফিকুর রহিমদের। ইংল্যান্ড সিরিজ সামনে রেখে অবশ্য ক্রিকেটারদের শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাচ্ছে ২০ জুলাই থেকেই। ওই সিরিজের অনুশীলন শিবির তো সেদিন থেকেই। যদিও ব্যাট-বলের অনুশীলন শুরু হতে হতে সেই আগস্টই, ‘২০ জুলাই থেকেই কন্ডিশনিং ক্যাম্প। তবে এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিন শুধু ট্রেনারের নেতৃত্বেই ক্যাম্প পরিচালিত হবে।’ অর্থাৎ আসল প্রস্তুতি শুরুর আগে ক্রিকেটারদের ফিটনেসেই পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া হবে। এরপর বিসিএলের আগে ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলনেও ব্যস্ত রাখা হবে ক্রিকেটারদের।
তত দিনে অবশ্য ইংল্যান্ড সিরিজের ভাগ্য জানা হয়ে যাওয়ার কথা। কারণ আগস্টেই বাংলাদেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আসবে ইসিবির প্রতিনিধিদল। গত বছর নিরাপত্তা পর্যবেক্ষক দল ঢাকা ঘুরে যাওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে বিলম্ব করেনি ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াও। অবশ্য ইংল্যান্ডের আসা না-আসার প্রশ্নে ঝুলে থাকছে না বাংলাদেশের টেস্টে ফেরার প্রস্তুতি। বিসিএল দিয়েই শুরু করে দিচ্ছে গত বছরের শেষ দিক থেকে শুধুই টি-টোয়েন্টি নিয়ে পড়ে থাকা বিসিবি। ভারতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এত গুরুত্ব পেয়েছিল যে মাঝখানে দেশের মাটিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি টেস্ট খেলার কথা থাকলেও তা আর খেলেনি। তা ছাড়া ইংল্যান্ড না এলে বাংলাদেশের ওয়ানডে খেলার বিরতিও তো বছর পেরিয়ে যাবে। কারণ সেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই বাংলাদেশ শেষ ওয়ানডে খেলেছে গত বছরের ১১ নভেম্বর। ইংল্যান্ড না এলে ওয়ানডে খেলার জন্যও ডিসেম্বর-জানুয়ারির নিউজিল্যান্ড সফরের অপেক্ষা। অবশ্য টেস্টে যখনই ফিরুক, বিসিএল দিয়ে শুরু করা প্রস্তুতিটা তো আর বিফলে যাবে না!
বাংলাদেশ সময়: ১২:৪৭:৩৯ ৩৫৩ বার পঠিত