বঙ্গ-নিউজঃ স্পট-ফিক্সিংয়ে পাওয়া (পাঁচ বছর) নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ছয় বছর পর সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ফিরছেন পেসার মোহাম্মদ আমির। ২০১০ সালে ঐতিহাসিক এই লর্ডসেই ঘটেছিল কলঙ্কিত সেই ঘটনা। সবকিছু ছাপিয়ে তাই আলোচনায় আমির, তবে এসবে নয়, মাঠের খেলায় মন দিতে চান অতিথি অধিনায়ক মিসবাহ-উল হক। চলমান আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বয়স্ক ক্রিকেটার (বিয়াল্লিশোর্ধ) বলেছেন, এটা তাদের জন্য নিকট অতীতের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সিরিজ। অন্যদিকে ‘হোম এ্যাডভান্টেজের’ বিচারে ফেবারিট হলেও সতর্ক স্বাগতিক সেনাপতি এ্যালিস্টার কুক। প্রতিপক্ষ পাকিস্তান বলেই, সতীর্থদের সজাগ থেকে সেরটা দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মাঠে জো রুট-আমির, স্টুয়ার্ট ব্রড-ইউনুস খানদের দ্বৈরথের পাশাপাশি র্যাঙ্কিংয়ে দৃষ্টি থাকবে। কারণ পাকিস্তান তৃতীয়, আর ইংল্যান্ড (চতুর্থ) আছে ঠিক পিঠেপিঠি অবস্থানে।ওয়ানডে-টি২০তে হলেও গত কয়েক বছরে টেস্টে দারুণ উন্নতি করেছে ইংল্যান্ড ও পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার মতো দলকে পেছনে ফেলে র্যাঙ্কিংয়ে ওপরের দিকে উঠে আসা সেটি প্রমাণ করে। অস্ট্রেলিয়া প্রথম ও ভারত দ্বিতীয় স্থানে। গত বছর এ্যাশেজ পুনরুদ্ধারের পর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সিরিজ জেতে কুকের দল। সম্প্রতি ঘরের মাটিতে শ্রীলঙ্কাকেও নাস্তানাবুদ করে ইংলিশরা। তবে এ্যাশেজ জয়ের পর পরই আমিরাতে এই পাকিস্তানের কাছে ৪ টেস্টে হারে ২-১ এ। অন্যদিকে ২০১৪ সাল থেকে পাঁচ সিরিজের একটিতেও হারেনি মিসবাহর দল, চারটিতেই জয়। ঈর্ষণীয় সাফল্য বলতে হবে। তার মধ্যে রয়েছে আমিরাতে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডকে হারানো, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা সফরে সিরিজ জয়। বিশ্লেষকদের ধারণা লড়াইটা হবে সেয়ানে-সেয়ানে। র্যাঙ্কিংয়ে এক ধাপ এগিয়ে থাকলেও ব্রড, স্টিভেন ফিনের সঙ্গে তরুণ তবে রোনাল্ড-জোন্সের গতির মুখে পাকিস্তানী ব্যাটসম্যনদের কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে।
ইংল্যান্ডের দ্রুতগতির বাউন্সি পিচে উপমহাদেশের ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস ওঠার দৃশ্যটা শ্রীলঙ্কা সিরিজেও দেখা গেছে। ‘নিকট অতীতে এটাই হতে যাচ্ছে আমাদের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং সিরিজ। ইংল্যান্ডের মাটিতে ভাল করা ব্যাটসম্যানদের আরও কঠিন। তাই প্রথম দায়িত্ব ব্যাটসম্যানদের, তাদের বোর্ডে পর্যাপ্ত রান জমা করতে হবে। তাহলেই সুযোগ তৈরি হবে। কারণ আমাদের হাতে বিশ্বমানের পেসার রয়েছে।’ অতিথিদের জন্য স্বস্তির বিষয়, ব্যাটিংয়ের স্তম্ভ অভিজ্ঞ ইউনুস খান, মিসবাহ, আসাদ শফিকের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে রান পেয়েছেন ক্ল্যাসিক্যাল আজহার আলি। আছেন শান মাসুদ, মোহাম্মদ হাফিজ আর সরফরাজ আহমেদের মতো প্রতিভাবান উইলোবাজ। বোলিংয়ে আলোচিত বাঁহাতি পেসার আমিরের সঙ্গে রাহাত আলি, ওয়াহাব রিয়াজ, সঙ্গে স্পিনার ইয়াসির শাহ-জুলফিকার বাবর। কুক, রুট, জনি বেয়ারস্টো, গ্যারি ব্যালান্সদেরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।
‘পাকিস্তান ডিফারেন্ট’- বলে তাই সতীর্থদের সতর্ক করে দিয়েছেন স্বাগতিক অধিনায়ক এ্যালিস্টার কুক। অন্তত ২-১ বা ১-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতলে প্রতিপক্ষকে পেছনে ফেলে র্যাঙ্কিংয়ের তিনে উঠে যাবে ইংলিশরা, ৪-০ করতে পারলে দ্বিতীয় স্থানে। আর ৩-১ বা ২-১এ সিরিজ জিতলে ২০০৩ সালের পর প্রথমবার দ্বিতীয় স্থানে উঠবে পাকিস্তান। মিসবাহদের সুযোগ থাকছে শীর্ষে যাওয়ার, সেক্ষেত্রে ৩-০ বা ৪-০তে জিততে হবে। কাজটা কঠিন। কারণ ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকীদের সেরা সাফল্য ২-০তে জয়, সেটি ১৯৯৬ সালে। আর সর্বশেষ ২০১০ সালে ফিক্সিং-কা-ে আলোচিত ৪ টেস্টের সিরিজে তারা হেরেছিল ৩-১এ। উত্তরসূরিদের তাই সতর্ক করে দিয়েছেন কিংবদন্তি ওয়াসিম আকরাম। ১৯৫৪ থেকে মুখোমুখি ৭৭ টেস্টে ২২ জয়ে একটু এগিয়ে ইংলিশরা। গত নবেম্বরে শারজায় শেষ দেখায় জয়টা অবশ্য পাকিস্তানের (১২৭ রানে)।
বাংলাদেশ সময়: ০:৫৭:৩৪ ৩৫৮ বার পঠিত