বঙ্গ-নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পরিবেশের প্রতি যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বর্ষা মৌসুমে সবাইকে বৃক্ষরোপণে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মানুষের অধিকতর সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই আমাদের পরিবেশকে ভালবাসতে এবং রক্ষা করতে হবে। গতকাল বুধবার গণভবনে কৃষক লীগ আয়োজিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী বর্ষাকালে সবাইকে অন্তত একটি ফলজ, একটি বনজ এবং একটি ওষুধি গাছের চারা রোপণের আহ্বান জানান।
কৃষক লীগের সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি একেএম রহমত আলী, আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাসসুল হক রেজা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই কৃষক লীগের সভাপতি মো. মোতাহার হোসেন মোল্লা এবং সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খন্দকার শাসুল হক রেজা ‘চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ’ মনোনীত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে অভিনন্দন জানান।
গতকাল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন জেলার ১০ জন সেরা বৃক্ষরোপণকারীকে পুরস্কৃত করেন এবং বাংলাদেশ কৃষক লীগের ২০ জন নেতৃবৃন্দের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী গণভবনে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রয়োজনেই এটা অত্যন্ত জরুরি। নিজেরা গাছ লাগানোর পাশাপাশি গাছ লাগাতে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করতে দলের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মচারীসহ সমাজের সচেতন মানুষের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী সবুজ-শ্যামলিমার ঢাকা মহানগরের পুরানো বিমান বন্দর থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়ক দ্বীপগুলোর কৃষ্ণচূড়ার গাছ কাটার জন্য সব সামরিক এক নায়ক বিশেষ করে জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে বলেন, উন্নয়নের নামে সামরিক এক নায়কেরা সব জলাশয়, পুকুর, খাল-নর্দমা ও প্রাচীন গাছ ধ্বংস করেছে। প্রধানমন্ত্রী ৩১ বছর থেকে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পরিচালনা ও প্রকৃতির সুরক্ষায় জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কৃষক লীগকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী সংগঠনকে শক্তিশালী এবং কৃষি উন্নয়নে সরকারের কর্মসূচি তুলে ধরতে কৃষক লীগের প্রতি আহ্বান জানান।
কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, কেবলমাত্র আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্রেই পরিবেশ ও বৃক্ষ রোপণের বিষয়টি উল্লেখ আছে। অন্য কোন দলের ঘোষণাপত্রে নেই। আওয়ামী লীগ পরিবেশ রক্ষায় সব সময় গুরুত্ব দিয়ে থাকে। বিরোধী দলে থাকা অবস্থায়ও আওয়ামী লীগ বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচি পালন করেছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে পরিবেশ রক্ষায় সকলকে এগিয়ে আসার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার প্রথম থেকেই পরিবেশের ওপর কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করছে। এ জন্য সারাবিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া মোকাবিলার দিক থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে। এ কারণে বাংলাদেশে খাদ্য ও অন্যান্য ফল-ফলাদি, শাক-সবজি ব্যাপকভাবে উত্পাদন হচ্ছে। এটাই বর্তমান সরকারের স্বার্থকতা। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক সচেতন। শুধু তাই নয়, শেখ হাসিনা এ ব্যাপারে জনগণের মাঝে সচেতনা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছেন। গ্রামের মানুষ এখন মাছ, তরিতরকারি কেনার পাশাপাশি রোপণের জন্য গাছও ক্রয় করেন।
একেএম রহমত আলী এমপি বলেন, একটি বাড়ি একটি খামার কর্মসূচির সফলতা দেশের মানুষ পাচ্ছে। এই কর্মসূচিটি একদিন সারাবিশ্বে মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। ড. আব্দুর রাজ্জাক গাছ লাগাতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতে সারাদেশের কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের কাজ করার আহ্বান জানান।
আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে কৃষক লীগ কৃষকদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে আসছে। গাছ লাগাতে জনগণকে সচেতন করে তোলার পাশাপাশি কৃষকদের সার্বিক কল্যাণে কাজ করে যেতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান মোতাহার হোসেন মোল্লা। অ্যাডভোকেট শাসসুল হক রেজা নিজস্ব উদ্যোগে তিনটি করে বৃক্ষ রোপণ করার জন্য কৃষক লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১:০১:৪৫ ৩৮৪ বার পঠিত