বঙ্গ-নিউজ: যুগের সঙ্গে তাল মিলেয়ে সবগুলো শপিং মলে পাওয়া যাচ্ছে সালোয়ার-কামিজ। বড়-ছোট সবাই এই পোশাকটি পরতে পারেন বলে এর চাহিদা থাকে বছর জুড়ে। এরমধ্যে রয়েছে ওয়ান পিস কামিজ, টুপিস ও থ্রিপিস। কামিজের মধ্যেও রয়েছে নানান ডিজাইন। কোনোটিতে হাতের কাজ, কোনোটিতে কাটওয়ার্ক, কোনোটিতে এমব্রয়ডারি, আর কোনোটিতে রয়েছে পুঁথি-স্টোনের কারুকাজ। এসব পোশাকের দাম পড়ছে-ওয়ান পিস এক হাজার টাকা থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত। টুপিসের দাম পড়ছে সর্বনিম্ন ১২ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যে। আর থ্রিপিস পাওয়া যাচ্ছে ১৫০০ টাকা থেকে ১৩ হাজার টাকার মধ্যে।
বসুন্ধরা শপিং মলে পান্থপথ গ্রিনরোড থেকে ঈদের পোশাক কিনতে এসেছেন জুথী। তিনি বলেন, পছন্দের থ্রিপিসের দাম অনেক বেশি। যে টাকায় ঈদের জন্যে একটি থ্রিপিস কিনব, সেই টাকায় ঈদের পরে হয়তো দুইসেট জামা কিনতে পারব। তাই তিনি বাধ্য হয়ে ছুটছেন এমব্রয়ডারির দোকানে। জুথী বলেন, যে থ্রিপিস বানাতে দুই হাজার টাকা খরচ হবে সেই থ্রিপিস বিক্রি হচ্ছে চার/পাঁচ হাজার টাকায়। মার্কেট ভেদে একেক খানে একেক ধরনের দাম।
দোকানিরা এ অভিযোগ আমলে নিয়ে বলছেন, এবছর আমাদের কাপড় আনতে বেশি টাকা গুনতে হচ্ছে, যার কারণে দামও নিতে হচ্ছে বেশি। মার্কেটগুলোতে পাকিস্তানি ও ইন্ডিয়ান থ্রি-পিসের কালেকশন বেশি। পাকিস্তানি আর ইন্ডিয়ান ক্যাটালগের থ্রি-পিস আর ব্র্যান্ডের থিপিস বলে দাম একটু বেশি বলে জানান। দোকানিরা বলছেন, এসব থ্রিপিসের দাম ক’দিন পরে আরো দাম বাড়বে। বুটিকসের দোকানগুলোতে দাম আরো বেশি বলে জানান ক্রেতারা।
সুতি কাপড়ের মধ্যে কাজ করা, পাকিস্তানি লনের দাম পড়ছে ১৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে। আর জর্জেট থ্রিপিসের দাম পড়ছে ২০০০ টাকা থেকে আট হাজার টাকা। বর্তমানে চলছে লংকামিজ। এর পাশাপাশি চলছে পাকিস্তানি কুর্তি, ফ্রক, টপস, ফতুয়া ইত্যাদি। সঙ্গে থাকছে ওড়নাসহ প্লাজো, ল্যাগিন্স, প্যান্ট কাট পায়জামা ও চোস। আর এসব পোশাকের চাহিদা মেটাতে এগিয়ে এসেছে দেশীয় বুটিক হাউজসহ বেশকিছু ছোট-বড় ব্র্যান্ড। কিন্তু এসবের পাশাপাশি হাঁটু অবধি লম্বা কামিজ আর সালোয়ারের প্রচলন রয়েছে সবসময়ের জন্য।
গরমে ঈদ হওয়ার কারণে সুতি, লিলেন, খাদি, এন্ডি কটন, ভয়েল, পাকিস্তানি লন, এন্ডি সিল্ক কাপড়ের পোশাকের চাহিদা বেশি। এসব কাপড়ের মধ্যে হালকা কাটওয়ার্ক, এমব্রয়ডারি, ডলার বসানো কাজের কাপড়ের প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। ডিজাইনের পাশাপাশি ফ্যাশন হাউসগুলো পোশাকে ব্যবহার করেছে উজ্জ্বল রঙ ও উজ্জ্বল রঙের সুতো। সুতি কাপড়ের পরিবর্তে লিলেন চলছে বেশি। পাশাপাশি এন্ডি সুতি, এন্ডি সিল্ক কাপড়ের প্রাধান্য রয়েছে। সঙ্গে চলছে প্লাজো আর প্যান্টকাট পায়জামা।
এবার ট্রেন্ড লং কামিজের। এসব জামার গলায় কাজের বেশ চাহিদা রয়েছে। প্রতিটি জামার গলায় কারুকাজ থাকছে। এতে সুতারকাজ, ইয়োগ, লেইস, ডলার বসানো ও পাথর বসানো কাজ করা, প্রিন্টের ইয়োগ, ভরাট এপ্লিক, কাঁথা স্টিচের কাজের ইয়োক সেট করা, হাতে প্রিন্ট করা, ব্লক, বাটিক করা ডিজাইন রয়েছে কামিজগুলোর মধ্যে। কামিজে পরিচ্ছন্ন সামঞ্জস্যপূর্ণ এমব্রয়ডারি কামিজগুলোকে আরো রুচিশীল করেছে।
এসব পোশাকের বেশিরভাগ গলা চলছে বোটগলা ও সেরওয়ানি গলা। থ্রিপিসের ওড়নার সঙ্গে শিফনের ওড়নাই চলছে বেশি। কামিজের হাতা শিফনের হয়ে থাকে। বিক্রেতারা বলছেন, ফ্যাশন সচেতন মেয়েরা এখন ঈদে একাধিক পোশাক কিনেন। তারা সময় ও পরিবেশকে প্রাধান্য দিয়ে পোশাক নির্বাচন করেন।
সকালে পরার জন্য হালকা ছিমছাম ডিজাইনের পোশাক, বন্ধুদের সঙ্গে বেড়ানোর জন্য উজ্জ্বল রঙের পোশাক আর রাতে পার্টির জন্য গর্জিয়াস লুকের পোশাক কিনে থাকে। ফ্যাশন হাউসগুলোও ক্রেতাদের এই পছন্দের দিক বিবেচনা করে নানা আঙ্গিক ও ডিজাইনের পোশাক রাখছেন তাদের শোরুমগুলোতে। এরমধ্যে কিশোরী ছাড়া সব নারীর পছন্দের শীর্ষে রয়েছে ট্রেডিশনাল সালোয়ার কামিজ।
বাংলাদেশ সময়: ২২:০০:৩৬ ১৩৯৭ বার পঠিত